রাবি প্রতিনিধি
মে ৬, ২০২৪, ০৩:৩০ পিএম
রাবি প্রতিনিধি
মে ৬, ২০২৪, ০৩:৩০ পিএম
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড, মানবাধিকারের নামে ইসরায়েলকে একচেটিয়া সমর্থন, ফিলিস্তিনের ওপর বেআইনিভাবে দমন-পীড়নকে বৈধতা দান এবং ফিলিস্তিনের জাতিসংঘের সদস্য পদ প্রদানে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর প্রতিবাদে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, আমি একজন মানুষ হিসেবে দেখছি কীভাবে মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা দেখছি কীভাবে পিতা তার সন্তানকে কবরস্থ করছে। একসময় পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় অন্যায় দেখলেই বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ জানাতো। কিন্তু আজকে আমরা নিশ্চুপ হয়ে গেছি। একসময় মুসলিমরা ইউরোপ শাসন করেছে। অথচ বর্তমান বিশ্বে তারাই বেশি কোণঠাসা। আজকে কোথায় মুসলিম ভ্রাতৃত্ব বোধ, কোথায় ওয়াইসি? সবাই নিয়মকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে ব্যস্ত যার ফলে আজকে এই অবস্থা। এই ব্যাপারে আমাদের আরও স্পষ্ট হওয়া উচিত। যাতে একটা বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে তার একটা শক্ত বার্তা যায়।
অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, পচাঁত্তর বছর ধরে ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর যে নৃশংসতা চলছে, যে মানবতা বিরোধী অপরাধ চলছে সেখান নারী-শিশু, সন্তানসম্ভবা, হাসপাতাল, সেবা প্রতিষ্ঠান এমনকি ভলান্টারি সেবাদাতা কেউ রেহাই পাচ্ছে না। পরিকল্পিতভাবে নিধনযজ্ঞ চলছে। যাদেরকে একদিন আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল তারাই এখন ওই এলাকার মানুষদের হত্যা করছে, সেখানে দখলদারিত্ব চালাচ্ছে। আমরা হিটলারকে দেখিনি। কিন্তু হিটলারের চেয়ে শতগুণ ঘৃণিত ব্যক্তি নেতানেয়াহু, ইউরোপ, আমেরিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠছে। কিন্তু বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো কেন নীরব! আমরা চাই পৃথিবীর সমস্ত দেশে, সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ গড়ে উঠুক।
কর্মসূচিতে ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক নূরুল আমিন বলেন, আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন ফিলিস্তিনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, তখন বিশ্বের ৫৮টি মুসলিম দেশ চুপ করে আছে। মানুষ যখন অন্যায়ের সীমা লঙ্ঘন করে তখন আল্লাহ ছাড় দেন না। ইসরায়েলসহ তার মিত্রদের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কথা বলেছি, আপনাদের কাছে আহ্বান বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন এই প্রতিবাদ সভা হয়। এসময় তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তি কামনা করেন।
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী সজীব বলেন, ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে গত কিছুদিন থেকেই আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছে। আমেরিকা, ইউরোপ মানবাধিকারের বুলি আওড়ায়। আমরা তাদের মানবাধিকারকে সম্মান করি। কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব বাতিল করা হচ্ছে, কেন তাদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে! এই অবৈধ ইসরায়েল নামক অবৈধ রাষ্ট্র বিলুপ্ত হয়ে আবারও ফিলিস্তিন স্বাধীনতা লাভ করবে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
মানবন্ধনে আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ আরও একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী বক্তব্য রাখেন। এ সময় মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।
এদিকে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরতার প্রতিবাদ জানিয়ে পদযাত্রা করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগ। বেলা ১১টার দিকে ছাত্রলীগের দলীয় টেন্ট থেকে পদযাত্রা বের হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে দলীয় টেন্টে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
ইএইচ