আমার সংবাদ ডেস্ক
জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০২:২২ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক
জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০২:২২ পিএম
শীতের কনকনে ঠান্ডায় অনেকেই ওজু ও ফরজ গোসলে সমস্যায় পড়ছেন।
বিশেষত যারা ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন। এ ধরনের পরিস্থিতিতে নিয়মিত গোসল করা তাদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
এমন অবস্থায় ইসলামের বিধান কী? কীভাবে তারা বাধ্যতামূলক (ফরজ) ওজু বা গোসল ছাড়াই সঠিকভাবে নামাজসহ অন্যান্য ইবাদত পালন করতে পারবেন?
ইসলামের দৃষ্টিতে, যদি শীতের তীব্রতায় ওজু বা গোসল করা কঠিন হয়ে পড়ে, তবে শরিয়তের নির্দেশনা অনুযায়ী গরম পানি ব্যবহার করা বা ওজুর বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তবে যদি গরম পানি ব্যবহারের কোনো উপায় না থাকে এবং ঠান্ডার কারণে পানি ব্যবহার বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, তখন তায়াম্মুম করা ইসলামে বৈধ এবং যথেষ্ট।
আরবে অন্তরীণ শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদের কাছে এক ব্যক্তি জানতে চেয়েছিল, ‘প্রচণ্ড শীতের দিনে গোসল ফরজ হলে আমি কি তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারি?
উল্লেখ্য, যে সরঞ্জামাদি থাকলে আমি অবিলম্বে পবিত্র হতে পারি সেগুলো আমার কাছে নেই। তাছাড়া আমি ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত; আমার পিঠ রোগাগ্রস্ত, আমাকে সাংঘাতিক কষ্ট দিচ্ছে।’
উত্তরে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, যে ব্যক্তির উপর গোসল ফরজ হয়েছে সে ব্যক্তি নামায পড়তে চাইলে তার উপর ফরয হচ্ছে, পানি দিয়ে গোসল করে নেওয়া। দলিল হচ্ছে- ‘আর তোমরা জুনুবি (অপবিত্র) হলে প্রকৃষ্টভাবে পবিত্রতা অর্জন করবে (সূরা মায়েদা, আয়াত: ৬)।
তাই কেউ যদি পানি ব্যবহারে অক্ষম হয়, পানি না-থাকার কারণে কিংবা পানি থাকলেও এর ব্যবহারে রোগের ক্ষতি হতে পারে কিংবা তীব্র ঠান্ডার কারণে (তার কাছে পানি গরম করার মত কিছু না থাকলে); তাহলে সে ব্যক্তি পানি দিয়ে গোসল করার পরিবর্তে মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করতে পারেন। এর দলিল হচ্ছে আল্লাহ্র বাণী: “আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ মলত্যাগ করে আসে বা তোমরা স্ত্রী সহবাস কর এবং পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৬)।
এ আয়াতে দলিল রয়েছে যে, অসুস্থ ব্যক্তি পানি ব্যবহার করার ফলে যদি তার মৃত্যু ঘটা, কিংবা রোগ বেড়ে যাওয়া কিংবা আরোগ্য লাভ বিলম্ব হওয়ার আশংকা থাকে সেক্ষেত্রে তিনি তায়াম্মুম করবেন। আল্লাহ্ তাআলা তায়াম্মুমের পদ্ধতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘তা দ্বারা মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করবে (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৬)।
আমর বিন আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘জুতুস সালাসিল’-এর অভিযানে এক ঠান্ডার রাতে আমার স্বপ্নদোষ হয়ে গেল। আমি আশঙ্কা করলাম, আমি যদি গোসল করি তাহলে ধ্বংস হয়ে যাব। তাই আমি তায়াম্মুম করলাম। এরপর আমার সাথিদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করলাম। আমার সাথিরা বিষয়টি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেন, হে আমর! তুমি কি জুনুবি (গোসল ফরজ হওয়া) অবস্থায় তোমার সাথিদের নিয়ে নামাজ পড়েছ? তখন আমি তাকে জানালাম কী কারণে আমি গোসল করিনি এবং আমি আরও বললাম, আমি শুনেছি আল্লাহ্ বলেন: ‘তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের প্রতি দয়ালু (সূরা নিসা, আয়াত: ২৯)। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হেসে দিলেন, কোন কিছু বললেন না।
শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায (রহ.) বলেন, যদি আপনার পক্ষে গরম পানি সংগ্রহ করা সম্ভব হয় কিংবা আপনি গরম করতে পারেন কিংবা প্রতিবেশী বা অন্য কারো থেকে কিনে নিতে পারেন তাহলে সেটা করা আপনার উপর আবশ্যকীয়। কেননা আল্লাহ্ বলেন, ‘তোমরা সাধ্যানুযায়ী আল্লাহ্কে ভয় করো (সুরা তাগাবুন, আয়াত: ১৬)। তাই আপনার কর্তব্য হচ্ছে ।
তথ্য সূত্র : ইমাম বাতায়ন
ইএইচ