জানুয়ারি ১৭, ২০২৩, ০৮:১৪ পিএম
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস’ বিষয়ে বিশেষ শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের ষষ্ঠ দিনে প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয় নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে সকালের সেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি, বেসরকারি কলেজের ৮০ জন শিক্ষকের অংশগ্রহণে আয়োজিত প্রশিক্ষণে বক্তব্য প্রদান করেন উপাচার্য।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের বহুমাত্রিক দিক তুলে ধরে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাঙালির মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। ভবিষ্যত প্রজন্ম এটা জানবে যে, বঙ্গবন্ধু ছিলেন এমন একজন মহামানব, তিনি কঠিন পরিস্থিতিতে এই ভাষণে ভারসাম্য রক্ষা করেছিলেন। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু না বলে জনগণকে শান্ত রাখতে পেরেছিলেন। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হননি। বিশ্বে আর কোনো রাজনীতিবিদ এমনটা পারেনি।’
৭ মার্চের ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ইউনিলেটারেল ডিকলারেশন অব ইন্ডিপেনডেন্স এ যেতে চাননি। তিনি যদি ৭ই মার্চের ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতেন, তাহলে বিশ্ববাসীর সমর্থন পেতাম কিনা তা এক বড় প্রশ্ন ছিল। এটিই তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা। এ কারণেই তিনি রাজনীতির কবি। তানাহলে কেমন করে একজন মানুষ নির্দেশ দিচ্ছেন অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে। আর পরক্ষণেই তিনি বললেন রিক্সা চলবে। এটিই হচ্ছে রাজনীতির বিজ্ঞান। এখানেই তিনি স্বতন্ত্র। তিনি একদিকে বলেছেন সব কিছু বন্ধ থাকবে, অন্যদিকে গরিব মানুষের কথা চিন্তা করে বলেছেন রিক্সা চলবে। তিনি যে সারাজীবন গরীব, দুঃখী, মেহনতী মানুষের জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছেন এটি তারই বহিঃপ্রকাশ।’
ঘণ্টাব্যাপী চলা এই প্রশিক্ষণ সেশনে উপাচার্য প্রশিক্ষণার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। প্রশিক্ষণার্থীরাও মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে উপাচার্য ড. মশিউর রহমানের বক্তব্য শ্রবণ করেন।
বিকালের সেশনে প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষের ভূমিকা বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও প্রফেসর আফসান চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধের নানা দিক নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ একাডেমির গবেষক মামুন সিদ্দিকী। গতকাল ১৬ জানুয়ারি সোমবার প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ও প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধে নারী ও কথাসাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেন। এছাড়া একজন মুক্তিযোদ্ধার বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন বীরাঙ্গনা কানন গোমেজ। প্রশিক্ষণে কোর্স উপদেষ্টা হিসেবে সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান শাহীন।
এনএইচ/কেএস