বেরোবি প্রতিনিধি
নভেম্বর ২০, ২০২৩, ১২:২৫ পিএম
বেরোবি প্রতিনিধি
নভেম্বর ২০, ২০২৩, ১২:২৫ পিএম
শীতের আদলে কুয়াশার বাদলে, ঝরে পড়া সব কাঠ বাদামের পাতায় জমে থাকা শিশির কনা এই বার্তা নিয়ে আসে যে এখন মধুময় শীতের আগমন ঘটেছে।
সবুজ ঘাসের ওপর ভোরের সূর্যের আলো হালকা লালচে রঙয়ের আলো, দূর থেকে দেখলে মনে হয় প্রতিটি ঘাসের মাথায় যেন মুক্তোদানার মতো শিশির কণা জমে আছে। সকালবেলা শিশিরে ভেজা আর ঘন কুয়াশা চাদরে আবৃত শীতের ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য থাকে দেখার মতো।
ঘন কুয়াশা ভেদ করে মিষ্টি আলোয় সকাল নামে ক্যাম্পাসে। শীতের ঋতুতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রধান আকর্ষণ নান রঙের ফুল। চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, অ্যাস্টার, ডেইজি, কসমস, জিনিয়া, সিলভিয়া, গ্ল্যাডিওলাস, গাঁদা, ডালিয়াসহ নানান প্রজাতির ফুলের সৌরভে মুখরিত হয়ে যায় ক্যাম্পাস। ফুলেল ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ক্যাম্পাসে দর্শনার্থীদেরও দেখা মেলে।
কুয়াশার চাদরে মোড়ানো সকালটা যখন লেপের তলায় গুটি শুঁটি মেরে, মন যখন আর একটু ঘুমানোর জন্য নানা তালবাহানা করে, তখনই মনে পড়ে যায় বিরক্তিকর সেই সকালের ক্লাসের কথা। তখন শীতের অলস সকালে বৃক্ষের সবুজ আদরকে সঙ্গী করে তরুণরা ছুটে চলে প্রাণের ক্যাম্পাসে। ক্লাসের জন্য ছুটে চলা তরুণদের মাঝে ভোরের কুয়াশাকে ঠেলে এক টুকরো মিষ্টি রোদের হীরক ঝিলিক তখন গায়ে লাগে তখন মনে তৈরি করে একবার ভালোলাগার মোহ।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা একটুকু মিষ্টি রোদ উপভোগ করার জন্য দল বেধে খুঁজতে থাকে রোদয়ময় বসার স্থান। মিষ্টি রোদের আলিঙ্গন মাখতে কেউবা কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে কেউবা শহীদ মিনারে আবার কেউ কেউ শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে বসে। দল বেধে শিক্ষার্থীরা মিষ্টি রোদ পোহানোর সাথে সাথে একে অপরের সাথে ভাব বিনিময় করে।
শীতের প্রত্যেকটি সকাল যেন বেরোবি শিক্ষার্থীদের মনে উৎসবের দোলা দিয়ে যায়। প্রত্যেক শিক্ষার্থী বাহারি রঙে শীতের পোশাক পরে ক্যাম্পাসে আসে দেখে মনে হয় ক্যাম্পাস যেন এক রঙিন সাজে সেজেছে। সাথে গাধা ফুলের হলুদ বর্ণছটা যেন চোখ দুটোকে ধাধিয়ে দেয়। তাছাড়াও সড়কের ধারে বাহারি রঙের ফুলে ছেয়ে থাকে পুরো ক্যাম্পাস।
ক্যাম্পাসে শিশির ভেজা মাঠে খালি পায়ে হাটার কসরত আর পিঠার দোকানে গরম গরম ভাপা পিঠাসহ বাহারি রকমের পিঠা খওয়ার ধুম পড়ে যায় শিক্ষার্থীদের। শীতের সকালে চায়ের টঙ্গে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার ফাঁকে ফাঁকে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে এক আলতো চুমুক এযেন মন ছুয়ে যায়।
অতিথি পাখির আনাগোনা, ঝরে যাওয়া গাছের পাতা, ভোরের গাঁড় সূর্য, শিশির ভেজা ঘাস, ফুলের পাপড়িতে টলমল করা শিশির বিন্দু, রঙিন প্রজাপতির উড়াউড়ি, পাশের ঝোপঝাড় থেকে শিয়ালের ডাক, মৌমাছির গুঞ্জন আর নুইয়ে পড়া ধানের ডগায় মনীয় হয়ে উঠে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫ একর।
শীতের এই সুন্দর্য সত্যিই রোমাঞ্চকর। রুক্ষ-শুষ্ক শীত উষ্ণতার, যে পরশ দেয় তা অবর্ণনীয়। শীতের আগমন ঘটা মানে ক্যাম্পাস বাহারি রঙে সেজে ওঠা।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রায়হান বলেন, ক্যাম্পাস হলো সৌন্দর্যের লীলাভূমি। সকালের কুয়াশা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কুয়াশায় অনেকে ছবি তুলতে আসে। আমিও ছবি তুলতে বের হয়েছি।
একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আবু সৈয়দ বলেন, এই কুয়াশায় ক্যাম্পাসটা অতিরিক্ত সুন্দর লাগছে, এমনিতেই আমাদের ক্যাম্পাস অনেক সুন্দর। এখানে এসে কুয়াশা উপভোগ করার আনন্দটা বর্ণনাতীত। ছোটোবেলায় কুয়াশা দেখতে পারতাম না কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উপভোগ করছি।
এইচআর