নভেম্বর ২৮, ২০২২, ১০:৩২ এএম
করোনাভাইরাসের কঠোর বিধিনিষেধবিরোধী বিক্ষোভ চীনের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ছে। রোববার (২৭ নভেম্বর) সাংহাইয়ে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। বিবিসি জানিয়েছে, রাজধানী বেইজিং এবং সাংহাইয়ে বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারী জমায়েত হয়েছে। সেসব স্থানে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিয়েছেন।
লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরাও। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের লকডাউন বিরোধী স্লোগান বন্ধ করতে বললে ব্যঙ্গাত্মকভাবে উল্টো স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, `আরো লকডাউন চাই`, `করোনা পরীক্ষা করুন`।
অর্থনৈতিক কেন্দ্র শন জিয়ায় এক বিক্ষোভকারী বলেন, `আমি এখানে এসেছি কারণ আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি সরকারকে ভালোবাসি না। আমি স্বাধীনভাবে বাইরে যেতে চাই, কিন্তু পারি না। আমাদের কোভিড-১৯ নীতি একটি খেলা ও এটি বিজ্ঞান বা বাস্তবভিত্তিক নয়।`
রোববার উহান ও চেংডুতেও বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমেছিল। বেইজিংয়ে ছোট ছোট সমাবেশে শান্তিপূর্ণ মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়। এছাড়া ছুটির দিনে চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে।
সম্প্রতি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর উরুমকিতে একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের ভবনে আটকে পরার জন্য করোনা বিধিনিষেধকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে চীনা কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
২৬ বছর বয়সী সাংহাইয়ের এক বিক্ষোভকারী বলেন, `আমরা শুধু আমাদের মৌলিক মানবাধিকার চাই। আমরা পরীক্ষা না করে বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। এখানের মানুষ সহিংস নয়। কিন্তু পুলিশ বিনা কারণে তাদের গ্রেপ্তার করছে। তারা আমাকে ধরার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমার চারপাশের লোকেরা আমার হাত জোরে ধরে পেছনে টান দেন যাতে আমি পালিয়ে যেতে পারি।`
চীনে প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং এবং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বা স্লোগান দেওয়ার ঘটনা বিরল। দেশটির আইন অনুযায়ী, সরকার ও প্রেসিডেন্টকে নিয়ে সরাসরি সমালোচনাকারীদের কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কর্তৃপক্ষ হয়তো কঠোর শূন্য করোনা নীতির প্রতি মানুষের ক্ষোভের মাত্রা অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে। সম্প্রতি এই নীতি থেকে পিছু না হটার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং।
টিএইচ