Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪,

ছায়া সংসদে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজকে হারিয়ে বিজয়ী বাঙলা কলেজ

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩, ০৫:০৩ পিএম


ছায়া সংসদে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজকে হারিয়ে বিজয়ী বাঙলা কলেজ

প্রবাসী কর্মীদের প্রেরিত অর্থ বৈদেশিক আয়ের মূল চালিকাশক্তি শীর্ষক ছায়া সংসদে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে সরকারি বাঙলা কলেজ এর বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়েছে।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকার এফডিসিতে রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে অভিবাসী কর্মীদের মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ নিয়ে এ ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগীতা আয়োজিত হয়। এতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ প্রধান অতিথির হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অভিবাসী কর্মীরা আমাদের সোনার সন্তান। বাংলাদেশে বৈদেশিক আয়ের ক্ষেত্রে অভিবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স সরাসরি রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। প্রবাসী আয়ে অন্যান্য রপ্তানি খাতের মতো ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নাই। প্রবাসীরা বঞ্চনা, হয়রানি, অপমান এমনকি অপমৃত্যুরও শিকার হচ্ছে। অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। এখনো পর্যন্ত অভিবাসী কর্মীদের ন্যায্য অধিকার সুপ্রতিষ্ঠা হয়নি। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছে না। নারী শ্রমিকদের প্রতি সহিংসতা ও হয়রানী প্রতিরোধে দূতাবাসগুলোকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। 

তিনি বলেন, ‘প্রবাসে কারাগারে আটক বাংলাদেশীদের মুক্তির বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করছেন। সৌদি আরবে দুজন অভিবাসী নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও মানবাধিকার কমিশনের প্রচেষ্টায় মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়া গেছে। কাজ হারিয়ে যেসব অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছে তাদের সামাজিক সুরক্ষা ও রি—ইন্টিগ্রেশনের উপর আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কর্মী প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে হবে।’ 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। আরো বক্তব্য রাখেন, বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠানটি আয়োজনে সহযোগিতা করে বোয়েসেল ও হেলভেটাস বাংলাদেশ এর সিমস্ প্রকল্প।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পরিবার পরিজন, আত্মীয়—স্বজন, বন্ধ—বান্ধব ছেড়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যের আমাদের অভিবাসী কর্মীরা তাদের শ্রমে ঘামে উপার্জিত অর্থ দেশে প্রেরণ করে থাকেন। যে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা চলতি বছর ২৩ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মূদ্রা দেশে প্রেরণ করেছে, তাদের সামাজিক মর্যাদা ও স্বীকৃতি এখনো আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। সরকারের নীতি কৌশল, প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা বৃদ্ধি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ প্রেরণ প্রক্রিয়া সহজ করা হলে প্রতি বছর প্রবাসী আয় থেকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৩৫ থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব। আমাদের জিডিপিতে প্রবাসী আয়ের অবদান ৫.২ শতাংশ অথচ নেপালের জিডিপিতে প্রবাসী আয় ২৭ শতাংশ কন্ট্রিবিউট করছে। শোভন কর্মপরিবেশের অভাব, ন্যায্য মজুরি না পাওয়া, অদক্ষতা, অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় নিরাপদ অভিবাসনের বড় অন্তরায়। বিদেশ থেকে পাসপোর্ট বিহীন আউট পাস নিয়ে বিপুল সংখ্যক কর্মী দেশে আসার বিষয়টি উদ্বেগ তৈরি করেছে। কেন এসব কর্মীরা বিনা পাসপোর্টে আউট পাস নিয়ে দেশে ফিরে আসলো তা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা উচিৎ। 

তিনি আরো বলেন, আঞ্চলিক ও দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের প্রধান রপ্তানীখাত তৈরি পোশাক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এক সময়কার সোনালী অঁাশ থেকে প্রধান রপ্তানী আয় মুখ থুবড়ে পড়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য রপ্তানি আয় কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌছাতে পারছে না। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুকি, আর্টিফিশিয়াল লেদারের ব্যবহার বৃদ্ধি চামড়া কারখানাগুলো পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স রক্ষা করতে না পারায় এ খাত থেকে ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। তাই আমি অবশ্যই মনে করি আমরা যদি নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করে দক্ষ কর্মী প্রেরণ করতে পারি, তাহলে আমাদের কৃষি যেভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছে ঠিক একইভাবে প্রবাসী আয় দেশের অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটাতে পারবে। তাই দরকার আমাদের অভিবাসী কর্মীদের প্রতি সদয় হওয়া, মানবিক আচরণ করা ও তাদের শ্রম ও ঘামের মর্যাদা দেওয়া।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক ঝুমুর বারী ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ মো: আবুল বাশার। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

আরএস

Link copied!