জবি প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪, ০৯:৩৯ এএম
জবি প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪, ০৯:৩৯ এএম
এক নারী শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে সরস্বতী পূজা চলা অবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুগ্রুপে দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই গ্রুপের অন্তত ১২ থেকে ১৫ জন আহত হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যার পর প্রথমে ক্যাম্পাসের গেটের সামনে এরপর ভিতরে দুই গ্রুপের এ মারামারি ও ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে এর আগে একাউন্টটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিবাদ বাঁধে। এ ঘটনার সূত্রপাতে গত মঙ্গলবার দুপুরে একাউন্টটিং বিভাগের ওই ছেলেকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিত হওয়া সরস্বতী পূজার সময় সন্ধ্যায় প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ইব্রাহীম ফরাজী গ্রুপের নেতাকর্মীদের (নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগ) ওপর অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এরপর প্রধান ফটকের সামনে মারামারি হয়। এ সময় সভাপতি ফরাজি গ্রুপের নেতাকর্মী কম থাকায় তার গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ব্যাচের তাফসির ও নীরব, বাতেন বিল্লাহ, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের গাজী সামসুল হুদা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল বারেকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।
এতে তাফসির মাথা ও নীরব হাতে রক্তাক্ত গুরুতর আহত হয়ে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। বাতেন বিল্লাহর দাঁত পড়ে যায়।
পরবর্তীতে সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে সাধারণ সম্পাদক আকতারের গ্রুপের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। এতে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের নিয়ামত, সংগীতের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের অনন্ত, কলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মিরাজ হোসেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শেখ রিফাত আব্দুল্লাহ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তামিম ইকবালসহ আরো অনেকে আহত হয়।
এরপর সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন ও সহকারী প্রক্টররা ঘটনাস্থলে এসে নিয়ন্ত্রণ করে। তবে দুই গ্রুপ থেকে অন্তত ১২-১৫ জনের বেশি আহত হয়। মারামারির সময় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা ভীত হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী তাফসির জানান, গতকাল আমার এক বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করা হলে আমি তার প্রতিবাদ করি। তারই জেরে এই ঘটনা।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, আমাদের এক ছাত্রী বোনকে নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। ক্যাম্পাসে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। প্রয়োজনে ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ফুটেজ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে যাচাই করতে পারেন। এখানে ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নাই।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, আমরা সিসিটিভি দেখে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ক্যাম্পাসের বাইরে মারামারি হয়েছে। সেটার রেশ ক্যাম্পাসের ভিতরে ছিল। এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
ইএইচ