ডিসেম্বর ২৫, ২০২২, ১১:৩৪ এএম
বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের পড়াশুনা বন্ধের পর এবার হিজাব না পরার কারণ দেখিয়ে দেশি-বিদেশি এনজিওতে তাদের কাজ করা নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। এই নির্দেশ লঙ্ঘন করা হলে তাদের লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দেয়া হয়েছে।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) জারি করা তালেবানের এই নির্দেশকে মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন জানিয়ে নিন্দা করেছে জাতিসংঘ।
আফগানিস্তানের যে নারী এনজিও কর্মীরা তাদের পরিবারের আয়-রোজগারের প্রধান ব্যক্তি হিসেবে কাজ করেন, তালেবানের এই সিদ্ধান্তে তাদের ভয় এবং আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন বিবিসির কাছে।
একজন বলেছেন, ‘আমি যদি কাজ করতে যেতে না পারি, আমার পরিবারে খরচ কে দেবে?’
তালেবানের ওই নির্দেশ দেশি-বিদেশি সব এনজিওর জন্য প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এর ফলে লাখ লাখ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, সারা বিশ্ব জুড়েই মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে নারীরা প্রধান ভূমিকায় কাজ করেন। এই সিদ্ধান্ত আফগান জনগণের জন্য বিপর্যয়কর হবে।
তালেবানের এই নির্দেশকে ‘মানবাধিকারের মৌলিক নীতিগুলোর গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে বর্ণনা করেছেন জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
আফগানিস্তান জুড়ে বড় মাত্রায় ত্রাণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো। তালেবানের এই নির্দেশের পর তারা কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে রবিবার একটি বৈঠকে বসার কথা রয়েছে সংস্থাগুলোর।
সেভ দ্যা চিলড্রেনের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, তারা এ নিয়ে তালেবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে। কিন্তু নারীদের যদি কাজ করতে দেয়া না হয়, তাহলে হয়তো তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলতে হবে।
বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাজে নারী ও শিশুদের কাছে সেবা পৌঁছানোর জন্য নারী কর্মী থাকা অত্যাবশ্যক বলেছেন, কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের একজন কর্মকর্তা মেলিসা কর্নে।
‘যেখানে পুরো দেশ জুড়েই দুর্ভিক্ষের একটা ঝূঁকি রয়েছে, সেখানে তাদের (নারী কর্মীদের) ছাড়া মানবিক পরিস্থিতির খুব তাড়াতাড়ি অবনতি হবে’’, তিনি বলেছেন।
এ সপ্তাহেই আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সেদেশের নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ করে এবং প্রাইভেট টিউশন কেন্দ্রগুলোর প্রতি আদেশ দেয়, যেন তারা কোন ছাত্রীকে শিক্ষাদান না করে। সেই নির্দেশও ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সূত্র: বিবিসি ও আল-জাজিরা।
কেএস