ডিসেম্বর ৫, ২০২৩, ০৪:৪৮ পিএম
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রণীত এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (২৩ নভেম্বর, ২০২০ ইং সংশোধিত) এর সূত্র ধরে `বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ / NTRCA) এর ১৮তম বিজ্ঞপ্তিতে মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগে প্রভাষক (আরবি, তাফসীর, হাদিস, ফিকহ, আদাব ও গ্রন্থাগারিক) এবং সহকারী মৌলভী ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদ থেকে রাবি, ঢাবি, জবি, চবিসহ স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বঞ্চিতের প্রতিবাদ ও পুনরায় সংযুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক- শিক্ষার্থীগণ।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় এ্যালামনাই শিক্ষার্থী আবু সুলতান বলেন, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের প্রথম থেকে সপ্তদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০২০ সাল পর্যন্ত স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় সহকারী মৌলভি ও প্রভাষক পদে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদনের সুযোগ পেত এবং অনেকেই এখনো মাদ্রাসায় সহকারী মৌলভি ও প্রভাষক পদে চাকুরিরত আছেন।
কিন্তু কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ প্রণীত এমপিও নীতিমালা ২০১৮ কে ২৩ নভেম্বর, ২০২০ সালে সংশোধন করে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের নীতিমালা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি ২০২২-এ ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ হতে উত্তীর্ণদের প্রাথমিক সুপারিশ করা হলেও চূড়ান্ত সুপারিশ প্রদান করা হয়নি।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মানজুর রহমান বলে, এমপিও নীতিমালার মাধ্যমে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হয়েছে। অবিলম্বে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আ. ন. ম আব্দুল মা`বুদ বলেন, ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লগ্নে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। উচ্চতর শিক্ষা ও মাদ্রাসার সিলেবাসের সাথে সমন্বয় করে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে থাকি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যোগ্য হিসেবে গড়ে উঠে। কিন্তু ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন থেকে ইসলামিক স্টাডিজকে বাদ দিয়ে আমাদের ছাত্রদের সাথে বৈষম্য করা হয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক ও ঘৃণ্য একটি সিদ্ধান্ত। শিক্ষার্থীরা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাবে, অন্যথায় নয়। কিন্তু তাদেরকে আবেদনের সুযোগ থেকেই বঞ্চিতের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে আমরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চাই। নতুবা কঠোর কর্মসূচির দিকে অগ্রসর হতে বাধ্য হবো।
উল্লেখ্য, ২ নভেম্বর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ ) `অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০২৩`-এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরবি ও ফিকহ বিভাগে সহকারী মৌলভি ও প্রভাষক পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড হতে ফাজিল বা কামিল ডিগ্রি অথবা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বা ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মাদ্রাসাসমূহ হতে ফাজিল বা কামিল ডিগ্রি অথবা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় হতে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিষয়ে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে আরবি বিষয়ে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নির্ধারণ করা হয়েছে।
কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ তথা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয় হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উক্ত পদসমূহে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
মানববন্ধনে বিভাগের এ্যালামনাই শিক্ষার্থীগণ এবং প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করে মাস্টার্স পর্যন্ত সকল স্তরের তিনশতাধিক শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল ও র্যালীর মাধ্যমে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।
এইচআর