নিজস্ব প্রতিবেদক:
জানুয়ারি ১, ২০২৫, ১১:৩০ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জানুয়ারি ১, ২০২৫, ১১:৩০ এএম
শুরু হয়েছে নতুন বছর। বছরের শুরুতে নানা ধরনের পরিকল্পনা করা হয় আমাদের। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খরচ কমিয়ে সঞ্চয় করা। যাতে সঞ্চয়ের টাকা ভবিষ্যতে বা জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। এ নিয়ে নানা পরিকল্পনা থাকলেও খরচের লাগাম টেনে ধরা যায় না।
স্বাভাবিক কারণেই বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, ফোন ও ইন্টারনেট বিল, বাজার খরচ ও বিনোদনমূলক ব্যাপারে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থ খরচ হয়ে থাকে। এছাড়াও অনেক সময় বাজেটের থেকে বেশি খরচ হয়ে যায়। ফলে টাকা সঞ্চয় তো দূরের বিষয়, বরং আরও টানাপোড়েনে পড়তে হয়। খরচ কমিয়ে সঞ্চয়ের উপায় সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ফোর্বস ম্যাগাজিন। এবার তাহলে বছরের শুরুতেই সঞ্চয়ের উপায় সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
খরচের খাত নির্ধারণ: অর্থ সঞ্চয়ের প্রথম ধাপ হচ্ছে ব্যয়ের অভ্যাস সম্পর্কে জানা। মাসজুড়ে টাকা খরচ করার খাতগুলা সম্পর্কে আগে ভালো করে পর্যালোচনা করুন। কোনো খাতে কত টাকা ব্যয় করবেন, সেটি নির্ধারণ করুন। এতে বাড়তি বা অতিরিক্ত অর্থ খরচ হওয়া কমবে।
বাজেট তৈরি করা: অতিরিক্ত খরচ কমাতে চাইলে সঠিক বাজেট তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য মোট আয় থেকে মাসের শুরুতেই বাজেট তৈরি করতে হবে। সাধারণ বাজেটের ক্ষেত্রে প্রয়োজন এবং চাহিদার জন্য অর্থ বরাদ্দ রেখে প্রায় চাহিদার সম-পরিমাণ সঞ্চয়ের জন্য রাখার কথা বলা হয়। তবে শুরুতে কম সঞ্চয় দিয়েও সঞ্চয়ের অভ্যাস করা যায়।
অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো: দৈনন্দিন জীবনে জরুরি বা গুরুত্বপূর্ণ নয়, এমন পণ্য বা পরিষেবায় অর্থ ব্যয় করা এড়িয়ে চলুন। যা না হলেও আপনি দিব্যি ভালো চলতে পারেন, সেটি কেনার প্রয়োজন অনুভব করবেন না। এতে ভবিষ্যতে জরুরি প্রয়োজনে অর্থ সংকট দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অপ্রয়োজনীয়ভাবে ব্যয়বহুল মোবাইল ফোন বা প্রায়ই বাইরে ডিনারে যাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা বাদ দিতে পারেন। এতে এই অর্থ থেকে যাবে আপনার।
স্বয়ংক্রিয় সেভিংস অ্যাকাউন্ট সেট করা: সঞ্চয়ের লক্ষ্য থাকলে তাহলে একটি স্বয়ংক্রিয় সেভিংস অ্যাকাউন্ট সেট করে নিন। এতে নিজেরই সুবিধা। অনেক সময় কাজের চাপের কারণে মাসের শুরুতে সঞ্চয়ের অর্থ সরিয়ে রাখতে বা জমা করতে ভুলে যাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে যদি স্বয়ংক্রিয় সেভিংস অ্যাকাউন্ট সেট করা থাকে, তাহলে এ নিয়ে ভাবতে হয় না।
অপ্রয়োজনীয় সাবস্ক্রিপশন বাতিল করা: অনলাইন বা অফলাইনে কোনো সাবস্ক্রিপশন থাকলে তা নিয়মিত চেক করার অভ্যাস করতে হবে। যেসব সাকস্ক্রিপশন গত কয়েক মাস ধরে ব্যবহার করা হয় না ও বর্তমানে প্রয়োজন হচ্ছে না, সেসব বাতিল করুন। এতে অনায়াসেই দেখতে পাবেন ভালো পরিমাণ অর্থ থেকে যাবে পকেটে। যা সঞ্চয়ে যোগ করতে পারবেন।
ঋণ পরিশোধ করা: আপনার যদি ঋণ নেয়া থাকে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব তা পরিশোধ করুন। যদি ঋণ থাকে, এতে সঞ্চয়ের পরিবর্তে সুদ বা ঋণের জন্য বেশি অর্থ খরচ হবে আপনার। এ জন্য ঋণমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন।
অপ্রত্যাশিত আয় সঞ্চয় করা: আপনার নিয়মিত আয় থেকে করা নির্দিষ্ট বাজেট মূলত আপনার চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার জন্য যথেষ্ট হিসেবে রাখতে হবে। এরমধ্যে সঞ্চয় করতে পারা আপনার জন্য সুবিধাজনক কিংবা এগিয়ে থাকার সমান। তবে, এর বাইরে যদি অপ্রত্যাশিত কোনো আয় বা অর্থ আসে, যেমন আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের কাছ থেকে উপহার, বাসা বা হোস্টেল থেকে অতিরিক্ত আয়, তা সঞ্চয়ের অ্যাকাউন্টে রেখে দিন। এতে আপনারই সঞ্চয়ের পরিমাণ মোটা হবে।
জেনেরিক ব্র্যান্ড নির্বাচন: মাঝে মধ্যে এমন কিছু পণ্য কেনা হয়, যা অনেক নামিদামি ব্র্যান্ডের। অথচ একই পণ্য প্রায় সমপরিমাণ মানের নন-ব্র্যান্ডের পাওয়া যায় পাশের মুদি দোকানে। যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে এসব নন-ব্র্যান্ডের পণ্যগুলো ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এতে অর্থ অনেকটা কম খরচ হবে।
দুপুরের খাবার বাসা থেকে নেয়া: অফিস-আদালতে বা কর্মস্থলে দুপুরের খাবার অনেকেই বাইরে গিয়ে খেয়ে থাকেন। এতে প্রতিদিনই ভালো অঙ্কের অর্থ খরচ হয়। যা চাইলেই আপনি বন্ধ করতে পারেন। এ জন্য প্রতিদিন সকালে বাসা থেকে দুপুরের খাবার নিয়ে যেতে পারেন। এতে দুপুরের খাবারের টাকা পকেটে থেকে যাবে। এভাবে মাস শেষে ভালো পরিমাণ অর্থ আপনার অবিশষ্ট থাকবে। যা সঞ্চয়ের খাতায় যোগ করতে পারেন।
বিআরইউ