Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪,

আমি সব সময় অশ্লীল পোশাকের বিপক্ষে: সিদ্দিক

মো. মাসুম বিল্লাহ

ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩, ১১:৩৫ এএম


আমি সব সময় অশ্লীল পোশাকের বিপক্ষে: সিদ্দিক

সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক একজন বাংলাদেশি টিভি অভিনেতা। তাকে টেলিভিশন নাটক ও ধারাবাহিকে বেশিরভাগ সময় কমেডি চরিত্রে দেখা যায়। এছাড়াও তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ২০১৩ সালে ‘এইতো ভালোবাসা’ মুক্তি পেয়েছিল। তিনি বর্তমান সরকারের অধীনে টাঙ্গাইল-১ ও ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করার কথা রয়েছে। আমার সংবাদ-এর নিয়মিত আয়োজন ‘স্টার মিডিয়া সার্কেল’-এ সমসাময়িক প্রসঙ্গে কথা বলেছেন - আকাশ নিবির।

 

বর্তমানে...

বর্তমানে সোশ্যাল ওয়ার্কার হিসেবে কাজ করছি। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের সাথে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করছি। পৃথিবীতে আসলে একা টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই যত পারি দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। সোশ্যাল ওয়ার্ক করে সবাইকে বিনোদন দিতে পারছি। তাতেই বা কম কী। এছাড়াও নিজের প্রডাকশন থেকে ইতোমধ্যে ৩০টির বেশি নাটকের কাজ শেষ করেছি। সম্পাদনার কাজ চলছে। খুব শিগগিরই তা দর্শক দেখতে পারবেন। এছাড়াও সরকারি মনোনয়ন পেলে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য টাঙ্গাইল-১ ও ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করব ইনশাল্লাহ।

স্বপ্ন...

প্রতিটি মানুষের স্বপ্নের কোনো শেষ নেই। কারো টিকে থাকার স্বপ্ন, আবার কারো থাকে উচ্চবিলাসী জীবনযাপন করার। আমার তেমন কোনো স্বপ্ন নেই। নটর ডেম কলেজ থেকে পাস করার পর দেশের বাইরে পড়ালেখার জন্য নিউজিল্যান্ডের এআইএস স্ট্রিট ইউনিভার্সিটিতে প্রি-ভিসায় যাবার কথা ছিল। ঠিক তখনই আমার ওস্তাদ তারিক আনাম খানের একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করার অফার পাই। সেটি ছিল একটি মিল্ক ক্যান্ডির বিজ্ঞাপন। সেদিন যদি মিডিয়া অঙ্গন থেকে দেশের বাইরে পড়ালেখার জন্য চলে যেতাম, তাহলে কিন্তু আজ এই সিদ্দিকের জন্ম হতো না। আমার জায়গায় হয়তো অন্য কোনো সিদ্দিকের জন্ম হতো। আজ শুধু সিদ্দিকের নাম বললেই তারা বলে ওঠেন নাট্যকার, পরিচালক, প্রযোজক আর অভিনেতা সিদ্দিক! এতো ভালোবাসা পাবার পরও কী স্বপ্ন থাকতে পারে।

মানুষের প্রতি বিনয়ী...

এটা আমার বাবার কাছ থেকে শেখা। আমি দেখেছি, কারো কোনো বিপদে টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাবা পাঞ্জাবি ঘাড়ে করে বেরিয়ে পড়েছেন। সকাল নেই, সন্ধ্যা নেই— সব সময় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সেখানে মানুষের বিপদে মানুষ হিসেবে আমাকে তো দাঁড়াতেই হবে আর এটাই স্বাভাবিক নয় কী। এমনও আছে রাত ৩টার বৃষ্টিতে ভিজে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার খবরও এই সিদ্দিকের রয়েছে। এখনও রাতবিরাতে সিদ্দিককে ডেকে পাননি— মিডিয়ায় এমন কোনো লোক খুব একটা পাওয়া যাবে না।

শুধু সিদ্দিকই অশ্লীল পোশাকের বিপক্ষে কেন?

প্রতিবাদের একটা নিজস্ব ভাষা রয়েছে। আজ আমাকে কিংবা অন্যকে অশ্লীলের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আগে দেখুন আমাদের পরিবারের মধ্যে কতটা পর্দা ছিল। বাবা-মা, এমনকি আত্মীয়-স্বজনের দিকে আজ থেকে ২০ বছর পূর্বে তাকান। সেখান থেকে আজ পর্যন্ত কেমন হয়েছে। আমরা মুসলমান জাতি হিবেসে এটা কী আমরা মানতে পারব? আমি শুরু থেকে একাই কথা বলে যাচ্ছি। তাতে কেউ পাশে থাকবে কি না আমার কিছু যায়-আসে না। আমি সব সময় অশ্লীল পোশাকের বিপক্ষে।

নিজের পরিবার নিয়ে...

এটা হয়তো সবার জানা। আমি নিজে মিডিয়ার কাজ করি। আমাদের সমাজব্যবস্থাপনা আর সন্তান মানুষ করার জন্যই মূলত পরিবার। আমরা এখনও পুরো পরিবার মিলে ২৬ জন একসাথে খাওয়া-দাওয়া করি। সেখান থেকে আমার সহধর্মিণী হয়তো এখন নেই। তাকে বলেছি, অভিনয়ের ইচ্ছা থাকলে আমার পরিবারে থাকা যাবে না। তার বাইরে তোমার যা ইচ্ছে করতে পার। তাতে তিনি রাজি ছিলেন না, তাই তাকে মুক্ত করে দিয়েছি। বর্তমানে সন্তানকে মানুষ করার পরিকল্পনায় আছি। তার ওপর আমার আর কোনো অভিযোগ নেই।

মিউজিক ভিডিও থেকে নায়িকা...

সবারই হয়তো জানা, সিনেমার জন্য এখন আর রাত ৮টার পর নায়িকাদের শিডিউল পাওয়া যায় না। সেটা মিউজিক ভিডিও হোক আর নতুন কোনো সিনেমারই হোক। আমিও নতুন একটি সিনেমার পরিকল্পনা করছিলাম। বর্তমানে এত বড় ইন্ডাস্ট্রিজে নায়িকা সংকট— এটা দুঃখজনক। আসলে তাদের কাজ কি? বড় বড় অনুষ্ঠানে আমার চোখে দেখা, মিউজিক ভিডিও থেকে উঠে আসা উঠতি মডেলসহ নামধারী নায়িকাদেরও অনেকে বড় শিল্পপতির সঙ্গে  আড্ডা দিতে দেখেছি। যাবার সময় আবার সে-ই বলেছে কাউকে যেন কোনো কিছু না বলি! অন্যদিকে এক নায়িকা তো প্রকাশ্যে এক নেতার গার্লফ্রেন্ড হয়ে প্রায় ৪ কোটি টাকা মেরে দিয়েছেন। এখনও তার গার্লফেন্ড নামে মোবাইলে নম্বরও সেভ করা রয়েছে।

এত নায়ক থাকতে শাকিব খানকে কেন চলচ্চিত্রে প্রয়োজন?

এত সুদর্শন হিরো আমাদের দেশে আর পাওয়া যাবে না। শাকিব খানকে নিয়ে আমাদের যত অভিযোগই থাকুক না কেন, শাকিব খানকে সামনে থেকে কেউ যদি  দেখে, তাহলে তার মনে হবে আসলে সে-ই অরিজিনাল হিরো। আমাদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ নেই। আমরা কী সবাই দুধে ধোয়া তুলসির পাতা? মাজারে দরবেশ তো বসে থাকবেই। সেখানে তার থেকে কীভাবে সাধুবাদ নেব, সেটি নিজের ব্যাপার। মানে, তার বিয়ের কথা বোঝাচ্ছি। প্রতিটি মানুষের বিয়ে করার স্বাধীনতা আছে। কে থাকবে আর কে চলে যাবে— সেটি তাদের দায়ভার। সে নিঃসন্দেহে সুপারস্টার। তাকে বলব, আমরা একেকজন দেশের সার্বভৌমত্ব বহন করি। দেশের সুনাম বয়ে আনতে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। চলচ্চিত্রের অবস্থা খুব বাজে। তার যেহেতু অনেক ভক্ত রয়েছে, এ মুহূর্তে শাকিব খানকে বর্তমান সিনেমার হাল ধরতে হবে।

বর্তমান চলচ্চিত্রে বাজে অবস্থা বলতে...

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া আমাদের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। যেখানে আমাদের দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শতকোটি টাকার বিনিময়ে প্রতিটি প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারণ করতে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিয়েছেন, সেখানে তো আমাদের খুশি হবারই কথা। কিন্তু এতেও অনেকে খুশি হয়নি। আরেকদিকে যখন মহাবিশ্বে চলচ্চিত্র দিয়ে জয়জয়কার। এক দিনে ১০০ কোটি টাকার বেশি আয় করছে, তখন আমরা সেই থার্টি ফাইভের মতো হান্ডেড ফ্রেমে শর্ট নিয়ে চিন্তা করছি। আর বসে আছি চলচ্চিত্র সংস্কার করবে সরকার! সরকার কী বসে আছে এসব নিয়ে? তাদের চিন্তা এখন দেশ এগিয়ে নিয়ে যাবার। চিন্তা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশসহ একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার। আসলে এখনকার চলচ্চিত্র পরিচালকরা শিখতে চান না। বর্তমানে নিজেদের কোন্দলেই চলচ্চিত্র অঙ্গন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে।

Link copied!