Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

গণতান্ত্রিক মর্যাদাপূর্ণ বায়রা তৈরি করতে চাই

মুছা মল্লিক

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২, ০৭:১৭ পিএম


গণতান্ত্রিক মর্যাদাপূর্ণ বায়রা তৈরি করতে চাই

মোহাম্মাদ আবুল বাশার, দেশের জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম দিকপাল। জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি) বায়রার সফল সভাপতি। তিনি একাধারে বাশার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এর চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম মেম্বার। চৌকষ এই রাজনীতিবিদ আমার সংবাদের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে উন্মোচন করেছেন আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে সংকট, বায়রার ভেতর-বাইরের সিন্ডিকেট ও গতিশীল বায়রা বিনির্মাণে সামনের পরিকল্পনার বিচিত্র দিক। তার মুখোমুখি হয়েছিলেন আমার সংবাদের নিজস্ব প্রতিবেদক মুছা মল্লিক।

আমার সংবাদ: আপনাদের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী সিন্ডিকেট সমস্যার সমাধান অন্যতম। এ নিয়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: আমরা সদ্য নির্বাচনে জয়লাভ করেছি; খুব দ্রুত এসব সমস্যা নিয়ে কাজ শুরু করব। প্রায় ২৫ টি এজেন্সি মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিল। আমরা এই সিন্ডিকেটকে ভেঙ্গে সকলের ব্যবসা করার সুযোগ নিশ্চিত করতে দ্রুত কাজ শুরু করব। আমরা চাই সকল সদস্য নিয়ে একত্রে বায়রাকে সামনে এগিয়ে নিতে। অভ্যন্তরীণ কলহ ও ভেদাভেদ চাই না। গণতান্ত্রিকভাবে বায়রায় সকল সদস্যদের অবস্থান এক রাখতে বদ্ধপরিকর। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ‘লাইসেন্স যার ব্যবসা তার’ হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। এ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি। একইসাথে আমাদের যে সকল ভাইয়েরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় ব্যবসা করতে চায় তাদের এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহবান জানাই। নিয়ম অনুযায়ী তিন বছরের মাঝে দেশের বাইরে কিছু লোক পাঠাতে না পারলে তার লাইসেন্স নবায়ন করা সম্ভব নয়; তাই যার যার লাইসেন্স দিয়ে সে যেন ব্যবসা করতে পারেন সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। এছাড়া বিএমইটি ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে যে সহযোগিতা প্রয়োজন সেদিকেও খেয়াল রাখছি। আমরা একটি গণতান্ত্রিক মর্যাদাপূর্ণ বায়রা তৈরি করতে চাই। যেখানে সকলে মর্যাদার সাথে তাদের কাজ করতে পারবেন। বিগত দিনে সকলে যেভাবে পাশে থেকেছেন আগামীতেও থাকবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমরা চাই, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বায়রার মান ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে। গত ছয় বছরে আমরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও এ অসময়ের অন্ধকার কাটিয়ে সুদিনে পা দিতে পারি সেজন্য ইসি কমিটির সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকবে।

আমার সংবাদ: বায়রার সিন্ডিকেট নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। সভাপতি হিসেবে এ বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: বায়রার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভক্তি থাকতেই পারে। তবে নির্বাচন এখন শেষ; সুতরাং বিভক্তিও শেষ হবার কথা। আমার মনে হয় না কারো মনে এখন কষ্ট আছে। এবারের নির্বাচনে এক হাজার বিয়াল্লিশ সদস্য ভোট দিয়েছেন। বায়রার ইতিহাসে এবারই সর্বাধিক ভোট দিয়েছেন সদস্যরা। প্রায় ৯৭ শতাংশ ভোটার অংশ নেবার এমন নজির জাতীয় নির্বাচনেও দেখা যায় না। দীর্ঘ ছয় বছর বায়রায় সদস্যরা ভোট দেবার অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকার কারণে এবারে ভোটাররা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে ভোট দিয়েছে। একইসাথে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে এবারের নির্বাচনে ‘বায়রা সম্মিলিত ঐক্য পরিষদ’ নির্বাচিত হয়েছে। আমাদেরকে এমন আকুণ্ঠ সমর্থন দেয়ার কারণে বায়রার সকল সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সাধারণ ভোটাররা আমাদের প্রতি বিশ্বাস রেখেছেন। আমরাও নির্বাচনী ইশতেহার মোতাবেক আমাদের সকল প্রতিশ্রুতি রক্ষায় বদ্ধপরিকর। সকল সমালোচনার বেষ্টনী উপেক্ষা করে বায়রা তার নিজস্ব গতিতেই সামনে এগিয়ে যাবে।

আমার সংবাদ: মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার পর সবাই সমানভাবে লোক পাঠানোর সুযোগ পাবে কি?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: সৌদি আরব দীর্ঘ আট বছর বন্ধ ছিল। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর অনেক চেষ্টায় সেখানের শ্রমবাজার উন্মুক্ত করেছিলাম। এরই ধারাবাহিকতায় বায়রার প্রায় এক হাজারের বেশি সদস্য কাজ করতে পারছেন। আমি মনে করি, এটা আমার পূর্বের দায়িত্ব পালনকালের মাঝে অন্যতম অর্জন। বর্তমানে সৌদিতে যেমন সকলেই ব্যবসা করার সুযোগ পাচ্ছে; আগামীতে মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রেও একইরকম সুযোগ পাবে। বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ার সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে যারা মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে সক্ষম প্রতিষ্ঠান তারা যেন ‘ম্যান পাওয়ার ক্লিয়ারেন্স’ নিয়ে  তাদের লাইসেন্স গতিশীল রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে আমরাও সহযোগিতা করব।

আমার সংবাদ: বিদেশ ফেরত যাত্রীদের জন্য ‘হেল্প ডেস্ক’ প্রতিষ্ঠা করার কথা রয়েছে। এ সেবা চালু হলে কি কি সুবিধা পাবেন তারা?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: এই সুবিধার আওতায় নানামুখী সেবা পাবেন একজন কর্মী। বায়রা একটি আন্তর্জাতিক মানের সংগঠন হলেও কিছু সীমাবদ্ধতা নিশ্চয়ই রয়েছে। যে সকল কর্মীরা বিদেশে যাচ্ছে তাদের কল্যাণ ফান্ডে আগে দুইশত করে টাকা দেয়া হতো; কিন্তু এখন সে অংক সাড়ে তিন হাজারের উপরে। কেউ যদি বিদেশের মাটিতেই মৃত্যুবরণ করেন তাহলে তার লাশ দেশে আনা ও তার পরিবারকে এককালীন কিছু অর্থ সহায়তার জন্য এসব টাকা সরকারের কাছে জামানত রাখছি। এক্ষেত্রে সরকারেরও সমর্থন ও সহযোগিতা রয়েছে। এই সেবাকে আরও গতিশীল করতে এবং সেবা সহজীকরণে বায়রার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দেয়া যায় কিনা এমন বিষয় নিয়ে মন্ত্রী ও সচিবদের সাথে পরামর্শ হয়েছে। সকলের সহযোগিতা থাকলে আমরা আরও ভালো মানের সেবা দিতে পারবো বলে বিশ্বাস।

আমার সংবাদ: আগেও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অনেক কাজ নিশ্চয় অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। এবারে দায়িত্ব গ্রহনের পর পূর্বের এমন অসমাপ্ত কোন কাজে জোর দিবেন কিনা?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: বিগত দিনে যত অসমাপ্ত কাজ রয়েছে তার মাঝে আমাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, বায়রা পল্লী নির্মাণ ও মানব পাচার আইন অন্যতম। আমরা চেষ্টা করব সে কাজগুলো এই মেয়াদের মাঝেই শেষ করতে। প্রকৃতপক্ষে বায়রার কমিটির মেয়াদ দুই বছর হবার কারণে অনেক কাজই শেষ করা সম্ভব হয় না। কোন স্থাপনার কাজ শুরু করলেও দুই বছরেও শেষ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে এসব কাজ শেষ করতে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকায় দেখবেন এবারের বায়রাকে। একইসাথে বিগত কমিটিতে কেউ যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করে কিছু অংশ অসম্পূর্ণ থাকে তাহলে আমরা সে কাজগুলো শেষ করার ওপর জোর দিব।

আমার সংবাদ: প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে চাহিদামাফিক সহযোগিতা পাচ্ছেন কিনা? কোন বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পেলে আরও ভালো করা সম্ভব হবে?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: আমরা বাংলাদেশ থেকে যে জনশক্তি বিশ্ববাজারে রপ্তানি করছি এদের সিংহভাগই গ্রাম থেকে আসেন। গ্রাম থেকে আসায় অনেকেই লেখা, পড়া বা যোগাযোগ দক্ষতায়ও অনেক পিছিয়ে থাকেন। এটি বিশ্ববাজারে শ্রমিকের ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার সাথে অনেকটা চালেঞ্জিং। এক্ষেত্রে রেমিটেন্স যোদ্ধাদের দক্ষ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি এসব যোদ্ধাদের তৈরির কারিগর- লাইসেন্সধারী রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদেরও সহযোগিতা করতে হবে। এক্ষেত্রে বায়রার পাশে সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকা না থাকলে ভালো মানের যোদ্ধা তৈরি হবে না। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর অভিভাবক যেমন মন্ত্রনালয় তেমনি এসব রেমিটেন্স যোদ্ধাদের অভিভাবক মন্ত্রানলয়ের পাশাপাশি এজেন্সির মালিকরাও। সুতরাং রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মালিকদের সরকারের সমর্থন জরুরি। পাশাপাশি যে দেশগুলোতে বাংলাদেশি শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে সেসব দেশের দ্রুতাবাস আমাদের সহযোগিতা করলে সেসকল দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি সহজ হবে। এতে দেশে বেকারত্ব কমার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স আসায় দেশ পরিচালনায় সরকারের সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। সর্বোপরি সরকারের সহযোগিতা থাকলে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বায়রা।

আমার সংবাদ: রিক্রুটিং এজেন্সি ছাড়া সরাসরি লোক পাঠাতে চায় সরকার। এটা কিভাবে দেখছেন?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: সরকার যদি মনে রিক্রুটিং এজেন্সিকে পাশ কাটিয়ে তারা বাইরে লোক পাঠাবে এটা কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয়। কারণ এদেশে আমাদের এজেন্সিগুলো মাঠে কাজ করে; প্রচার প্রচারনা করে জনশক্তি রপ্তানিতে যে ভূমিকা নিতে পারে সরকার ইচ্ছা করলেই তা পারবে না। সরকার ইচ্ছা করলেই সেসব দেশে দিনের পর দিন থাকতে পারবে না। দিনের পর দিন বিভিন্ন কোম্পানির সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানে আসতে পারবে না। তাই এই সমস্যার সমাধান করতে হলে এজেন্সি মালিকদের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই। উদাহরণস্বরূপ, সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেন কে নিয়ে যখন আমি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করেছিলাম তখন তিনি প্লান্টেশনের লোক সরকারের পক্ষ থেকে দিতে চাইলেন। একইসাথে জি টু জি সাক্ষর করলেন। আমরা জি টু জি প্লাস সাক্ষর করতে বললেও তিনি সেদিকে গুরুত্ব দেননি। এ সাক্ষরের আওতায় তিনি তিন বছরে মাত্র নয়শত লোক প্রেরণ করতে পেরেছিলেন। কিন্তু এই দায়িত্ব যদি বায়রাকে দেয়া হতো তাহলে এই সময়ে আমরা প্রায় তিন থেকে পাঁচ লক্ষ লোক দেশের বাহিরে পাঠাতে সক্ষম ছিলাম। সুতরাং আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবস্থান শক্ত করতে বায়রার বিকল্প নেই।  

আমার সংবাদ: গত ডিসেম্বরে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে চুক্তি হলেও চাহিদা মাফিক শ্রমিক পাঠাতে পারছে না বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা কোথায়?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: এ প্রতিবন্ধকতা আমাদের অথবা বাংলাদেশ সরকারের নয়। চুক্তি অনুযায়ী মালয়েশিয়ার সরকার লাইসেন্স ঠিক করে কাজ দিবে। এক্ষেত্রে তারা সময় ক্ষেপণ করেছে। একইসাথে দেশটি কি করবে- কি করবে না এসব নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। তাছাড়া এই চুক্তিতে তারা অভ্যন্তরীণ সিন্ডিকেট করে লোক নিতে ইন্ধন যুগিয়েছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, তারা এ উদ্দেশ্যতে সফল হতে পারেনি। একই কারণে বাংলাদেশ সরকারও সহযোগিতা পায়নি। তবে আমরা যারা রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক তারা কখনোই সিন্ডিকেটের পক্ষে ছিলাম না; এখনো নাই। চোদ্দটি সোর্স কান্ট্রির মাঝে তেরটি দেশে এক নিয়ম এবং শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভিন্ন নিয়ম অনুসরণ করে লোক নেয়া হচ্ছে। যদি নেপাল, ইন্দোনেশিয়া বা বাকি সোর্স কান্ট্রি থেকে যেভাবে লোক নেয়া হচ্ছে বাংলাদেশেও একই নিয়মে লোক নেয়া হতো তাহলে এমইউ সাক্ষরের দিন থেকে আজ পর্যন্ত আমরা প্রায় চার থেকে পাঁচ লক্ষ লোক প্রেরণ করতে পারতাম। কিন্তু তারা আমাদের দেশের ওপর তাদের সুবিধা চেয়েছে বিধায় এখানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।

আমার সংবাদ: রিক্রুটিং এজেন্সির নতুন লাইসেন্স তালিকাভুক্ত ও নবায়ন নিয়ে বিভিন্ন জটিলতার কথা শোনা যায়। এ বিষয় নিয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন কিনা?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: বাংলাদেশ সরকার চায় বিপুল পরিমাণ জনশক্তি রপ্তানি করতে। বেকারত্ব দূর হোক। বেকারত্ব দূর করতে গেলে আমাদের রিক্রুটিং এজন্সি গুলোকে দ্রুতাবাসের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। দ্রুতাবাস যদি সহযোগিতা না করে তাহলে এ পথে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন দেশে শ্রমিকের বা এজেন্সিগুলোর দেখভালের জন্য দ্রুতাবাসই একমাত্র জায়গা।তারা যে বেতন পাচ্ছেন তাও এই শ্রমিকদেরই টাকা। তারা শ্রমিকদের থেকে বেতন নিবেন কিন্তু তাদের সহযোগিতা করবে না তা হতে পারে না। তবে নতুন লাইসেন্স এবং নবায়নে যে সহযোগিতা বায়রা থেকে করা সম্ভব তার সবকিছু করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

আমার সংবাদ: বায়রার একটি আচরণবিধি তৈরি করার কথা উঠেছিলো। সে উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাই?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: প্রথমেই মনে রাখতে হবে বায়রার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে হবে। নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন পক্ষের মত-দ্বিমত থাকবেই। কিন্তু এমন কিছু প্র্যাকটিস করা যাবে না যা বায়রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আমাদের ভাবমূর্তি আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। আমাদের সকলের আচরণ সহনশীল হলেই বায়রাকে আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব। তবে স্পেসিফিকভাবে আচরণ বিধিমালা নিয়ে সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আমার সংবাদ: বিশ্ব শ্রমবাজারে আমাদের দেশের শ্রমিকদের দক্ষতার অভাবের কথা শোনা যায়। এ নিয়ে কাজ করছেন কিনা?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: এ সমস্যা সমাধান করতে আমরা বায়রার পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। এ কেন্দের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে খুব দ্রুত আমাদের শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তি দেশের বাহিরে পাঠাতে পারবো। দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারলে আরও অধিক বৈদেশিক মুদ্রার পাশাপাশি দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।

আমার সংবাদ: বায়রার সদস্যদের নিয়ে একটি আবাসিক প্রকল্পের কথা রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাই?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: কাকরাইলে আমাদের একটি জায়গা রয়েছে। সেখানে বহুতল ভবন করে সকল সদস্যদের অফিস করার সুযোগ করতে চাই। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছি। এছাড়া বসুন্ধরাতে ১৬ বিঘা জমির ওপর বায়রা পল্লী নির্মাণ করতে পদক্ষেপ নিয়েছি। অল্প সময়ের মাঝেই সেখানে কাজ শুরু হবে। এ জায়গাতে বায়রার সকল সদস্য আবাসন সুবিধা পাবেন। একইসাথে এখানে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা স্থাপন করা হবে। এ কাজ আমি শেষ করে যেতে না পারলেও আমার পরবর্তীতে যারা দায়িত্ব নিবেন তারা নিশ্চয় এ স্বপ্ন নিবাস নির্মাণ করবেন।

আমার সংবাদ: আগামী দুই বছরে বায়রাকে কোথায় দেখতে চান?

মোহাম্মাদ আবুল বাশার: আগামী দুই বছরে সরকার ও বায়রার সকল সদস্যদের সহযোগিতা কাজে লাগাতে পারলে দেশের যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে একটি ভিন্ন মাত্রার গতিশীল সংগঠনে বায়রা রুপ দিতে চাই।

আমার সংবাদ: আমাদের সময় দেবার জন্য ধন্যবাদ। 
মোহাম্মাদ আবুল বাশার: আপনাকেও ধন্যবাদ। আমার সংবাদের জন্য শুভ কামনা।
 

Link copied!