Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪,

‘সাঁতাও’ সিনেমায় টিকেট নেই

পরীমণির দর্শক নেই!

আকাশ নিবির

আকাশ নিবির

জানুয়ারি ২২, ২০২৩, ০২:১৫ পিএম


পরীমণির দর্শক নেই!

সম্প্রতি ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানোরমা বিভাগে হয়ে গেল ‘সাঁতাও’ এর প্রিমিয়ার শো। শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে ‘সাঁতাও’ সিনেমাটি দেখানো হয়। চলচ্চিত্র উৎসব উপলক্ষ্যে এ সিনেমায় টিকেটের ব্যবস্থা থাকলেও দর্শকের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে। প্রদর্শনীতে হলরুমের সাতশ আসনই পরিপূর্ণ ছিল, একইসঙ্গে আরো প্রায় তিন-চার শতাধিক দর্শক দাঁড়িয়ে সিনেমাটি দেখেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ফিরতে হয়েছে অনেককে।

এছাড়াও একই দিনে ২০ জানুয়ারি শুক্রবার চিত্রনায়িকা পরীমণির নতুন ছবি ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ মুক্তি পেলেও হল এ তেমন দর্শক চোখে পড়েনি। তবে সিনেমাটি ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্সসহ মধুমতি হল এ দর্শক পরিপূর্ণ হতে দেখা যায়নি। তাহলে কি ছবি টানা ফ্লপের পথে পরীমণি আর ‘সাঁতাও’ চলেছে হিটের পথে! তবে ‘সাঁতাও’ ছবিটি আগামী ২৭ জানুয়ারি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবার কথা রয়েছে। গণমানুষের অর্থায়নে ছবিটি পরিচালনা করেছেন খন্দকার সুমন। 

অনেকের ভাষ্যে, পরীমণি দীর্ঘ বিরতীর পর শিশু কোলে নিয়ে শিশুদের নিয়ে চলচ্চিত্রে মুখ থুবড়ে পড়বে এটা আসলে অবিশ্বাস্য। তাছাড়া তার সিনেমার আগে স্বামী, সংসার নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করাতেই সিনেমার উপর প্রভাব পড়েছে বলেও অনেকেই দাবি করেছে। এতো কিছুর পরও তাকে আসলে কেউ বিশ্বাস করতে চায়নি। স্টার সিনেপ্লেক্সে হল প্রদর্শনে যেখানে পরীমণির নাম শুনলে ইউটিউবাররা হুমড়ি খেয়ে পড়ার কথা, সেখানে ইউটিউবাররা চোখে পড়েইনি গণমাধ্যমের কর্মী ছিলেন হাতে গোনা দু‍‍`একজন।    

অন্যদিকে ‘সাঁতাও’ সিনেমা সিট না পেয়ে কেউ কেউ ফ্লোরে বসেই উপভোগ করেছেন। এখানেই শেষ নয়, হলের বাইরেও ছিল দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়। আবার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায় জাতীয় জাদুঘরের মূল গেটের বাইরেও দেখা গেছে সিনেমাটি দেখতে আসা অনেককেই। তবে যারা সিনেমাটি দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন তাদের সবাই সিনেমাটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। একইসঙ্গে নির্মাতা, কলাকুশলীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।  

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া সোমা সিনেমাটি দেখার পর নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন এভাবে, ‍‍`সাঁতাও সিনেমাটির প্রিমিয়ার দেখলাম। দেখলাম বললে ভুল হবে, অনুভব করলাম। তিস্তা ব্যারেজ, প্রান্তিক কৃষকের জনজীবন এবং সংগ্রাম, কারখানা শ্রমিকের জীবনের অনিশ্চয়তা, রাজনীতি,  প্রেম, দেশজ সঙ্গীত- সব মিলিয়ে দারুণ। মনে হয়েছে, এই সিনেমার চরিত্র গুলোতো আমি, আমার মা, আমার পরিবার, আমার সমাজ ব্যবস্থা, আমার রাষ্ট্রনব্যবস্থাকে তুলে ধরেছে।

 আজকে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সিনেমাটি হাউজফুল ছিল। আমার দেখা এই প্রথম কোন সিনেমা দেখার জন্য দর্শক ফ্লোরে বসে পড়েছিল। প্রত্যেক কলাকুশলীর প্রতি অনেক শুভকামনা, সিনেমাটি আরো একবার দেখতে চান তিনি। 
নির্মাতা রাশিদ পলাশ জানান, এই ভিড় সাঁতাও সিনেমা দেখার জন্য, এই ভিড়টাই হলে দেখতে চাই ২৭ জানুয়ারি থেকে। অভিনন্দন  খন্দকার সুমন ভাই। সিনেপ্লেক্সে বসে দেখতে চাই আপনার সিনেমা।

দর্শক প্রশংসায় ভাসলেও প্রিমিয়ার শেষে পরিচালক সুমন আক্ষেপ নিয়ে বলেন, আমাদের সিনেমাটি অনেক সিনেমা হল মালিক নিতে ভয় পাচ্ছেন। তাদের ধারণা এ ধরনের সিনেমা দর্শকরা দেখে না। কিন্তু তাদের সে ধারণা মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের সিনেমারও দর্শক রয়েছে। এই নির্মাতা আরো বলেন, শুধু সিনেমা হল থেকে নয় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও আমাদের সিনেমাকে স্পন্সর করতে রাজি হয়নি। কারণ তাদের কাছে কৃষক হচ্ছে ব্র্যান্ডিংয়ের জায়গা থেকে সর্বনিম্ন জায়গা। অথচ এদেশে কৃষক হচ্ছে সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড।

আইডিয়া এক্সচেঞ্জের ব্যানারে ‘সাঁতাও’  প্রযোজনা করেছেন শরিফ উল আনোয়ার সজ্জন। পরিচালনার পাশাপাশি কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন খন্দকার সুমন। চিত্রগ্রহণে ছিলেন সজল হোসেন, ইহতেশাম আহমদ টিংকু ও খন্দকার সুমন। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কামরুজ্জামান রাব্বী, লায়লা তাজনূর সাউদী, লিমা হক। শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন রবি দেওয়ান।  
 

Link copied!