নভেম্বর ৫, ২০২২, ১২:৪০ পিএম
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমবার প্রকাশ্যে কথা বলেছেন। আগাম নির্বাচনের দাবিতে লংমার্চ চলাকালে গত বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে একজন নিহত হন। আহত হন ইমরান খান ও পিটিআইয়ের কয়েকজন নেতাসহ ১৪ জন।
লংমার্চে সশস্ত্র হামলার শিকার হওয়ার এক দিন পর গতকাল শুক্রবার মুখ খুলেছেন ইমরান খান। তার ওপর হামলার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ে কর্মরত মেজর জেনারেল ফয়সাল নাসিরকে দায়ী করেছেন ইমরান। সুস্থ হয়ে আবারও আন্দোলনে নামবেন বলে ঘোষণাও দিয়েছেন ইমরান খান।
জিও টিভির খবরে বলা হয়েছে, লাহোরের শওকত খানুম হাসপাতাল থেকেই শুক্রবার (৪ নাভেম্বর) নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ইমরান খান। সন্ধ্যায় পিটিআইয়ের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকে তার বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।
শাহবাজ সরকারকে আক্রমণ করে ইমরান খান বলেন, ‘আমি পারভেজ মোশাররফের সামরিক শাসন দেখেছি। সেই সময় আমাকে জেলে যেতে হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ের শাসনের চেয়ে আজকের শাসন ভয়ংকর।’
তাকে হত্যার পরিকল্পনার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে ইমরান খান বলেন, ‘আমি সাড়ে তিন বছর সরকারে ছিলাম। আমাকে পছন্দ করেন, এমন অনেকে এখনো সরকারি চাকরি করেন। অনেকে গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করেন। তারা হত্যা পরিকল্পনা সম্পর্কে আমাকে জানিয়েছেন।’
লাহোরের একটি হাসপাতালে হুইল চেয়ারে বসে ইমরান খান বলেছেন, তিনি গুলি থেকে বাঁচতে পারতেন না; যে দুই শুটারকে তিনি দেখেছেন, তারা যদি একযোগে আক্রমণ চালাতো।
ইমরান খান আরো বলেছেন, কারণ- আমি পড়ে গেলাম, আর শুটারদের একজন ধারণা করল আমি মারা গেছি এবং (সে) চলে গেল।
ইমরান খান বলেন, তার ওপর আসলে দুজন গুলি চালিয়েছে। একজন সামনে থেকে, অন্যজন পাশ থেকে গুলি চালিয়েছে। সামনের ব্যক্তির গুলি তাকে আঘাত করলে তিনি ঝুঁকে গেলে পাশ থেকে চালানো ওই বন্দুকধারীর গুলি মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়।
পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে ইমরান খান বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করুন। পাকিস্তানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে ইরানের মতো বিপ্লব হবে।
ইমরান খানকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। মামলার অভিযোগ থেকে জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার নাম বাদ দিতে ইমরান খান অস্বীকৃতি জানালে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এ মামলায় নাম রয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও।
ইমরান খানের ওপর বন্দুক হামলার ঘটনায় আরও দুই সন্দেহভাজনকে আটক করেছে তদন্তকারীরা। তারা হামলাকারীকে অস্ত্র ও গুলি সরবরাহ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আর ঘটনার সময়ই অস্ত্রধারীকে আটক করা হয়েছিল।
এরই মধ্যে পাকিস্তানের পুলিশ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ওই ভিডিওতে এক ব্যক্তি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, সাবেক ক্রিকেটার জনগণকে `বিপথগামী` করছিলেন। এজন্য তিনি `ইমরান খানকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন`। তবে ওই ব্যক্তি ঠিক কোন পরিস্থিতিতে এই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, তা পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি। সূত্র: ডন, জিও টিভি, বিবিসি
টিএইচ