Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে

‘শিক্ষা সমাপনী উৎসব’ ঘিরে মাদকের অবাধ ব্যবহার 

জাবি প্রতিনিধি 

জাবি প্রতিনিধি 

ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩, ০৫:৪৮ পিএম


‘শিক্ষা সমাপনী উৎসব’ ঘিরে মাদকের অবাধ ব্যবহার 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) চলছে ৪৩ ব্যাচের (২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষা শিক্ষা সমাপনী উৎসব। উৎসবকে ঘিরে প্রতিদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসু ভবনের সামনের চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর বসে। এসব আয়োজনে মাদকদ্রব্যের অবাধ ব্যবহার অনেকটা ‘ওপেন সিক্রেটে’ পরিণত হয়েছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে এসব অপকর্ম চললেও এক প্রকার ডোন্ট কেয়ার ভাব করে আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।  

এর আগে, গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে মাদক আনতে গিয়ে বংশাল থানায় গ্রেফতার হয় দর্শন বিভাগের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী রিপন সাহা ও একই বিভাগের ৪৪ ব্যাচের মো. জুয়েল আহমেদ। 

বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, আটককৃতদের কাছ থেকে প্রায় ২০ লিটার মদ জব্দ করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাবশালী সাবেক শিক্ষার্থীদের চাপে পরদিন তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। এ ঘটনার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপনী উৎসব ঘিরে মাদকের ব্যবহারের বিষয়টি সবার সামনে আসে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসু ভবনের সামনে দৃষ্টিনন্দন ছাউনি তৈরি করা হয়েছে। সন্ধ্যা পেরুলেই ৪৩ ব্যাচসহ অন্যান্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয় সেখানে। রাজা-রাণী নির্বাচনকে ঘিরে সেখানে রাতভর চলতে থাকে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন। সাংস্কৃতিক আয়োজনের ফাঁকে রাত ১২টার পর জাকসু ভবনের ভিতরে মদের আসর বসে। পরিবেশন করা দেশি-বিদেশি নানা রকম মদ। সর্বশেষ গত শুক্র ও শনিবার রাতেও রাজা-রাণী প্রার্থীদের নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য সাংস্কৃতিক আয়োজন করা হয়।    

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র‌্যাগ উৎসবের সাথে জড়িত ৪৩ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজা-রাণী প্রার্থী বিপ্লব হোসাইন ও পন্নির সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ছিল। বিপ্লব ৩০-৩৫ হাজার ও পন্নি ১৫ হাজার দিয়ে মোট ৫০ হাজার টাকার মদ কিনতে পাঠান। কিন্তু দুজন আটক হওয়ায় সেদিনের সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আগের সংগ্রহ থেকে পরিবেশন করা হয়। এর আগের দিন শুক্রবারেও বিপ্লব-প্রীতির সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ছিলো। সেদিনও মদ আনা হয়েছিলো। সে রাতে অন্তত ২০০ জনকে মদ পরিবেশন করা হয়। 

এ ব্যাপারে শিক্ষা সমাপনী উৎসবের আহ্বায়ক প্রীতম আরিফ বলেন, ‘এটা ক্যাম্পাসে একটা ট্রেডিশন হয়ে আসছে। প্রতিবছর এটা আয়োজন করা হয়। এখানে আসলে নতুন করে আমরা কিছু করিনি।’ 

তবে সেদিনের মাদকসহ পুলিশের হাতে আটকের ঘটনার পরের পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ছেলেদের নিষেধ করে দিয়েছি। এখন থেকে আর এসব হবেনা। ঠিকঠাক প্রোগ্রামটা শেষ হলেই হলো।’ 

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, শিক্ষা সমাপনী উৎসবে মদ সরবরাহের ব্যাপারে আমরা শুনেছি। তবে ঠিক কোন প্লেসে ওরা বসে, কখন বসে সুনির্দিষ্টভাবে আমরা জানতে পারিনা। এজন্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াও সম্ভব হচ্ছেনা। গভীর রাতে প্রোগ্রাম করার ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা আছে। তারা সেটা মানছে না। 

কেএস 

Link copied!