অক্টোবর ২৯, ২০২২, ০৬:২২ পিএম
শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি বলেছেন, বইয়ের সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছেন তারা শিক্ষা পরিবারের সদস্য। প্রধানমন্ত্রী নিজেও একজন সুলেখক, সম্পাদক ও পাঠক। তার সময়ে প্রকাশনা শিল্প খারাপ অবস্থায় থাকবে সেটি হতে পারে না।
বিশ্ব একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তারপরও মুদ্রণ শিল্পের যা যা সমস্যা রয়েছে সেগুলো
সমাধানের চেষ্টা চলছে। মুদ্রণ শিল্পে কিছু সমস্যা বিদ্যমান থাকলেও আমরা পহেলা জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে বদ্ধপরিকর।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কাগজের সংকট নিয়ে মিল মালিকদের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। তারা আমাকে কথা দিয়েছেন কাগজ সংকট হবে না। বই আমাদের লাগবে পহেলা জানুয়ারিতে, এতে কোনো ছাড় নেই।
মিল মালিকরা যদি তাদের ওয়াদা ভঙ্গ করেন তবে তাদের বিরুদ্ধে আমরাও ব্যবস্থা নেবো। বিদেশ থেকে আমদানির বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করার প্রতিশ্রুতিও দেন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক ছাপাতে যে পরিমাণে কাগজ প্রয়োজন তা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি।
তাদের দাবি, কাগজ মিল মালিকরাও এই সুযোগ নিয়ে কয়েকগুণ দাম বৃদ্ধি করেছেন। এ অবস্থায় বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত কাগজ না আনলে জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না।
সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন বলেন, দুঃখের কথা বলার জন্য আমরা কারো কাছে যেতে পারি না। আমাদের কিছু পুস্তক প্রকাশনী আছে, যারা ডোনেশনের মাধ্যমে এই শিল্পকে ধ্বংশ করতে চায়। আমরা আপনাদের সহায়তায় এসব প্রকাশনীকে কালো তালিকাভুক্ত করতে চাই।
সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, কাগজ সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আগামী বছরের জন্য বিনামূল্যে বই ছাপাতে যে পরিমাণে কাগজ প্রয়োজন তার ৫০ শতাংশ কাগজ শুল্কমূক্ত আমদানি না করলে ১ জানুয়ারি বই উৎসবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ
চেয়েছেন তিনি।
সহ-সভাপতি মাজাহারুল ইসলাম বলেন, এখনো স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষায় চাইনিজ মেলামাইনের প্লেট উপহার দেওয়া হয়। অথচ আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি, এসব প্রতিযোগিতায় বই উপহার দেওয়া হোক।
বাপুসের উপদেষ্টা ওসমান গণি বলেন, সমিতির ২৬ হাজার সদস্য শুধু পুস্তক ব্যবসায়ী নন, তারা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে কাজ করেন। এনসিটিবি কখনই বই ছাপানোর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে সঠিক কথা বলে না।
এই শিল্পের সঙ্গে যারা জড়িত তারা কোনো প্রণোদনা পাননি, কোনো সহযোগিতা পাননি। করোনায় তারা অনেক কষ্ট করেছেন। আমরা সরকারের পক্ষের শক্তি। প্রতিটি স্কুলে পাঠাগার যেন সচল থাকে- সেই আহ্বানও জানান তিনি।
পুস্তক বাধাই কমিটির সভাপতি মাহবুবুল আলম মল্লিক বলেন, কারোনা মহামারিতে এই শিল্প অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে মুদ্রণ শিল্প সমিতির নেতৃবৃন্দ, পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রেতা সমিতির জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, লেখক, বিক্রেতা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
টিএইচ