Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪,

ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় থেকেও ওএসডি ডা. কবির জুয়েল

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০৫:২১ পিএম


ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় থেকেও ওএসডি ডা. কবির জুয়েল

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেও ওএসডি হয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শফিকুল কবির জুয়েল৷

সম্প্রতি এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক প্রতিনিধি, নার্সিং কর্মকর্তাদের প্রতিনিধি, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের প্রতিনিধি এবং তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের প্রতিনিধি৷

এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর এই ওএসডির বিষয়ে জানতে চেয়েছেন ভুক্তভোগী ওই চিকিৎসক৷ একইসাথে এর জবাব চেয়ে লিগ্যাল নোটিশও পাঠানো হয়েছে৷

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর করা ওই আবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. অভ্র দাস ভৌমিক সদ্য পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী ও কোটা সংস্কার ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো এবং সে ও তার সহযোগী চিকিৎসকরা বিগত ১৬ বছর যাবত এই প্রতিষ্ঠানে অর্থনৈতিক অনিয়মসহ ভয়ানক দুর্নীতি ও বৈষম্য তৈরি করে। বিগত ৫ আগস্ট সরকার প্রধান পালিয়ে যাওয়ার পর ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবিরকে উপ-পরিচালক হিসাবে এই প্রতিষ্ঠানে পদায়ন করে বিগত বছরগুলোতে ঘটে যাওয়া তাদের নির্লজ্জকর দুর্নীতিসহ তদন্ত করার দায়িত্ব দেয়া হয়, কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় মাত্র ১০ দিনের মাঝেই তারা ফ্যসিবাদের চক্র ব্যবহার করে ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবিরকে অন্যায়ভাবে গত ১ সেপ্টেম্বর ওএসডি করান।

ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান সরকারের একজন উপদেষ্টা যিনি এই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন পরিচালক ছিলেন, তার সহায়তায়ই এটি সম্ভব হয়েছে। কারণ সচিবালয়ে তার ফাইলে ওএসডি এর জন্য কোন সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ নাই।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, উল্লেখ্য যে, ডা. মোহাম্মদ শফিকুল কবির, একাধিক বিদেশি মেডিকেল ইন্সটিটিউটে ভিজিটিং প্রফেসর ও কনসালট্যান্ট সাইকিয়াটিস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন৷ বিগত স্বৈরাচারী সরকারের রোষানলে তিনি এখনো সহযোগী অধ্যাপক হিসাবেই থেকে গেছেন, যেখানে ডা. অভ্র দাস ভৌমিকসহ ৫ জন চিকিৎসক অনেক জুনিয়র হওয়া সত্ত্বেও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান, যা পদোন্নতি সংক্রান্ত জ্যেষ্ঠতা নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থি।

আবেদনে তারা বলেন, ডা. মোহাম্মদ শফিকুল কবির সলিমুল্লাহ মোডিকেল কলেজের কোটা সংস্কার ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক এবং কোটা বিরোধী আন্দোলনে বসুন্ধরা-বারিধারা এলাকা (এনএসইউ, ইউআইইউ, ডিআইইউ,এআইইউবি, আইইউবি ও ব্র্যাক)-র যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

আবেদনে তারা বলেন, আমাদের আকুল আবেদন, অত্র প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদে ডা. অভ্র দাস ভৌমিকের পরিবর্তে ডা. মোহাম্মদ শফিকুল কবিরকে দ্রুত চলতি দায়িত্বে (সিসি) অধ্যাপক করে পরিচালক পদে পদায়ন করে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় দুর্নীতি, অন্যায়, অবিচারসহ সকল বৈষম্যের আশু অবসান সাপেক্ষে চলমান আন্দোলনকে প্রশমিত করে শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার সুযোগ প্রদান করে বাধিত করবেন।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সরাসরি মাঠে থাকা থেকে ট্রমায় থাকা শিক্ষার্থীদের ফ্রি চিকিৎসাও দিয়েছেন এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ৷ এসব কর্মসূচির তথ্য প্রমাণ রয়েছে৷

এ বিষয়ে ডা. শফিকুল কবির জুয়েল বলেন, পতিত সরকারের একটি চক্র আমাকে কৌশলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওএসডি করেছে৷ এ হাসপাতালে দায়িত্ব নিয়েই আমি আন্দোলনের সময়ে ট্রমায় থাকা শিক্ষার্থীদের ফ্রি কাউন্সেলিং এবং ওষুধের ব্যবস্থা করেছি৷ আউটসোর্সিং ভিত্তিতে কাজ করা কর্মচারীদের পুরো বেতন দিতে পদক্ষেপ নিয়েছি৷ এছাড়া আরও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলাম৷ কিন্তু পতিত সরকারের কিছু প্রতিনিধির রোষানলে আজ আমাকেই ওএসডি করা হয়েছে৷

ইএইচ

Link copied!