জুন ৮, ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অডিটোরিয়ামে ‘International Conference on Judiciary Across the Borders (21st Century Challenges and Experiences from the Himalayas and Beyond)’ শীর্ষক দুইদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (০৮ জুন) সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আয়োজন করেন।
আন্তর্জাতিক সম্মেলনটির প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি মাননীয় বিচারপতি জনাব ওবায়দুল হাসান মহোদয়। তিনি উক্ত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সভাপতির বক্তব্যে মাননীয় প্রধান বিচারপতি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভুটান ও নেপাল কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বাধীনতার স্বীকৃতিদানের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেন।
পিপলস জুডিশিয়ারি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি পিপলস জুডিশিয়ারি ধারণাটি এমন একটি ধারণা যা সংখ্যালঘুসহ সকল নাগরিকের সমান প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে এবং সংবিধান অনুযায়ী তাদের অধিকারগুলো রক্ষা করে।
তিনি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার মূল সমস্যা উল্লেখ করে তা থেকে উত্তরণের উপায় ব্যাখ্যা করিতে গিয়ে বলেন, বাংলাদেশের আদালত আজকে ৪ মিলিয়ন মামলার ভারে জর্জরিত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা রাউন্ড-ব্রেকিং টেকনোলজিকাল ইনোভেশন সিস্টেমর উপর ফোকাস করছি এবং মামলা নিষ্পত্তির জটিলতাগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা আধুনিকায়নে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি কক্সবাজারে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক জমি বরাদ্দের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আন্তর্জাতিক সম্মেলনটির প্রথম সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মাননীয় মন্ত্রী জনাব আনিসুল হক, এমপি।
মাননীয় মন্ত্রী বলেন, এই অধিবেশন দক্ষিণ এশিয়ার বিচারব্যবস্থার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম যা নিজেদের মধ্যে সংলাপে অন্তর্ভুক্ত হওয়া , ক্রস বর্ডার ঐক্য গড়ে তোলা এবং বৃহত্তর সহযোগিতার ভিত্তি স্থাপন করবে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং তা বাস্তবায়নে বদ্ধ পরিকর।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আর তাই দেশে আজ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভুটানের হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি জনাব লোবজাং রিনজিন ইয়ার্গে ( Mr. Justice Lobzang Rinzin Yargay)।
ভুটান হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি বলেন, ব্যক্তির মানবাধিকার রক্ষায় আইনের শাসনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের মূলভিত্তি।
তিনি বলেন, দুটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি যথা:
১. কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়।
২. সকলেই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী, বাস্তবায়ন করা নাহলে আইন ন্যায়বিচারের পরিবর্তে অবিচারের উৎস হয়ে উঠে।
তিনি তাঁর বক্তব্যে ভুটানের বিচার ব্যবস্থার অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি কর্তৃক এমন উদ্যোগের গুরুত্ব উপলব্ধি করে বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক “ International Conference on Judiciary Across the Borders ( 21st Century Challenges and Experiences from the Himalayas and Beyond )” শীর্ষক কর্মশালা এই অঞ্চলের বিচারব্যবস্থার চ্যালেঞ্জগুলো শেয়ার করার মাধ্যমে তা উত্তরণে সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতি জনাব মোঃ আশফাকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মোঃ জাকির হোসেন।
উক্ত বিশেষ অধিবেশনে আরো উপস্থিত ছিলেন- আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণ, হাইকোর্ট বিভাগের মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণ, প্রাক্তন মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয়গণ, আপিল বিভাগের প্রাক্তন মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণ, হাইকোর্ট বিভাগের প্রাক্তন মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণ, অ্যাটর্নি জেনারেল ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সম্পাদক, বিজ্ঞ আইনজীবীবৃন্দ এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তাবৃন্দ।
বিআরইউ