জুলাই ২৯, ২০২২, ১২:৪০ পিএম
ভারতের রাজস্থানের হনুমানগড়ে গরু জবাইয়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গত ১০ জুলাই ঈদ উৎসবে গরু জবাইয়ের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কারফিউ জারি করেছে পুলিশ প্রশাসন। এ ছাড়া ওই এলাকায় ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গত ঈদে হনুমানগড়ের চিদিয়া গান্ধীতে গরু জবাইয়ের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। প্রাথমিকভাবে প্রশাসন জানিয়েছিল, গ্রামে কোনো গরু জবাই হয়নি। কিন্তু পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত গোশত পরীক্ষা করতে ল্যাবে পাঠায়।
এরফলে ‘এফএসএল’ রিপোর্টে গরু জবাইয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। একই সঙ্গে ‘এফএসএল’ রিপোর্ট আসার পর গ্রামবাসীরা অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এবং গরু জবাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গ্রামবাসীরা ধর্না-অবস্থান শুরু করেন।
আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভস্থল থেকে পুলিশ সরিয়ে দেওয়ার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়।
বুধবার (২৭ জুলাই) বিকেলে গ্রামবাসীরা মিছিল বের করলে পুলিশ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার অভিযোগে লাঠিচার্জ করে। এতে পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বিক্ষোভকারীদের পাথর নিক্ষেপের জবাবে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে জেলার গান্ধীবাড়ি ও চিদিয়াগান্ধি গ্রামে কারফিউ জারি করা হয়।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চিদিয়া গান্ধী পঞ্চায়েত এবং হনুমানগড়ের গান্ধী বাড়ি এলাকায় কারফিউ কার্যকর থাকবে। এখানে ইন্টারনেট পরিসেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পাশাপাশি ৪৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আসলে ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত গোশতের এফএসএল রিপোর্ট আসার পর কিছু মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময়ে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ভিরানী থানার কর্মকর্তা ওমপ্রকাশ সুথার মাথায় আঘাত পান।
জেলা পুলিশ সুপার অজয় সিং বলেন, আইন ভঙ্গ করে উপদ্রব সৃষ্টি করার জন্য ৪৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ২০টিরও বেশি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এতে হরিয়ানা থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ এসেছিলেন। পুলিশ এমন ইনপুট পেয়েছিল যে হরিয়ানা থেকে আসা লোকেরা এখানে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
জেলা কালেক্টর নাথমল ডিডেল বলেন, গতকাল জড়ো হওয়া লোকেরা আইন হাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, চিদিয়া গান্ধী ও গান্ধী বাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত গ্রামে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
এতে জরুরি পরিসেবা ছাড়া কাউকে অনুমতি দেওয়া হবে না। পাঁচ শতাধিক ‘আরএসসি’ ছাড়াও রাজস্থান পুলিশের কর্মকর্তা ও কনস্টেবলদের চিদিয়া গান্ধী এবং গান্ধী বাড়িতে মোতায়েন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, পুলিশ বলছে, গরু জবাই সংক্রান্ত ঘটনায় ফারুক, আনোয়ার, আমীন খান ও সিকান্দার খানকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদের সবার বিরুদ্ধে গোহত্যা সংক্রান্ত ধারায় মামলা করা হয়েছে। সুত্র: পারসটুডে
আমারসংবাদ/টিএইচ