আমার সংবাদ ডেস্ক
ডিসেম্বর ৫, ২০২৪, ০৭:২০ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক
ডিসেম্বর ৫, ২০২৪, ০৭:২০ পিএম
পুঁজিবাজারে কারসাজির সঙ্গে জড়িত আলোচিত চরিত্র (গ্যাম্বলার) সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক আবুল খায়ের হিরু, ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান ও হিরুর পরিবারের সদস্যদেরকে প্রায় ১৩৬ কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। জরিমানার তালিকায় এসেছে হিরুর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ডিআইডিও।
বৃহস্পতিবার বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯৩৪ তম কমিশন সভায় এ জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম দৈনিক আমার সংবাদকে এ তথ্য জানানো হয়েছেন।
জানা গেছে, চার কোম্পানির শেয়ারে কারসাজি করে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের মোট ১৩৬ কোটি ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। হিরু এবং তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান ছাড়াও তার বাবা আবুল কালাম মাতবর, মা আলেয়া বেগম, বোন কনিকা আফরোজ, ভাই মোহাম্মদ বাসার ও সাজিদ মাতবর, স্ত্রীর ভাই কাজী ফুয়াদ হাসান ও কাজী ফরিদ হাসানকে জরিমানা করেছে বিএসইসি।
কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ৩ অক্টোবর ২০২১ তারিখ হতে ২৬ অক্টোবর ২০২১ তারিখ পর্যন্ত ফরচুন সুজ লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনে কারসাজি করে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে আবুল কালাম মাতবরকে ৭ কোটি ২০ লাখ, ডিআইটি কোপারেটিভ লিমিটেডকে ১৫ কোটি, কাজী সাদিয়া হাসানকে ২৫ কোটি, কনিকা আফরোজকে ১৯ কোটি, মো. আবুল খায়েরকে ১১ কোটি ও সাজিদ মাতবরকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ হতে ২৬ অক্টোবর ২০২১ তারিখ পর্যন্ত ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেনে কারসাজি করে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে সাজিদ মাদবর কে ১ কোটি ৬০ লাখ, মোহাম্মদ বাসার কে ১ কোটি ১৫ লাখ, মো. আবুল খায়ের কে ১৯ কোটি ১৫ লাখ, কনিকা আফরোজ কে ২ কোটি ৯০ লাখ, কাজী সাদিয়া হাসানকে ১ কোটি ৯০ লাখ, কাজী ফুয়াদ হাসানকে ১ কোটি, ডিয়াইটি কো-অপারেটিভ লিমিটেডকে ৮৪ লাখ এবং আবুল কালাম মাদবর কে ২২ কোটি ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অক্টোবর ২০২১ তারিখ হতে ২৭ অক্টোবর ২০২১ তারিখ পর্যন্ত এনআরবি কমার্সিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনে কারসাজি করে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে মো: আবুল খায়েরকে ২ কোটি ৩০ লাখ, মোঃ আবুল কালাম মাতবরকে ৪ কোটি ১৫ লাখ, কাজী সাদিয়া হাসানকে ১১ লাখ, কোনিকা আফরোজকে ১ লাখ, ডিআইটি কোপারেটিভ লিমিটেডকে ১২ লাখ, আলেয়া বেগমকে ১ লাখ, মোহাম্মদ বাসারকে ১ লাখ, মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেডকে ১ লাখ, সাজিদ মাতবরকে ১ লাখ টাকা অর্থদন্ডে দÐিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ২৮ জুন ২০২১ তারিখ হতে ৫ আগস্ট ২০২১ তারিখ পর্যন্ত সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনে কারসাজি করে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে মো: আবুল খায়েরকে ১ লাখ, মো. আবুল কালাম মাতবরকে ১ লাখ, কাজী সাদিয়া হাসানকে ২ লাখ, কনিকা আফরোজকে ১ লাখ, কাজী ফরহাদ হাসানকে ৩৫ লাখ, কাজী ফুয়াদ হাসানকে ৩৫ লাখ টাকা অর্থদন্ডে দণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
২০১৯ সালের নভেম্বরে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে প্রথম আলোচনায় আসেন হিরু। প্যারামাউন্টের হাত ধরেই অন্যান্য ইনস্যুরেন্সের কারসাজিতে নামেন তিনি। পরে ইনস্যুরেন্সের পাশাপাশি অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার কারসাজিতেও জড়িয়ে পড়েন।
পরিবারের সদস্য ও অন্য সহযোগীদের নিয়ে কারসাজির বিশাল সিন্ডিকেট বা চক্র গড়ে তোলেন তিনি। এতে রয়েছে স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, বাবা আবুল কালাম মাতবর, মা আলেয়া বেগম, বোন কনিকা আফরোজ, ভাই মোহাম্মদ বাসার ও সাজিদ মাতবর, স্ত্রীর ভাই কাজী ফুয়াদ হাসান ও কাজী ফরিদ হাসান।
বাংলাদেশে শেয়ার কেলেঙ্কারিতে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন হিরু। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও অল্প সময়ে দেশের পুঁজিবাজারে সমালোচিত হয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হিরু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাবের পাশাপাশি শেয়ার লেনদেনের বিও হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য চেয়েছে।
আরএস