নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম
ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। অন্যদিকে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কোর স্বীকৃত পাওয়ার পর থেকেই সারা বিশ্বে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করা হয়।
১৯৫২ সালে বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা করার জন্য যারা আত্মত্যাগ করেছেন, তাদেরই স্মরণে তৈরি স্মৃতি চিহ্ন হলো শহীদ মিনার।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ভবনের পাশেই। ভাষা শহীদদের সম্মানে নির্মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহীদ মিনারটি পড়ে আছে আছে অযত্ন-অবহেলায়। নেই কোনো পরিচর্যা ও চর্চা। কেবলমাত্র একুশে ফেব্রুয়ারি আসলেই চলে এখানে মৌসুমি পরিচর্যা।
বুধবার দুপুরে পরিষ্কার করা হয়েছে শহীদ মিনারটি। এছাড়াও সারা বছরই থাকে অপরিষ্কার, অবহেলায়। এমনকি ২১ ফেব্রুয়ারি ফুল দেওয়ার পরই ফিরে যায় আগের অবস্থায়।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্রই চলছে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ, শুধু চোখের আড়ালে একমাত্র শহীদ মিনারটি। কোনো সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করতেও দেখা যায়নি এতো বছরেও। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সাকলায়েন মোস্তাক জানান, শহীদ মিনার একটি সম্মানের ও শ্রদ্ধার জায়গা। এটিকে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময় বা দিনে পরিষ্কার বা পরিচর্যা করা হয়। সারাবছর আর কোন খোঁজ থাকে না। শহীদ মিনারকে অসম্মান করা ভাষা শহীদদের অসম্মান করার সমান। তাই প্রশাসনের উচিত এটিকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ মিনারটিতে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের হেয় কাজ কর্ম চলে। শহীদ মিনারের আশেপাশে ময়লার স্তূপ জমে থাকে সারাবছর। শহীদ মিনারটির দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় কিছু অংশ ভেঙে পড়ছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রঙ। এছাড়া, বিভিন্ন সময় জুতা নিয়ে শহীদ মিনারের বেদিতে উঠে গান শোনা, ছবি তোলা, বিভিন্ন অপচর্চা এমনকি ধূমপান করতেও দেখা যায়। কিন্তু এসব অব্যবস্থাপনা ও অবহেলা রোধে তেমন কোনও ভ্রূক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর মিটিংয়ে থাকায় কথা বলতে রাজি হননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (এস্টেট) এফএম হুমায়ুন কবির জানান, আজকে দুপুরে আমরা শহীদ মিনার পরিষ্কার করেছি। লোকবল সঙ্কটের কারণে সবসময় শহীদ মিনার পরিষ্কার রাখা সম্ভব হয় না।
অন্যদিকে, আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত হারুন আব্দুল্লাহ খানের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী নিজ উদ্যোগেই পরিষ্কার করেছেন শহীদ মিনার।
সিফাত বলেন, শুধু ভাষার মাস নয়, বছরের প্রতিটি দিন যেন পরম যত্নে থাকে আমাদের বীর সন্তানদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত শহীদ মিনারটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র শহীদ মিনারটি ভাষার মাস উপলক্ষ্যে যেন একটু হলেও যত্নে থাকে সেইজন্য এই উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু প্রশাসনের উচিত খুবই গুরুত্বের সাথে শহীদ মিনারটি পরিচর্যা করা।
ইএইচ