পল্লবীতে শাহিন হত্যার পুনঃতদন্ত ২৮ মার্চ

রাজধানীর পল্লবীতে ব্যবসায়ী শাহিন উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম.এ আউয়ালসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৮ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি এদিন প্রতিবেদন দাখিল না করায় নতুন তারিখ ধার্য করেন আদালত। 

এর আগে গত ১৭ বছরের (২০২৩) সেপ্টেম্বর আদালতে মামলার সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে গেল ১৩ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে এ চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি দেন মামলার বাদী নিহত শাহিনের মা আকলিমা বেগম। আদালত তার নারাজির আবেদন মঞ্জুরপূর্বক জবানবন্দি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট  আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়ালসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে এ সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পুলিশের পরিদর্শক মনির হোসেন। 

মামলার চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- তাহের, সুপন বেপারী, মুরাদ, টিটি শেখ ওরফে টিটু, গোলাম কিবরিয়া খান, ইব্রাহিম সুমন ওরফে বাওয়া সুমন, শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক, রকি তালুকদার ওরফে রকি, নুর মোহাম্মদ হাসান মোতাইত, ইকবাল হোসেন ওরফে ইতবাল নুর, শরিফ, তৌরিকুল ইসলাম ওরফে ইমন, তুহিন মিয়া, হারুন অর রশীদ ওরফে হারুন ও প্রতীক আহম্মেদ সজীব।

তারও আগে ২০২২ সালের ১২ মে শাহিন হত্যায় ডিবি পুলিশের দেয়া প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে শাহিন উদ্দিনের মায়ের আগের নারাজির আবেদন গ্রহণ করেন আদালত। একই সঙ্গে পিবিআইকে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেন।

এর আগে ২০২২ সালের  ফেব্রুয়ারিতে এ মামলায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়ালসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন।

ডিবির দেয়া এ চার্জশিটের অন্য আসামিরা হলেন, সুমন ব্যাপারী, টিটু, কিবরিয়া, মুরাদ হোসেন, আবু তাহের, ইব্রাহিম সুমন, রকি তালুকদার, শফিকুল ইসলাম, তুহিন মিয়া, হারুন অর রশীদ, তারিকুল ইসলাম, নুর মোহাম্মদ, হাসান ও ইকবাল হোসেন। সুমন ও শফিকুল ছাড়া বাকি ১৩ আসামি কারাগারে। তাদের মধ্যে ৯ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০২১ সালের ১৬ মে শাহিন উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের পর ওই রাতেই নিহতের মা আকলিমা বেগম বাদী হয়ে পল্লবী থানায় সাবেক এমপি আউয়ালসহ ২০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

মামলায় এম এ আউয়ালকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন, সুমন, মো. আবু তাহের, মুরাদ, মানিক, মনির, শফিক, টিটু, কামরুল, কিবরিয়া, দিপু, আবদুর রাজ্জাক, মরন আলী, লিটন, আবুল, বাইট্যা বাবু, বড় শফিক, কালু ওরফে কালা বাবু, নাটা সুমন ও ইয়াবা বাবু।

মামলার এজাহারে আকলিমা বেগম বলেন, ২০২১ সালের ১৬ মে বিকেল ৪টার দিকে সুমন ও টিটু নামের দুই যুবক শাহিন উদ্দিনকে জমির বিরোধ মেটানো হবে জানিয়ে ফোন করে ডেকে নেন। শাহিন উদ্দিন মোটরসাইকেলে পল্লবীর ডি-ব্লকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে গেলে সুমন ও টিটুসহ ১৪ থেকে ১৫ জন মিলে তাকে টেনেহিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে যায়।

এ সময় শাহিন উদ্দিনের ৬ বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে ছিল। গ্যারেজে নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা। এরপর তাকে ওই গ্যারেজ থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে আবার কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

বিআরইউ