আকাশ নিবির
মার্চ ৫, ২০২৩, ০৪:২১ পিএম
আকাশ নিবির
মার্চ ৫, ২০২৩, ০৪:২১ পিএম
শুরু থেকেই হিন্দি ভাষায় নির্মিত বিদেশি ছবি দেশের বাজারে তেমন কোন সুরহা করতে পারেনি। অনেকে আছেন ভাওতাবাজির পরিচালক অনন্য মামুণের ফাঁকা আওয়াজের কথা নিয়ে! সাফটা চুক্তির মাধ্যমে দেশে হিন্দি ভাষার ছবি হিট দেয়া তো দূরের কথা গুলিস্তানের মাজার পর্যন্ত আনার ক্ষমতা তাদের নেই এদের। মূলত এদের পেশা দেশের গণমাধ্যমে আলোচনায় থাকা আর দেশের বাইরে মানব পাঁচার করা!! এরা শুরু থেকে দেশদ্রোহী। যুদ্ধের সময় এদের মতো মানুষগুলি হয়ে উঠেছিল রাজাকার। দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ এদেরকে জেলে ভরা নতুবা দেশ থেকে বিতারিত করা। এদের জন্যই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে গড়া চলচ্চিত্র অঙ্গণ আজ ধ্বংসের পথে।
মূল কথা হলো , যদি সরাসরি কোন হিন্দি ভাষায় নির্মিত দেশে মুক্তি পায় সে ক্ষেত্রে তাদের মার্কেটিং পলিসিতে সব থেকে বেশি লাভবান হবে দেশের স্টার সিনেপ্লেক্সগুলি। পূণরায় মুখ থুবড়ে পড়বে দেশের সিঙ্গেল স্ক্রীণের মালিকরা। তাহলে অন্যের কথায় কেন তারা মরণ নাচ নাচছেন? পূণরায় ভেবে দেখুন। নতুবা সরকারে স্বল্প সুদের লোন নিয়ে হল সংস্করণ করুন। ভয়ের কারণ নেই, হল এর পরিবেশ ভাল হলে আবারও ‘গলুই’, ‘পরাণ’ আর ‘হাওয়া’র মতো সিনেমা দেখতে দর্শকরাই হল এ হুমড়ি খেয়ে আসবে।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক চলচ্চিত্র পরিচালক বলেন, ‘দেশের সিনেমা হলগুলি শুধুমাত্র টিকে আছে দুই ঈদের বাজারের উপর। সেক্ষেত্রে ঈদে অবশ্যই শাকিব খানের ছবি থাকতে হয়। নতুবা সেই ঈদও ফাঁকা যায় শূণ্য গোয়াল ঘরের মতো। বর্তমানে দেশিয় চলচ্চিত্রের বাজারে সিঙ্গেল স্ক্রীণের শাকিব খানের দর্শক বেশি। তারাই এখন হল এ যাওয়া আসা করে। তাছাড়া এই নায়কের সিনেমায় তিন থেকে চার কোটি বাজেটের সিনেমা নির্মাণ হয়ে থাকে। বরং তার থেকে জোর পূর্বক প্রতিশ্রুতি নেওয়া। তিনি যেন প্রতি বছর অন্তত ১০-১২ টি ছবি নিজ উদ্দ্যেগে নির্মাণ করেন। তাতে করে সিঙ্গেল স্ক্রীণের মালিকরা হয়তো একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবেন।
বর্তমানে তো অন্য নায়কের সিনেমায় নির্মাণব্যায় থাকে সর্বোচ্চ ৩০-৪০ লক্ষ টাকায়। জানেনা অভিনয়। ভাব নিয়ে থাকেন সালমান খানের! এখনকার সিনেমাপ্রেমী দর্শকরা ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শিখেছে। তাতে করে ‘পাঠান’ কেন সয়ং শাহরুখ খান নিজের সিঙ্গেল স্ক্রীণের হলগুলিতে এসেও কোন কাজ হবে না বলে তার ধারণা।’
তিনি আরও বলেন, ‘হয়তোবা ইন্ডিয়ার ছবি সরাসরি মুক্তি পেলে দেশের বাজার তাতে নষ্ট হবে। তারা প্রতি সপ্তাহে ছবি ঢুকানোর চেষ্টা চালাবে। তাদের ৩শ থেকে ৪শ কোটির সিনেমা নিজেদের বাজার ঠিক রেখে নানান পলিসি মেক করে যে কোন উপায়ে প্রথমে দর্শকদের হল এ আনবে এরপর তাদের পুঁজি করে সিনেপ্লেক্সগুলিকে বেশি প্রধান্য দিবে। কারণ একটাই শাহরুক খানের মতো নায়ক তো আর নোয়াখালীর সোনারচরে এসে নৌকা চালাবে না। তারা বরাবরই চাইবে এসি রুমে থেকে সিনেমার মার্কেটিং করা। আমরা বাঙ্গালীজাতি বড় আবেগের জাতি। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকেই ইন্ডিয়ার কাছে প্রতারিত হয়ে আসছি তারপরও কেন শিখছি না?’
এছাড়াও তিনি বলেন, ‘আমাদের দরকার সরকারে থেকে স্বল্প সুদে হলগুলি আগে সংস্কারণ করা। কিন্তু তারা তা না করে ধান্দা করছে ৪ কোটি টাকা নিয়ে ২ কোটি টাকায় হল সংস্কারণের পাশাপাশি মার্কেট বানিয়ে বাকী ২ কোটি টাকায় মার্কেট বানিয়ে ভাড়া দিবার এমনকি জমি কিনে বাড়ী করার কথায় শোনা গেছে কারও কারও। তাতে করে বোঝাই যাচ্ছে শুরু থেকে আজ তাদের বড় লোভই ধ্বংস করেছে। এক একজন হল নির্মাণ থেকে এ পর্যন্ত কম টাকা কামিয়েছেন? তারা কি সরকারের লাভ করেছেন?? সিনেমার জন্য কি এমন তাদের অবদান রয়েছেন??? বরং তারা টিকেটের টাকা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েই নিজেদের বুক পকেট ভরেছেন। গড়েছেন বড় বড় নিজের নামে মার্কেট আর বাড়ী গাড়ী।
ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মিলিয়ে যখন অনন্য দেশ এগিয়ে চলেছে তখন এদেশের পরিচালরা আছেন পিকনিক আর একে অপরের নামে বদনাম নিয়ে। কেউ আছেন নায়িকা ভাড়া দিয়ে প্রযোজককে চুষে খেয়ে বাড়ী গাড়ী করার ধান্দায়। আবার অনেকেই আছেন সিনেমার মহরত করে সিনেমার সুনাম নষ্টের পায়তারায়।
ইদানিং চলচ্চিত্রে তো অনেক পরিচালকদের হ্যামিলিনের বাঁশি ফুঁকিয়ে স্বচোক্ষে দেখা মিলিছে গার্মেন্টস এর মেয়ে থেকে শুরু করে কাজের মেয়েদের পর্যন্ত ফেসবুকের ইনবক্সে নায়িকা বানানোর কথা বলতে। তাতে কি চলচ্চিত্রের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে না? হল মালিক থেকে শুরু করে এরকম নানান কর্মকাণ্ডেই সিনেমা অঙ্গণ থেকে দর্শকরা মূলত মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তাতে হল আর হল মালিকদের দোষ নেই। তবে অন্যের কু-বুদ্ধিতে এখন আছেন হিন্দি ভাষার বিদেশি সিনেমা এনে স্টার সিনেপ্লেক্সর হায়নাদের হাতে তুলে দেবার? এদের আসলে ধ্বংস হবারই কথা। কথায় আছে না ‘কেউ মরে পাপে আর কেউ মরে তাপে!’ দিনের পর দিন আসলে সিনেমার বাজার ধ্বংস হতে হতে এদের আসলে শেষ কোথায়? সেটি এখন দেখার মাত্র??