Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪,

পদত্যাগ করলেন জবির আরেক সমন্বয়ক মাসুদ রানা

জবি প্রতিনিধি

জবি প্রতিনিধি

আগস্ট ১৮, ২০২৪, ১২:১৭ এএম


পদত্যাগ করলেন জবির আরেক সমন্বয়ক মাসুদ রানা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আরেক সমন্বয়ক ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা পদত্যাগ করেছেন।

শনিবার রাত ৮টার পরে এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

এ সময তিনি ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস ও জবি থেকে উপাচার্য নিয়োগসহ শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণে সামনের দিনগুলোতেও আন্দোলনে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছেন তিনি।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমি সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকব এটা কথা দিচ্ছি। জবির সংস্কারে ‘জবি সংস্কার আন্দোলন’ নামে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, এখানে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে সর্বদা পাশে থাকব। প্রিয় জবিকে সংস্কার করেই ঘরে ফিরতে চাই।

বিবৃতিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যকারিতা দেখছি না। সমন্বয়ক নাম ভাঙিয়ে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে হল দখলদারিত্বের অভিযোগ উঠছে, চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠছে এদের বিরুদ্ধে। সবকিছু বিবেচনা করে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কের পদ থেকে পদত্যাগ করছি।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমি মাসুদ রানা। ২০২৪ এর কোটা সংস্কার আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে শুরু থেকেই সব আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এসেছি। সরকারি চাকরিতে কোটা নামক বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূত্রপাত হয় এ বছরের জুন মাসে। এই আন্দোলন জুলাইয়ের শুরু থেকে ক্রমান্বয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তারই ধারাবাহিকতায় জবির লাইব্রেরিতে পড়ুয়াদের হাত ধরে এই আন্দোলনের সূচনা হয়। আমিও এতে সরাসরি অংশগ্রহণ করি।

সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করে সিনিয়র-জুনিয়র সবার সাথে আলোচনা করে আন্দোলন যেন গতি পায়, সেই কাজ করেছি। তারপর থেকে একটা প্রোগ্রামও আমি মিস দেইনি। এমনকি সবাইকে সাথে নিয়ে প্রোগ্রামগুলোতে উপস্থিতি বাড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।

যারা নিয়মিত আন্দোলনে ছিলেন, তারাই জানেন আমি কী অবদান রেখেছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৯ জুলাই কারফিউ চলাকালে আমি আর নূর নবী দুইজন মিলে ক্যাম্পাসের গেটের সামনে থেকে পুলিশকে সরিয়ে আমরা প্রোগ্রাম করতে চাইলে নূর নবীকে গ্রেপ্তার করে। আমরা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লেও আবার কবি নজরুল সরকারি কলেজের গেটের সামনে একত্রিত হয়ে স্লোগান দিতে থাকি। শুরু হয় পুলিশের গুলিবর্ষণ। আবারও সবাই ছড়িয়ে পড়ি।

লক্ষ্মীবাজারে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সেই দিন পুলিশকে রুখে দিতে হাজারো মানুষ লড়াই করি। আছরের নামাজের পর পুলিশ সরাসরি গুলি করে। সেখানে আমাদের কয়েকজন ভাই শাহাদতবরণ করেন। সেই দিন শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার চেষ্টা করেছি। শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয় ছাত্রসমাজসহ জনসাধারণকে। 

মাসুদ রানা বলেন, পরবর্তী সময়ে খুনি হাসিনাকে ছাত্রসমাজ নয় দফা দাবি উত্থাপন করে। কিন্তু সেটি না মানলে শুরু হয় এক দফা। মানুষ দলে দলে রাজপথে বেরিয়ে আসে। কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা ৫ আগস্ট ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি দিলে হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। শুরু হয় নতুন বাংলাদেশের সূচনা। গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

ইএইচ

Link copied!