Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ফের অর্থনৈতিক মন্দার কড়া সতর্কবার্তা বিশ্ব ব্যাংকের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জানুয়ারি ১১, ২০২৩, ০৮:১১ পিএম


ফের অর্থনৈতিক মন্দার কড়া সতর্কবার্তা বিশ্ব ব্যাংকের

বিশ্ব ২০২৩ সালে কড়া অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে যাচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার এমন একটি কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সুদের হার বৃদ্ধির প্রভাবের তীব্রতা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ অব্যাহত থাকার কারণে বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির চালিকা শক্তি থমকে গেছে। এসব কারণে ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধি কমার পূর্বাভাস দিলো বিশ্ব ব্যাংক। সতর্ক করা হলো অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস এসব সতর্কবার্তা দেন।

২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি হতে পারে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। যা ২০০৯ ও ২০২০ সালের মন্দার বাইরে ১৯৯৩ সালের পর সবচেয়ে কম। যেখানে গত জুনেও ৩ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। ঋণদাতা সংগঠনটি ২০২৪ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে গড় প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশের নিচে হবে। ১৯৬০ সালের পর পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে কম বলে জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।

ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, প্রত্যাশিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুদের হারের আকস্মিক বৃদ্ধি, কোভিড-১৯ মহামারি থেকে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার কিংবা ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বিশ্ব অর্থনীতিকে ধাক্কা দিতে পারে বলেও বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সংস্থাটি বলছে, উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য পরিস্থিতি কঠিন হবে বলছে। কেননা তারা ভারী ঋণের বোঝা, দুর্বল মুদ্রা ও আয় বৃদ্ধির সঙ্গে লড়াই করছে।

প্রবৃদ্ধি ও ব্যবসায়িক বিনিয়োগে দুর্বল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য এবং অবকাঠামো ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমবর্ধমান চাহিদার মধ্যে বিধ্বংসী পরিবর্তন আরও জটিলতা তৈরি করবে বলে জানিয়েছেন, বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস।

জিরো-কোভিড বিধিনিষেধ বাজারে অস্থিরতা, উৎপাদন ও বিনিয়োগকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে চিনের অর্থনীতিকে।২০২২ সালে চীনের প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৭-এ নেমে আসে, যা ২০২০ এর পরে ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে দ্বিতীয় ধীর গতি সম্পন্ন।

কোভিড সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া এবং বাহ্যিক চাহিদা দুর্বল হওয়ার কারণে গত জুনের পূর্বাভাসের চেয়ে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ পয়েন্ট কম। কিন্তু চীনের প্রবৃদ্ধি ২০২৩ সালে ৪ দশমিক ৩-এ ফিরে আসার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।  

মুদ্রাস্ফীতির চাপ কোথাও কোথাও কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। কিন্তু সতর্ক করেছে নতুন করে পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি বেশি এবং মুদ্রাস্ফীতি অব্যাহত থাকতে পারে। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো বর্তমান প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সুদের হার বাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী মন্দা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

স্বল্প আয়ের দেশগুলোকে খাদ্য ও জ্বালানির ধাক্কা সামলাতে, সংঘর্ষের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া লোকজন ও ঋণ সংকটের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বর্ধিত সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিভা এর আগে বৈশ্বিক মন্দা নিয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতির এক-তৃতীয়াংশ মন্দার মধ্যে থাকবে।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, জলবায়ু অভিযোজন, মানবিক পুঁজি ও স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য বেসরকারি পুঁজি ও দেশীয় সম্পদের পাশাপাশি নতুন ছাড়যুক্ত অর্থায়ন ও অনুদান প্রয়োজন।

জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যান্য বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা ব্যাপকভাবে প্রসারিত করার লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ড এ সপ্তাহে একটি নতুন ‘রোড ম্যাপ’ বিবেচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র: রয়টার্স

কেএস

Link copied!