Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

চট্টগ্রাম জেলায় ৩ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৮ জন কিশোরী পাবে এইচপিভি টিকা

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

অক্টোবর ২১, ২০২৪, ০৭:১১ পিএম


চট্টগ্রাম জেলায় ৩ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৮ জন  কিশোরী পাবে এইচপিভি টিকা

নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মন্নান বলেছেন,   জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সারাদেশে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা সংযোজন করেছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী/ কিশোরী (১০-১৪ বছর) ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটির ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীদেরকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই ব্যয়বহুল এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে। 

সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় আগামী ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে অনুষ্ঠিত হবে মাসব্যাপী জাতীয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৪। শুক্রবার ও সরকারী ছুটির দিন ব্যতীত মোট ১৮ দিনের প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত  সরকারি হাসপাতাল, স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে কিশোরীদেরকে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে। ১৭ ডিজিটের জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও জন্মনিবন্ধন বিহীন কিশোরীদেরকে হোয়াইট লিস্টিংয়ের মাধ্যমে ক্যাম্পেইনের প্রথম ১০দিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র সমূহে এবং পরবর্তী ৮ দিন স্থায়ী ও অস্থায়ী কেন্দ্রসমূহে কিশোরীদেরকে এইচপিভি টিকা দেয়া হবে। সকলের সহযোগিতায় জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করা হবে। এ লক্ষ্যে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থাগুলো ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। 

জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আজ ২১ অক্টোবর সোমবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা অ্যাডভোকেসি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জেলার ১৫ উপজেলার ৪ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ম-৯ম শ্রেণির ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৩০ জন কিশোরী ও স্কুল বহির্ভূত কমিউনিটির ৭ হাজার ৫১৮ জন কিশোরীসহ মোট ৩ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৮ জন কিশোরীকে এইচপিভি প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন এলাকায়ও প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার কিশোরীকে এইচপিভি প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বিত উদ্যোগে জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করা হবে। এ লক্ষ্যে সর্বত্র মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন করতে আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। 

তিনি বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর। এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিলে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যাবে। এটি কৈশোরকালীন স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে। এই মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে বর্তমান সরকার সারাদেশে আবারও বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। ১০-১৪ বছর বয়সী কোন কিশোরী কেউ যাতে এ টিকা থেকে বাদ না পড়ে সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখা হবে। ইপিআই ভ্যাকসিনের মধ্যে  এইচপিভি সবচেয়ে দামি। এবারের লক্ষ্য হলো ৯৫ শতাংশ কিশোরীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা। 

তিনি আরও বলেন, আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে দেশের সাতটি বিভাগে কিশোরী ও ছাত্রীদের মাঝে এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে, যা চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত। এ ক্যাম্পেইন সফল করতে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সমূহে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ৯০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই টিকা কিশোরীদের মাঝে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. এফ.এম জাহিদুল ইসলাম।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও এমওসিএস ডা. মো. নওশাদ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ্যাডভোকেসী সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মন্নান। রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সুদীপ্ত সরকার, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফরিদুল আলম, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আলমগীর কবীর, লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হানিফ, ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা মো. আরেফিন আজিম, বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. প্রতীক সেন, বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী নাথ, সংবাদ সংস্থা এনএনবি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধান রনজিত কুমার শীল, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক ইউসুফ মিয়া, ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল আমিন রিজভী, আন্দরকিল্লা জামে মসজিদের পেশ ইমাম মো. আনোয়ারুল হক প্রমুখ। বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর-সংস্থার প্রতিনিধি, জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ্যাডভোকেসী সভায় উপস্থিত ছিলেন। 

আরএস
 

Link copied!