জুলাই ১৬, ২০২২, ০৩:২৬ পিএম
গাজী মিজানুর রহমান। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। জন্ম ও বেড়ে ওঠা কুমিল্লাতেই। প্রবল ইচ্ছা শক্তি, ধৈর্য আর অধ্যবসায় দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন ৩৫তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে। শিক্ষাকতার পাশাপাশি লেখক, মোটিভেশনাল স্পিকার ও ক্যারিয়ার পরামর্শক হিসেবেও বেশ পরিচিত তিনি। সমপ্রতি আমার সংবাদকে দেয়া এক সাক্ষাতাকারে জানিয়েছেন জীবনের বাঁকে বাঁকে ঘটে যাওয়া প্রতিবন্ধকতা, সফলতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার নানা দিক। তার মুখোমুখি হয়েছিলেন আমার সংবাদের নিজস্ব প্রতিবেদক - মুছা মল্লিক।
আমার সংবাদ- জানার আছে অনেক কিছুই, তবে আপনার শৈশবের গল্প দিয়ে শুরু করতে চাই।
গাজী মিজানুর রহমান- আমি শৈশবে কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি যে, আজকের এই অবস্থানে আসতে পারবো। আমি একজন বিসিএস ক্যাডার হবো, লেখক হবো, মোটিভেশনাল স্পিকার হবো- এসবের কোনোটায় শৈশবে আমার মাথায় ছিল না। ছোটবেলায় প্রচুর খেলাধুলা করতাম। পড়ার চেয়ে খেলাধুলায় সময় বেশি ব্যয় করতাম। তবে ছোটবেলায় আমি খুব গম্ভীর প্রকৃতির ছিলাম। পরিচিত ছাড়া কারও সাথে তেমন মেশা হতো না। দেখা গেছে, হাই স্কুলে কোনো এক বেঞ্চের কোণায় চুপচাপ বসে থাকতাম। কেবল কয়েকজনের সাথেই ক্লাসের বেঞ্চিতে বসতাম। পড়া পারলেও ক্লাসে খুব একটা পড়া বলতে চাইতাম না।
আমার সংবাদ- বিসিএস দিবেন এই সিদ্ধান্ত কখন নিলেন?
গাজী মিজানুর রহমান- যখন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হই; আমাদের যারা ক্লাস নিতেন তারা সবাই ছিলেন বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার। তাদের দেখে ও তাদের মুখে বিসিএস সম্পর্কে শুনে প্রথমে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন জাগে মনে। তারপর যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, অনেক স্যার বিসিএস সম্পর্কে বলতেন। তখন বিসিএস নিয়ে স্বপ্ন ডানা মেলতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় ও হলের বড় ভাইদের বিসিএস ক্যাডার হতে দেখে স্বপ্নটাকে বাস্তবে রূপ দিতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে শুরু করি।
আমার সংবাদ- কত রকমের চাকরি আছে। বিসিএস কেন বেছে নিলেন?
গাজী মিজানুর রহমান- বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিসিএসের ডিমান্ড বেশি। কারণ, বিসিএসে স্যালারি যা-ই হোক না কেন সোস্যাল স্ট্যাটাস ও জব সিকিউরিটি বেশ ভালো বলা চলে। এছাড়াও অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করেছে। প্রথমত, যদি বলি ২০১৫ সালে সরকার যে অষ্টম পে-স্কেল দিয়েছে। এই পে-স্কেলে সরকারি অফিসারদের স্যালারি প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে। এটার পরে আমার মতো অনেক তরুণ কিন্তু প্রাইভেট সেক্টর থেকে সরকারি সেক্টরের দিকে ঝুঁকছে বাশি। এক্ষেত্রে বিসিএসকে তো সরকারি চাকরির মধ্যে উপরের স্তর ধরা হয়। যারা সরকারি চাকরি করতে চায়, তারা হয়তো বিসিএস ক্যাডার হতে চায় অথবা তা না পেলে নন ক্যাডারের মাধ্যমে ভালো কোনো চাকরি পেতে চায়। বিসিএস প্রিলি, রিটেন ও ভাইভা পাশ করলে বিসিএস ক্যাডার হতে না পারলেও মোটামুটি ভালো মানের নন-ক্যাডার চাকরি পাওয়া সম্ভাবনা থাকে। এই বিষয়টি আমাকে বিসিএসের দিকে বেশ আকৃষ্ট করেছে। আরেকটা ব্যাপার হলো- সরকারি নিয়োগ পরীক্ষাগুলোতে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া, এমনকি কোনো বেসরকারি সেক্টরে রেফারেন্সে জব হওয়া এ ধরনের অনেক অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে পত্রপত্রিকা ও সংবাদে দেখা যায়। এ বিষয়গুলো বিসিএস পরীক্ষা বেছে নিতে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে।
আমার সংবাদ- বিশাল সিলেবাস। প্রস্তুতি নিয়েছিলেন কীভাবে?
গাজী মিজানুর রহমান- আমাকে যে বিষয়টা সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রেখেছিল সেটি হচ্ছে আমি গ্রামে পড়াশোনা করেছি, সেই জায়গাটা আমার গণিত এবং ইংরেজির মধ্যে দুর্বলতা ছিল। আমি যখন বিসিএস বা জবের জন্য প্রস্তুতি শুরু করি, প্রথমেই আমি আমার দুর্বল জায়গাগুলোতে কাজ করেছি। আর এই কাজটি করেছে অনার্সে পড়াকালীন একাডেমিক পড়ার ফাঁকে ফাঁকে অল্প অল্প করে। তবে এখনকার ২০০ নম্বরের সিলেবাসে ৬০ নম্বরের সাধারণ জ্ঞান আমাকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রেখেছে। যে বিষয়গুলো ভালো পারি আর যেখান আমার দুর্বলতা ছিল সেগুলো গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমে সমাধান করেছি। এছাড়া আমি বাংলার উপর চাকরি সহায়ক বেশকিছু বেসিক বই পড়েছি। আর এভাবে দুর্বল জায়গা ধরে ধরে পড়ার মাধ্যমে আমি মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠি।
আমার সংবাদ- বিসিএসের জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের বই পড়েন। আপনি কী কী বই পড়েছেন?
গাজী মিজানুর রহমান- আমি যেহেতু নিয়মিত অনেক বই পড়তাম, তাই বিসিএস সম্পর্কিত বাজারের প্রচলিত অধিকাংশ বই পড়েছি। এই ক্ষেত্রে খুব কম বই আমার পড়া থেকে বাদ পড়েছে বলে মনে হয়।
আমার সংবাদ- পর্দার আড়াল থেকে কেউ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে? কাকে বেশি মনে পড়ে?
গাজী মিজানুর রহমান- বাবা-মায়ের কষ্টগুলো যখন চোখের সামনে ভেসে ওঠত, তখন তাঁদের জন্য হলেও বড় কিছু করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা উদ্ভাসিত হত। বড় কিছু হওয়ার জন্য আমি ছোটবেলায় সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছি দাদার কাছ থেকে। তিনি যখন মাঝেমধ্যে বাইসাইকেলের পেছনে বসিয়ে স্কুলে নিয়ে যেতেন, তখন যারা বড় বড় চাকরি করতেন তাদের নাম ধরে গল্প করতেন আর আমাকে অনুপ্রাণিত করতেন। বলতেন, জীবনে বড় কিছু করতে না পড়লে মানুষের কাজ করতে হবে। মানুষের ধমক শুনতে হবে কাজ খারাপ করলে। এরপর সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছি নিন্দুকদের কাছে। কারণ নিন্দুকেরা সমালোচনা না করলে নিজের ভেতরের সুপ্ত শক্তিমত্তা ও যোগ্যতা এত সহজে জেগে উঠত না। নিন্দুকদের সমালোচনাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে জেদে পরিণত করতে পারলে জীবনে অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব বলে আমি মনে করি।
আমার সংবাদ- আপনার সফলতার পেছনে নিশ্চয় ব্যর্থতার গল্পও লুকিয়ে আছে। সেই গল্প শুনতে চাই।
গাজী মিজানুর রহমান- আমার প্রথম বিসিএস ছিল ৩৪তম। ৩৪তম বিসিএসের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছিলাম। কিন্তু রেজাল্ট দিলে দেখা গেল যে, প্রিলি রিটেন ও ভাইভা পাশ করলে আমি কোনো ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়নি। আমি পিএসসি কর্তৃক নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হই। এটা ছিল আমার জন্য অনেক বড় দুঃসংবাদ। তবে ব্যর্থতার এই বিষাদই সফল হতে আমাকে তাড়না দিয়েছে।
আমার সংবাদ- জীবনের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা কী ছিলো?
গাজী মিজানুর রহমান- জীবনের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল সম্পূর্ণ বৈরী একটা পরিবেশে আমাকে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করতে হয়েছিল। কারণ, আমার আশেপাশের লোকজন সেইসময় খুব কমই পড়াশোনা করত। তারা ছিল পড়াশোনা সম্পূর্ণ উদাসীন। যারা পড়াশোনা করতো তাদের উপহাস করা হত। এমন একটি পরিবেশে আমাকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়েছিল।
আমার সংবাদ- কিভাবে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেছিলেন?
গাজী মিজানুর রহমান- যত বড় কাজ তত বেশি চ্যালেঞ্জ। মানুষ যখন একটা কাজ করতে যাবে তখন অবশ্য তাকে ঝুঁকি নিতে হবে। তবে আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা অনেক বেশি ভুগতে হয়। আমরা যখন নতুন কোন কাজ করতে যাই তখন নির্দিষ্ট একটা শ্রেনির সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। এখানে ইতিবাচক- নেতিবাচক দুইটা বিষয়ই থাকে। তবে এদের মধ্যে অনেকেই না বুঝে সমালোচনা করেন। আর বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো তো রয়েছে। আমি মনে করি, এ সমালোচনাকে মোকাবেলা করাটাই হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যেটা হচ্ছে নেতিবাচক মানুষগুলোকে ইতিবাচক ধারণায় নিয়ে আসা। মানুষের আলোচনা-সমালোচনার মাঝে ইতিবাচক বিষয়গুলো নিয়ে এগিয়ে যেতে পারলে সামনে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।
আমার সংবাদ- বিসিএস প্রস্তুতি কখন থেকে নেয়া উচিত বলে মনে করেন ?
গাজী মিজানুর রহমান- অনার্সে আমাদের যে বিশাল সময় থাকে তার তুলনায় এখানের সিলেবাস বা পড়াশোনা খুবই কম। এখানে যদি কেউ একাডেমিক পড়াশোনার বাইরে গবেষণা না করে অর্থাৎ কেউ যদি গবেষক না হয়ে ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবে তাহলে তার উচিত হবে অনার্সের শুরু থেকে অল্প অল্প করে চাকরি প্রস্তুতি শুরু করা। অনার্সের পরেই যেহেতু বিসিএসে আবেদন করা যায় সেক্ষেত্রে কেউ যদি আগে থেকে অল্প অল্প করে শুরু করে তাহলে সে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকবে। এখানে তাকে অবশ্যই একাডেমিক পড়াশোনাকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং পড়াশোনার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রাখতে হবে। একদিন মন চাইলে ১৬ ঘণ্টা পড়ে ফেললাম, এরপর এক সপ্তাহ আর পড়াশোনার খবর নেই; এমন হলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন এখন।
আমার সংবাদ- চাকরির পাশাপাশি বই লেখাতেও বেশ সরব দেখেছি আপনাকে। সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় বই সম্পর্কে জানতে চাই।
গাজী মিজানুর রহমান- এখন পর্যন্ত আমার লেখা ছয়টি বই প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে ‘ বিসিএস প্রিলিমিনারি এনালাইসিস’ ও “প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ এনালাইসিস বই দুটি সবচেয়ে বেশি পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে।
আমার সংবাদ- বিসিএস প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে বইয়ের সংখ্যা অনেক। পাঠকের কাছে আপনার বইয়ের আলাদা প্রয়োজনীয়তা কোথায় বলে মনে করেন?
গাজী মিজানুর রহমান- আমাদের বইগুলোর আলাদা কনসেপ্ট আছে। বইগুলোর মূল স্লোগান হচ্ছে ‘কম পড়বেন, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো গুছিয়ে পড়বেন’। এ স্লোগানের মধ্যে আমাদের বইগুলোর বিষয়ে মেসেজ রয়েছে। সবগুলো বইয়ের মূল কনসেপ্ট হলো এমন বিষয়গুলোই থাকবে যেগুলো পরীক্ষা উপযোগী। এসব টপিক্সগুলোকে একটা জায়গায় নিয়ে আসাই হলো আমাদের উদ্দেশ্য। এছাড়া যেসব টপিক্সে শিক্ষার্থীরা দুর্বল সেসব জায়গাগুলোতে আমাদের বইয়ে হাইলাইটস করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যদি অল্প সময়ের মধ্যে ভালো প্রস্তুতি নিতে চায় তাহলে আমাদের বইগুলো তাদের জন্য সহায়ক হবে। তবে কেউ যদি বিস্তারিত পড়তে চায়, তবে বাজারে তাদের জন্য অনেক বই রয়েছে, আমরা সেগুলো সব সময় সাজেস্ট করি।
আমার সংবাদ- লেখার ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন?
গাজী মিজানুর রহমান- বই লেখার ক্ষেত্রে আমি দুটি দিকের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেই। প্রথমত, অপ্রয়োজনীয় তথ্য যথাযথ পরিহার করা। অর্থাৎ, যেই প্রশ্নগুলো পরীক্ষায়
আসার মতো নয়, সেইগুলোকে বাদ দেয়। দ্বিতীয়ত, কঠিন বিষয়গুলোকে সহজভাবে যথাসম্ভব উপস্থাপন করা। যেন শিক্ষার্থীরা সহজে বিষয়গুলো রপ্ত করে ফেলতে পারে।
আমার সংবাদ- সামনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাই?
গাজী মিজানুর রহমান- আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমপ্রতি ‘শিক্ষক নিবন্ধন’ নিয়ে অনেক বড় একটি আগ্রহের জায়গা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বইটির কাজ একদম শেষের দিকে। অতি শীঘ্রই ‘শিক্ষক নিবন্ধন এনালাইসিস’ বই বাজারে আসবে বলে আশা রাখি, ইনশাআল্লাহ। অন্যদিকে আমাদের প্রথম দুই বইয়ের মধ্যে ইংরেজি সাইটটাতে শিক্ষার্থীরা খুব বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন। তারা বলছেন, ইংরেজির উপর সকল চাকরির প্রস্তুতি সহায়ক একটা পূর্ণাঙ্গ বই বের করতে। আমরা সেটা নিয়েও কাজ শুরু করেছি। শিক্ষার্থীদের জন্য ইংলিশ এনালাইসিস (বেসিক টু অ্যাডভান্সড)-ও বাজারে আসবে। এর বাইরে “ড্রিম ক্যারিয়ার স্কুল” নামে ক্যারিয়ারভিত্তিক একটি অনলাইন স্কুল প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ক্যারিয়ার বিষয়ক শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সারাদেশে ৬৪ জেলায় ও ৪৯৫টি উপজেলায় প্রথমবারের মতো আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি ক্যারিয়ার বিষয়ক বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ অলিম্পিয়াড “বাংলাদেশ ক্যারিয়ার অলিম্পিয়াড”।