Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪,

হিজাব পরায় কুবিতে ছাত্রীকে হেনস্তা করলেন শিক্ষক

কুবি প্রতিনিধি

কুবি প্রতিনিধি

আগস্ট ২৩, ২০২২, ১১:০১ এএম


হিজাব পরায় কুবিতে ছাত্রীকে হেনস্তা করলেন শিক্ষক

মৌখিক পরীক্ষায় হিজাব পরে  যাওয়ায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের এক নারী শিক্ষার্থীকে ‍‍`মৌলবাদী জঙ্গি‍‍` উপাধি এবং হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে সহকারী অধ্যাপক মো: জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

রোববার (২১ আগস্ট) বিভাগেটির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের Business statistics-II কোর্সের মৌখিক পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে। পরে  বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাধিক গ্রুপে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের Business statistics-II কোর্সের মৌখিক পরীক্ষায় হিজাব পরে গেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে কোর্স শিক্ষক মো: জসিম উদ্দিন ধমক দিয়ে বলেন, আপনি কি ভাইবা দেওয়ার ম্যানার শিখেন নাই? ভাইবা দেওয়ার ম্যানার হলো হিজাব খুলে আসতে হবে। অন্য শিক্ষক আর আমি সেইম না। আপনি যেভাবে ভাইভা দিতে এসেছেন জঙ্গি মৌলবাদীদের মতো। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পর্দার কথা বললে অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে রুম থেকে বের করে দেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি মুখ খুলতে রাজি হননি। সহপাঠীরা জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে বিভাগে ডেকে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা না বলার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক মো: জসিম উদ্দিন।

এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে মো: জসিম উদ্দিন বলেন, ‍‍`আস্তাগফিরুল্লাহ!! আমি একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ। আমি এসব কাজ কেনো করতে যাবো, আমি শুধু তাকে ডেকে কর্পোরেট ম্যানারের কিছুদিক নিয়ে পরামর্শ দিয়েছিলাম।‍‍`

সাংবাদিকদের সাথে কথা না বলতে হুমকি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই শিক্ষার্থী আসছিল। তবে এধরণের কোন কথা হয়নি। আমি তাকে শুধু বলেছি আপনাকে আমি বুঝাতে পেরছি কিনা জানি না। সে আমাকে বলেছে আমি বুঝতে পেরেছি।

এ বিষয়ে বিভাগটির প্রধান মো: এমদাদুল হক জানান,  আমি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে দেখবো আমরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী জানান ব্যাপারটি আমি শুনেছি, এটা নিয়ে আমরা তদন্ত করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ধর্মীয় স্বাধীনতা একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসে আমাদের কাছে তাহলে আমরা অবশ্যই এর ব্যাবস্থা নেবো।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আব্দুল মঈন বলেন, বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত করবে এবং ফলাফলের ভিত্তিতে ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে।

প্রসঙ্গত এর আগেও গত ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় গৃহীত কর্মসূচি পালনের সময় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করে অনলাইনে ক্লাস নেন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

সে সময় সকাল ১১ টায় অনলাইন ক্লাস শুরু হয়ে প্রায় বেলা ১২ টা পর্যন্ত ক্লাস নিয়েছিলেন তিনি। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রায়হান উদ্দিনকে আহবায়ক, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বনানী বিশ্বাসকে সদস্য ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

কেএস 

Link copied!