Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫,

ব্যারিস্টার ফুয়াদ

রাষ্ট্র যখন পাপ করে, রক্ত দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়

জবি প্রতিনিধি

জবি প্রতিনিধি

এপ্রিল ২২, ২০২৫, ০৫:২৬ পিএম


রাষ্ট্র যখন পাপ করে, রক্ত দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, “দাঁড়িপাল্লা ইনসাফের প্রতীক, ভারসাম্যের প্রতীক। রাষ্ট্র যখন গুনাহ বা পাপ করে, তখন রক্ত দিয়ে লড়াই করে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হয়। ইনসাফ যদি নিজের বিরুদ্ধেও যায়, তবুও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করো।”

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জাস্টিস ফর জুলাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, “প্রত্যেক মানুষের অন্তরে ইনসাফের বীজ নিহিত। একজন সাধারণ মানুষের মাঝেও ন্যায়ের বোধ কাজ করে। যখন ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত না হয়, তখন চিন্তার সুনামি, লড়াইয়ের সুনামি সৃষ্টি হয়। এ কারণেই ২০২৪ সালের আন্দোলন হয়েছে।”

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী থেকে শুরু করে ১৯৭১-পরবর্তী সময়েও দেশে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং ইনসাফ হাইজ্যাক হয়েছে। শেখ মুজিব দেশকে জমিদারিতে পরিণত করে নাগরিকদের প্রজায় রূপান্তরিত করেছেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলণ্ঠিত করে বারবার লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।”

বিচারহীনতার সংস্কৃতি ভেঙে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “শুধু ২০২৪ সালের আন্দোলনের বিচার নয়, অতীতের দশকের পর দশকের চলমান মামলাগুলোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কৃষক-শ্রমিক, দিনমজুরের জমির মামলারও বিচার চাইতে হবে। তবেই প্রকৃত ইনসাফ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। বিচার কাঠামো গড়ে তুলতে হবে, এবং চাপিয়ে দেওয়া হেজেমনি ভাঙতে হবে।”

ফ্যাসিবাদের বিচার প্রসঙ্গে ফুয়াদ বলেন, “ঘুম থেকে উঠে শেখ হাসিনাকে দেখতে না হওয়াই সবচেয়ে বড় শান্তি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০ মাস পার হলেও ফ্যাসিবাদের বিচার না হওয়া একটি প্রোপাগান্ডার হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। বিষয়টি নিয়ে এখনই আলাপ শুরু করা প্রয়োজন।”

সভাপতির বক্তব্যে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রইচ উদ্দিন বলেন,গ্রাম থেকে শহর প্রতিটি স্তরে বিচারহীনতার সংস্কৃতি কায়েম করেছিল।
দুইজন বিচারক যখন আল্লাহর ভয়ে সত্য কথা বলেছে। রাতের আঁধারে বের হয়ে যেতে হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সাথে শেষে যখন সম্পর্কের টানাপড়েন হয়। তাকেও চলে যেতে হয়েছে। গ্রামের একজন মানুষকেও শেখ হাসিনার কাছে বিচার চাইতে হতো। এ থেকে বোঝা যায় একজনের কাছে বিচার ব্যবস্থা কুক্ষিগত ছিল। অভ্যুত্থানের ১০ মাস। আজ পর্যন্তও একজনকে বিচারের মুখোমুখি করতে পারে নি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসাইন বলেন, “একসময় আমাদের অর্থনীতি ছিল বিশ্বের সেরা। পৃথিবীর মোট জিডিপির ১২.৫% ছিল আমাদের। সঠিক বিচার ও সামাজিক নিরাপত্তা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে না। ব্রিটিশরা আমাদের অর্থনীতি ভেঙে যে ঔপনিবেশিক কাঠামো রেখে গেছে, তা থেকে আমরা আজও মুক্ত হতে পারিনি।”

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাস্টিস ফর জুলাইয়,জবি শাখার সাবেক আহ্বায়ক মো. সজিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী -শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরএস

 

Link copied!