নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম
শিক্ষকতা ও সংসার সামলেও উদ্যোক্তার খাতায় নাম লিখিয়েছেন নারী উদ্যোক্তা ফাতেমা আক্তার সোনিয়া। `হোমমেড আচার` তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আচার রাণী নামে পরিচিতি পেয়েছেন এই নারী উদ্যোক্তা। ফাতেমার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘রুবাইয়ার রুপকথা আচার বাড়ি’। এই নামেই ফেসবুক পেইজ খুলে শুরু করেন আচার বিক্রি। হরেক রকমের সে আচার মুগ্ধ করেছে দেশের বাইরে থাকা প্রবাসী রসনাপ্রিয়দেরও।
ছোটকাল থেকেই রান্নার কাজ ছিলো তার অন্যতম পছন্দ। কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই নতুন-নতুন রেসিপি বানিয়ে তাক লাগাতেন পরিবারের সদস্যদের।
এর মধ্যেই ২০২৩ সালে অগোছালোভাবে যাত্রা শুরু করেন `রুবাইয়ার রূপকথা` নামে একটি অনলাইন বিজনেস। ব্যবসার প্রথম দিনে মায়ের পছন্দ করা খাবার `খুদের ভাত ও সঙ্গে ৫ রকমের ভর্তা` বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করেন `৪ বক্স` খাবার। এরপর সব রকমের শুঁটকি ভর্তা, পুডিং, পায়েসসহ `পোলাও রোস্ট ও ডিম` সেট মেন্যু করে খাবার অর্ডার নেওয়া শুরু করেন। এতেও ব্যাপক সাড়া পান তিনি। তখনো তিনি বুঝতে পারেননি শখের বশে শুরু করা কাজ এক দিন নেশা ও পেশায় পরিণত হবে।
এক সময়ের শখের বসে আচার বানানো শুরু করলেও এখন তার বানানো আচার দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সিঙ্গাপুর, মিশর, সৌদি আরব, ইতালি, মালয়েশিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পৌঁছে যাচ্ছে। নিয়মিতই বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীরা নিচ্ছেন তার আচার। তার পেইজে দেখা যায় জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আঁখি আলমগীরসহ বিভিন্ন সুপরিচিত ব্যক্তিদের রিভিউ।
ফাতেমা আক্তার সোনিয়া জানান, শুরুর দিকে নির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা ছিলো না। হুটহাট সিদ্ধান্তেই এই ব্যবসায় আসা। এখন লক্ষ্য একটাই `রুবাইয়ার রূপকথা` পেজকে সামনে রেখে দেশ ও দেশের বাহিরের সুনাম অর্জন রক্ষা করা।
বর্তমানে তার তৈরি গরুর মাংস, আলু বোখারা, রসুন, কালোজিরা, তেঁতুল, আমড়া, জলপাই, লেবু, নাগা মরিচ, কাঁচা মরিচ, আমলকি, বরই, আমের কাশ্মিরি, টক ঝাল মিষ্টি, টক ঝালসহ প্রায় ২৫ রকমের আচার পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ডায়বেটিস, হাই-প্রেসার রোগীদের জন্য চিনি ছাড়া আচারের ব্যবস্থা রয়েছে। নিজের অদম্য ইচ্ছা ও মানসিক শক্তির জোরে তিন সন্তানের এই জননী সংসার সামলানোর পাশাপাশি শিক্ষকতা করছেন, সমানতালে সামলাচ্ছেন নিজের ব্যবসাও।
তিনি জানান, তিনি নিজেই এসব আচার তৈরি করে থাকেন। এর জন্য আলাদা কোনো লোক নেই। তবে, কুরিয়ারসহ বাহিরের কাজে তার স্বামী সহযোগিতা করে থাকেন।
ক্রেতা,বন্ধু ও আত্মীয়দের উৎসাহেই বেশি সাহস পান ফাতেমা আক্তার সোনিয়া। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী অনেক সাপোর্টিভ। তার সহযোগিতায় আমি ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পেরেছি। এছাড়া বন্ধু,আত্মীয়স্বজনরাও উৎসাহ দেন। সবচেয়ে বড় উৎসাহ পাই ক্রেতাদের থেকে। যারা আচার কিনেছে,সবাই প্রশংসা করেছে।
তাদের মাধ্যমে তাদের পরিচিতজনেরা আমার তৈরি আচার সম্পর্কে জেনেছে,তারাও ক্রয় করেছে। এভাবেই ব্যবসার পরিধি বাড়ছে। বিভিন্ন সুপার শপেও রাখা হচ্ছে আমার আচার। এগুলো দেখে আমার কাজের প্রতি ভালোলাগা আরো বেড়ে যায়।"
ভবিষ্যতে `রুবাইয়ার রূপকথা` নিয়ে অনেক দূর যেতে চান জানিয়ে সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে দোয়া চেয়েছেন ফাতেমা আক্তার সোনিয়া।
আরএস