মো. সোহাগ বিশ্বাস
আগস্ট ৯, ২০২৩, ০৫:৪৪ পিএম
মো. সোহাগ বিশ্বাস
আগস্ট ৯, ২০২৩, ০৫:৪৪ পিএম
‘জাস্টিন ট্রুডোর ক্ষমতায়, বিল গেটসের টাকায়, ফুটবলার হাকিমির জনপ্রিয়তায়, হুমায়ুন ফরীদির ভালোবাসায়, তাহসানের কণ্ঠে কিংবা হৃতিক রোশনের স্মার্টনেসে-কোনো কিছুই নারীকে আটকাতে পারেনি। বলতে পারবেন নারী আসলে কিসে আটকায়?’ বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী এই ব্যক্তি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার স্ত্রী সোফি গ্রেগরির মধ্যে বিচ্ছেদের ঘোষণা সামনে আসার পর ফেসবুকে এই পোস্ট ভাইরাল হয়। কি ভাবছে তারকারা?
চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস তার ফেইসবুকে লেখেন ‘নারীরা প্রথমত আটকায় ভালোবাসায়। ভালোসার বন্ধনে নারী আটকে যায়। এরপর বিশ্বাস আর সম্মানে সম্পর্ক টিকে থাকে। একটি সম্পর্কে এগুলো যখন থাকবে না তখন অন্য কিছু দিয়ে আটকে রাখা সম্ভব নয়। টাকা কিংবা ক্ষমতার মোহ শুধু নারীর নয়, পুরুষেরও থাকে। তবে আমি মনে করি এটা নির্দিষ্ট একটা সময়ের জন্য। এরপর মোহ ভঙ্গ হয়। কিন্তু ভালোবাসা, বিশ্বাস আর সম্মান থাকলে সে সম্পর্ক কখনও নষ্ট হয় না।’
অভিনেত্রী সোহানা সাবা মনে করেন, কাউকে আটকানোর চেষ্টা করাই উচিত না। তিনি বলেন, ‘ছেলে হোক আর মেয়ে শুধু শুধু কাউকে আটকানোর চেষ্টা করেন না। এসব খুব ক্ষ্যাত আলোচনা। যাকে ভালোবাসেন, তাকে শুধু নিঃস্বার্থের মতো ভালোবেসে যান, তাহলে সে সেই আরামের ঘর ছেড়ে আর কোথাও যাবে না।’ এরপরও যদি কোনো নারী চলে যান? এমন প্রশ্নে অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘তারপরও যদি সে চলে যায়, তাহলে বুঝে নেবেন সে কোনোদিন আপনার ছিলই না। তাকে খুব কষ্ট হলেও যত জলদি সম্ভব ভুলে যাওয়াটা ভালো। কারণ আপনার ‘রাইট পার্সন’ আপনার জীবনে প্রবেশ করার জন্যে ‘রাইট টাইম’ আর ‘ভ্যাকান্সি’-এর জন্য ওয়েট করছে বা সৃষ্টিকর্তা সেই পরিস্থিতিই তৈরি করে দিচ্ছেন।’
অন্যদিকে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগী জাহারা মিতু এখন চলচ্চিত্রে কাজ করছেন। ‘আগুন’ চলচ্চিত্রে শাকিব খানের নায়িকা হওয়ার মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসেন মিতু। অভিনয়ের পাশাপাশি ফেসবুকে তার লেখালেখির প্রশংসা করেন অনেকে। এই ঢালিউড তারকাও সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ স্বাধীনচেতা প্রাণী। সে যখনই আটকে আছে অনুভব করবে, স্বাধীনতা লাভের অদম্য আশা তাকে বিদ্রোহী করে তুলবে। হোক তা পুরুষ কিংবা নারী। তাই কাউকে আটকে রাখার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। কে কিসে আটকায় এই চিন্তা বাদ দিয়ে, সবাই যে এই এক প্রশ্নে আটকে আছে, তা ভাবা জরুরি। তাই চলুন সব বাদ দিয়ে “জয় বাংলা স্লোগান পড়ি, আটকা-আটকিমুক্ত সমাজ গড়ি”।’
এদিকে নারী কিসে আটকায় বিষয়টি নিয়ে দুই বাংলার জনপ্রিয় নায়িকা নুসরাত ফারিয়া, ‘সুড়ঙ্গ’ খ্যাত চিত্রনায়িকা তমা মির্জা, এবং নায়িকা ইয়ামিন হক ববিও তাদের মত প্রকাশ করেছেন। নুসরাত ফারিয়া বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একটি মেয়ে একটি সম্পর্ক থেকে শুধু ভালোবাসা, যত্ন এবং স্নেহ চায়। আর কিছু না।’ নায়িকা ইয়ামিন হক ববি মনে করেন, ‘নারী মায়ায় আটকে থাকে। মায়ার টানে দুজনের সম্পর্ক টিকে থাকে। এটি যখন উঠে যায় তখন অন্য কিছুর জন্য সম্পর্ক থাকে না। নারী মায়ায় আটকে যায়।’ ‘সুড়ঙ্গ’ খ্যাত চিত্রনায়িকা তমা মির্জা বলেন, ‘নারীর কমিটমেন্ট অনেক শক্তিশালী। কমিটমেন্টে নারী আটকায়। আমি মনে করি কমিটমেন্ট আর ভালোবাসায় নারী আটকে যায়।’
তিনি স্বামী পরিত্যক্ত, নির্যাতিত কিংবা অসুখী হলেও সে দায় তাঁর। স্বামী বিচ্ছেদ চাইলেও সমাজ নারী প্রতিই আঙুল তোলে। এখন প্রশ্ন হলো, নারীর প্রতি কেন এই অসম প্রত্যাশা ও দাবি? এখানে আবার তুলতে হয় সেই ‘শাবানা সিনড্রোম’–এর কথা। শাবানা আমাদের দেখিয়েছেন, নারীকে হতে হবে ধরিত্রীর মতো সর্বংসহা। সবকিছু মেনে নিয়ে সবাইকে আপন করে নিতে হবে। আত্মত্যাগই হবে তার পরম ধর্ম। বিনিময়ে নারী পাবেন সংসারের প্রাণকেন্দ্র হওয়ার সম্মান।
গত মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবাষির্কীর ছাত্রলীগ আয়োজিত ছাত্রী সমাবেশেও উঠে আসে এই প্রসংঙ্গ, আলোচনা সভায় ছাএলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন নারীরা কিছুতেই আটকায় না।