Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ফুটবল-ক্রিকেট খেলার পৃথক মাঠ পাচ্ছে বেরোবি শিক্ষার্থীরা

ইভান চৌধুরী, বেরোবি

ইভান চৌধুরী, বেরোবি

এপ্রিল ১৮, ২০২৩, ০১:১৫ পিএম


ফুটবল-ক্রিকেট খেলার পৃথক মাঠ পাচ্ছে বেরোবি শিক্ষার্থীরা

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কেন্দ্রীয় মাঠ সংস্কার ও খেলার উপযোগী করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে আরও দুটি নতুন খেলার মাঠ প্রস্তুত করার কাজ চলমান রয়েছে। মাঠ প্রস্তুত কাজ শেষ হলে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার পৃথক দুটি মাঠ পাবে ক্রীড়াপ্রেমী শিক্ষার্থীরা।

পবিত্র ঈদ উল ফিতরের ছুটি শেষের আগেই শিক্ষার্থীদের জন্য মাঠগুলো খেলার উপযোগী করে তোলার জোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগ শরীর চর্চা ও খেলাধুলার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন ক্রীড়া গবেষকরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ৩৩ দিনের ছুটি পার করছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নং গেট সংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়ির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ অবস্থিত। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাঙ্গন কার্যক্রম দপ্তরের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় মাঠটি খেলার উপযোগী করতে দিনরাত কাজ করছে শ্রমিকরা।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাঙলো সংলগ্ন মাঠ এবং কেন্দ্রীয় মসজিদ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের মাঝখানে অবস্থিত মাঠটিও শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য প্রস্তুত করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কেন্দ্রীয় মাঠে খেলোয়াড়দের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা ছিলো না। সেটারও ব্যবস্থা করেছেন কর্তৃপক্ষ। কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় মাঠের সাথেই খেলোয়াড়দের সুপেয় পানির জন্য বসানো হয়েছে একটি টিউবওয়েল।

এদিকে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, নামে মাত্র একটি কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ছিলো। যা খেলার জন্য মোটেও উপযোগী ছিলো না। তাছাড়া একটিমাত্র মাঠে ২২টি বিভাগের ক্রীড়া সপ্তাহ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ টুর্নামেন্ট লেগেই থাকে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুযোগই পেত না। কেন্দ্রীয় মাঠ খেলার উপযোগী করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। প্রশাসন আরো দুটি নতুন মাঠ প্রস্তুত করছে। এখন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও শরীর চর্চা সহ বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করতে কোন অসুবিধা হবে না। খেলার মাঠের দীর্ঘদিনের যে সংকট ছিলো এ দুটি মাঠ প্রস্তুত হলে তা আর থাকবে না। আমাদের দাবি বিবেচনায় প্রশাসনের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রসংশার দাবিদার।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব মিয়া বলেন, আশা করি সেন্ট্রাল মাঠ সহ আরও দুইটি মাঠের সংস্কার ও নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় মাঠ সংকটসহ নানা সমস্যার সমাধান হবে। তাছাড়া ফুটবল ও ক্রিকেটের জন্য পৃথক মাঠ পাচ্ছি আমরা যার ফলে ক্যাম্পাসে সুস্থ বিনোদনের দ্রুত বিকাশ ঘটবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এইরকম শিক্ষার্থীবান্ধব সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রুবেল হোসেন আদনান বলেন, বিভিন্ন টুর্নামেন্ট সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শিক্ষার্থীরা মাঠে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিড়ম্বনার শিকার হতো। আরো দুটি মাঠ প্রস্তুত হলে আর এরকম বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। শিক্ষার্থীরা অনায়াসে বিভিন্ন খেলার প্রস্তুতি ও টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারবে।

শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আল হেলাল বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে, তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি খেলার মাঠ সংস্কার করছে। যাতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় আয়োজিত টুর্নামেন্ট সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারে। মাঠ অসমতলের কারণে যেসব দুর্ঘটনা ঘটত তা অনেকটাই কমে যাবে। বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীয়াঙ্গন প্রাণোচ্ছল রাখতে সাধ্যের মধ্যে সবটুকু করতে চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।

বহিরাঙ্গন কার্যক্রম দপ্তরের পরিচালক সাব্বীর আহমেদ চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠটি সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিনের। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় মাঠ সংস্কার কাজ শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার আলাদা দুটি খেলার মাঠ প্রস্তুত কাজ চলছে। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংস্কার ও অপর দুটি মাঠ প্রস্তুত কাজ শেষ হলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য মাঠের যে সংকট ছিলো তা কেটে যাবে।

প্রসঙ্গত, শরীরচর্চা ও খেলাধুলার প্রয়োজনে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলার মাঠ থাকা আবশ্যক। দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একাধিক খেলার মাঠ থাকলেও ঠিক উল্টো চিত্র ছিলো বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি)। গত কয়েক বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে একটি কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ প্রস্তুত করলেও তা খেলার জন্য উপযোগী ছিলো না বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। মাঠ সংস্কারের কাজ শেষ হলে এ অভিযোগের অবসান ঘটবে।

এআরএস

Link copied!