ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪, ০৫:৫৮ পিএম
মিয়ানমারের জান্তা সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাতের ইস্যুটিকে কেন্দ্র করে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর জোরাল প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। দেশটির মিজোরাম, মনিপুর, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল সীমান্তে কাঁটাতার বসাবে নয়া দিল্লি।
এ মধ্যে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ভারত-মিয়ানমারের ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে কাঁটাতার বসানো হবে।
এখন এই সীমান্তের অধিকাংশ জায়গাতেই কাঁটাতার নেই। কিছুদিন আগে মনিপুরের ‘মোরে’ সীমান্তে কাঁটাতার বসানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, অনুপ্রবেশ ও চোরাচালন বন্ধ করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সীমান্তে কাঁটাতারের পাশাপাশি পেট্রোলিংয়ের জন্য রাস্তাও তৈরি করা হবে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সীমান্তের অধিকাংশ জায়গাতেই এই কাঁটাতার এবং পেট্রোলিং রোড দেখতে পাওয়া যায়। মিয়ানমার সীমান্তে এই রাস্তা এতদিন ছিল না।
মূলত, ২০২৩ সালের মে মাসে মনিপুরের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবল লড়াই শুরু হয়। উপত্যকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতিদের সঙ্গে পাহাড়ে বসবাসকারী কুকিদের সংঘর্ষ চলছে। বহু প্রাণহানির ঘটনাও অব্যাহত হয়েছে। অভিযোগ অসে, যারা মিয়ানমারে সেনা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারাই কুকিদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে।
বিজেপি সরকারের অভিযোগ, ২০২১ সালে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিপুল পরিমাণ বার্মিজ উদ্বাস্তু, মনিপুরে আসতে শুরু করেছে। তারাই কুকিদের সঙ্গে মেইতিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য,মনিপুরের পরিস্থিতি দেখেই দ্রুত মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ইতিমধ্যেই কোনো কোনো জায়গায় সে কাজ শুরুও হয়ে গেছে।
এদিকে মনিপুরে ক্ষমতায় আছে বিজেপি সরকার। ভারতের অরুণাচল ও নাগাল্যান্ড রাজ্যগুলো মিয়ানমারের সীমান্ত খুব বেশি নয়। তবে বড় সীমান্ত আছে মিজোরামে। বস্তুত, মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছিল, মিয়ানমারের উদ্বাস্তুদের ভারতে জায়গা দেওয়া হবে না। ঠিক যেভাবে এর আগে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের নিয়ে ভারতের অবস্থান ছিল।
মনিপুর সরকারের অভিযোগ, এই চিন উপজাতির যোদ্ধারাই একদিকে মিয়ানমারে সেনাদের বিরুদ্ধে লড়ছে অন্যদিকে মনিপুরের গৃহযুদ্ধে কুকিদের সাহায্য করছে।
অন্যদিকে ভারতের সাবেক লেফটন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য জানায়, ‘ইন্দিরা গান্ধীর সময় থেকেই মিজোরাম ও মিয়ানমারের বাসিন্দাদের নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন। একসময় তারা গ্রেটার জো-কুকি-চিন হোমল্যান্ডের দাবি তুলেছিল। ফলে মিজোরামের বর্তমান সরকার মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতার বসানো নিয়ে আপত্তি তুলতেই পারে।’
বিআরইউ