Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫,

কমছে জনপ্রিয়তা

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হাজারো জনতার বিক্ষোভ

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

এপ্রিল ২০, ২০২৫, ১০:৪৫ এএম


যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হাজারো জনতার বিক্ষোভ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কিছু নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে একযোগে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ।

স্থানীয় সময় শনিবার আয়োজিত এই দেশব্যাপী আন্দোলনের নাম দেওয়া হয় “৫০৫০১”—অর্থাৎ ৫০টি অঙ্গরাজ্যে ৫০টি প্রতিবাদ, একটাই আন্দোলন।

বিক্ষোভকারীরা এই আন্দোলনকে “স্বাধীনতার জন্য নতুন লড়াই” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আন্দোলনের সময় অনেককে “No Kings” লেখা পোস্টার হাতে দেখা গেছে, যা ইংরেজ রাজতন্ত্রবিরোধী আমেরিকান বিপ্লবের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই কর্মসূচির সময়কালও ছিল আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর ২৫০তম বার্ষিকীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

বিক্ষোভের মূল ইস্যুগুলোর মধ্যে ছিল অভিবাসন নীতি এবং সরকারি ব্যয়ের কাটছাঁট। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগুলো মানবিক মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য হুমকি। এ সময় ট্রাম্প প্রশাসনের “ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই)” নামক একটি প্রকল্পেরও সমালোচনা করা হয়, যেটি সরকারি ব্যয় ও কর্মসংস্থান হ্রাসের উদ্দেশ্যে চালু হয়েছে।

এ আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন কিলমার আবরেগো গার্সিয়া নামে এক মার্কিন অভিবাসী, যাকে ভুলবশত এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়। তার সমর্থনে অংশ নেন গিহাদ এলজেন্দি নামে এক বিক্ষোভকারী, যিনি সিএনএনকে বলেন, “ট্রাম্প চাইলে এল সালভাদরের ওপর চাপ দিয়ে গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনতে পারতেন।”

বিক্ষোভগুলো বেশিরভাগ জায়গায় শান্তিপূর্ণ হলেও কিছু এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এক পর্যায়ে ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান সুহাস সুব্রামানিয়াম এক ট্রাম্প-সমর্থকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন, যার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

ম্যাসাচুসেটসের লেক্সিংটন ও কনকর্ড যুদ্ধের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারী টমাস ব্যাসফোর্ড বলেন, “এটি আমাদের স্বাধীনতার জন্য আরেকটি কঠিন সময়। আমি আমার নাতিদের শেখাতে চেয়েছি—এই দেশ কীভাবে গড়ে উঠেছে এবং কখনও কখনও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতেই হয়।”

এদিকে সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে। গ্যালাপের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় দফা দায়িত্ব নেওয়ার পর তার জনপ্রিয়তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশে, যেখানে জানুয়ারিতে ছিল ৪৭ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে, ১৯৫২ থেকে ২০২০ পর্যন্ত যেকোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টের গড় প্রথম কোয়ার্টার জনপ্রিয়তা ছিল ৬০ শতাংশ।

রয়টার্স/ইপসোস জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্টির হারও কমে ৩৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যেখানে জানুয়ারিতে ছিল ৪২ শতাংশ।

তবে, বিশ্লেষকদের মতে, এই বিক্ষোভ “সবচেয়ে বড়” না হলেও তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এপ্রিলের শুরুতে অনুষ্ঠিত “হ্যান্ডস অফ” (Hands Off) শীর্ষক আন্দোলনটি আরও বড় পরিসরে হয়—৫০টি অঙ্গরাজ্যের ১২০০টি স্থানে একযোগে অনুষ্ঠিত হয়, যা ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ইএইচ

Link copied!