আমার সংবাদ ডেস্ক:
মার্চ ৯, ২০২৪, ০৪:৪৯ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক:
মার্চ ৯, ২০২৪, ০৪:৪৯ পিএম
দক্ষিণ এশিয়ার নেটিজেন মুসলিমরা রমজানে দিনব্যাপী রোজা রাখার পর তেলে ভাজা ইফতার খেতে বেশ পছন্দ করেন। তবে এরফলে অনেককেই পরিপাকতন্ত্রের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
যদিও ইফতারের কথা শুনলেই মনে পড়ে প্লেটভর্তি তেলে ভাজা পেঁয়াজু, বেগুনি, আলু-ডিম চপ, ছোলা, জিলাপি ও মুড়ির কথা। তবে কি রোজাদারের স্বাস্থ্যের পক্ষে এসব খাবার উপকারী?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার পর সন্ধ্যায় ইফতারিতে ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। ইফতারে ভাজাপোড়া থেকেও এড়িয়ে চলা উচিৎ।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন:
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা ইফতারে ভাজাপোড়া খাবার খাওয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করেন। তারা মনে করেন-
সারাদিন না খেয়ে থাকার পাশাপাশি ভ্যাপসা গরমের সময় ভাজাপোড়া খাবার রোজাদারের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। তাই ইফতারিতে ভাজাপোড়া খাবার না খেয়ে সবার আগে পানি খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত। রোজা রাখার কারণে রোজাদারের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। পানিশূন্যতার কারণে গলা শুকিয়ে আসা, প্রস্রাব কমে যাওয়া, ক্লান্ত হয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাবসহ একাধিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
ইফতারে অনেকে এক গ্লাস পানি একবারে খেয়ে থাকেন। কিন্তু এটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পানির পাশাপাশি আম, তরমুজ, বাঙ্গি, আনারস ও লিচুর মতো দেশীয় ফল খেলে সুস্থ থাকা যায়। বিশেষ করে রমজানে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বা ভিটামিন এ, সি ও ই এবং জিংকসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে কল্যাণকর। অন্যদিকে ভাজাপোড়া খাবার খেলে রয়েছে ডায়েবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ও পাকস্থলীর সমস্যাসহ একাধিক রোগের ঝুঁকি।
ডায়েবেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত রোগীদের অবশ্যই সাহরি ও ইফতারিতে দুধ, ওটস এবং বাদামের মতো হালকা খাবার খাওয়া উচিত। ভাজাপোড়া ও মিষ্টান্নজাতীয় খাবার শরীরে ক্যালরির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই যেসব খাবারে তেল ও শর্করাজাতীয় উপাদান থাকে সেসব খাবার পরিহার করাই শ্রেয়। একইভাবে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদেরও ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া উচিত নয়।
ভাজাপোড়া এড়িয়ে যা খাবেন:
স্বাস্থ্য সচেতনরা ইফতারে প্রতিদিন পানি, খেজুর ও ফলমূল খান। বিটা ক্যারোটিনসমৃদ্ধ খাবার গাজর, মিষ্টি আলু, বিট এবং জিংক ও প্রোটিনসমৃদ্ধ মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, বাদাম, ডাল, গমজাতীয় খাবার, ওটস খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়া ইফতারিতে আলাদাভাবে টকদই রাখা যেতে পারে। এটি শ্বাসযন্ত্র ও পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। অনেকে সালাদ, ছোলা এবং মুড়ির সঙ্গে টকদই খান।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইফতারে মুখরোচক ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া অস্বাস্থ্যকর। এসব খাবার খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই ভাজাপোড়া খাবার না খেয়ে ইফতারিতে সাধারণ খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।
অনেকে আদা, পুদিনা পাতা, ধনিয়া পাতা, লেবু, শসা, টমেটো একসঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে থাকেন। এসব খাবার শরীরে খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে।
ইফতারিতে অনেকের পাতলা খিচুড়ি ও হালিম খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। স্বাস্থ্যের জন্য এটি উপকারী। ইফতারের পর থেকে সেহরি পর্যন্ত কমপক্ষে আট থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন। ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত এ পুরো সময়ে চা, কফি, কোল্ডড্রিংকস না খাওয়াই ভালো। এতে পানিশূন্যতা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বিআরইউ