Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪,

শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে না পারার আক্ষেপ বাকৃবি শিক্ষকদের

মো. আমান উল্লাহ, বাকৃবি

মো. আমান উল্লাহ, বাকৃবি

জুলাই ১৬, ২০২৪, ১২:৪১ পিএম


শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে না পারার আক্ষেপ বাকৃবি শিক্ষকদের

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক। তারা নিজেদের লজ্জিত উল্লেখ করে চেয়েছেন ক্ষমা। গত শনিবার রাত থেকে শিক্ষকদের তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুকে আক্ষেপ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। একইসঙ্গে এসব হামলা ও মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

বাকৃবির শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান সরকার লিখেছেন, ‘একজন শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত। তোমাদের পাশে থাকার মত ক্ষমতা আমার নেই। তোমরা ক্ষমা করে দিও।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো গোলজার হোসেন লিখেছেন, ‘আমি যখন তোমাদের শ্রেণিকক্ষে ঢুকবো, তোমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমাকে থুতু দিয়ে ধিক্কার জানিও। কারণ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, তোমাদের এই দিনে তোমাদের পাশে দাঁড়াতে পারিনি।’

পশুপুষ্টি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমান শিশির লিখেছেন, ‘এখন যদি কিছু না বলি তাহলে নিজের সাথে আর কোনো দিন চোখ তুলে তাকাতেও পারব না। সাধারণ ছাত্রদের ওপর যারা অন্যায়-অত্যাচার করছেন, তাদের মানসিক যন্ত্রণার কারণ হচ্ছেন আপনারা। আমি ধিক্কার জানাই। হে আমার প্রাণের প্রিয় ছাত্রছাত্রী, যখন তোমাদের পাশে থাকার প্রয়োজন ছিল, তখন আমি কাপুরুষের মত চুপ করে ছিলাম। আমি সর্বোচ্চ ধিক্কার জানাই আমার প্রতি। আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন এবং তোমাদের সদা সাহায্য করুন অন্যায় ও জুলুমকে প্রতিহত করতে।’

কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. পারভেজ আনোয়ার লিখেছেন, ‘শিক্ষক হিসাবে আমি সম্পূর্ণ ব্যর্থ, মানুষ হিসাবে স্বার্থপর আর ব্যক্তি হিসাবে কাপুরুষ। আমি আসলে একজন উচ্চশিক্ষিত অমানুষ।’

ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমূদুল হাসান শিকদার লিখেছেন, ‘আমি লজ্জিত! ব্যর্থ শিক্ষক আমি! ব্যর্থ এ জনম আমার!’ এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাসান সিদ্দিকী লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের ঝরছে রক্ত, আমি লজ্জিত বাকরুদ্ধ।’

মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড.  এম আরিফুল ইসলাম লিখেছেন, ‘আমি বাকরুদ্ধ, আমি মর্মাহত আমি স্তম্ভিত, আমি লজ্জিত, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’

ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানম লিখেছেন, আমার ছাত্র ছাত্রী আমার সন্তান । আমার সন্তানদের শরীর থেকে রক্ত ঝরছে । মেনে নিতে পারছিনা । অনেক অসহায় লাগছে । রক্ত ঝরছে আমার ভিতরেও । তোমরা আমায় ক্ষমা করো, তোমাদের বাবা মা ক্ষমা করুন, আল্লাহ তোমাদের সহায় হউন।

এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের লেকচারার লতিফা আক্তার লিখেছেন, ‘আমি একজন শিক্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রদের উপর আজকের ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র প্রতিবাদ এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের পক্ষে সমর্থন জ্ঞাপন করছি। শিক্ষার্থীদের এই দুঃসময়ে যদি তাদের হয়ে কথা বলতে না পারি তাহলে আমি শিক্ষক হওয়ার যোগ্য না।’

আরএস

Link copied!