নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ০৬:৫০ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ০৬:৫০ পিএম
গাছে গাছে ফুলের সুভাসে জানান দিচ্ছে বসন্ত এলো বলে। কোকিলের মিষ্টি মধুর গানে আগমনী গান গেয়ে তাকে স্বাগত জানাচ্ছে। তাই কবির ভাষায়- ফুল ফুটোক আর নাই ফুটোক আজ বসন্ত। কাজী নজরুল ইসলাম বসন্তের আগমনীতে গেয়েছেন- ‘বসন্ত এলো এলো এলো রে, পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহরে মুহু মুহু কুহু কুহু তানে।’ বসন্ত মানেই প্রতিটি মনে নতুনত্বের ছোঁয়া। বিশেষ করে তরুনরা মেতে উঠে বাসন্তি উৎসবে।
গায়ে হলুদ জামা, হাতে ফুলের গুচ্ছ নিয়ে বসন্তকে বরণ করতে মেতে উঠে তারা। বসন্ত নিয়ে আমাদের মাঝে আমেজ থাকলেও তার ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই। কিভাবে আসলো আজকের এই বসন্ত উৎসব। কবে থেকে পালিত হচ্ছে বসন্ত। তার কিছুই অধিকাংশ মানুষের জানা নেই। অথচ ৬২৩ বছর ধরে পালিত হচ্ছে বাঙালির প্রাণের উৎসব বসন্ত। যাকে কেন্দ্র করে আয়োজনের করা হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের।
পহেলা ফাল্গুন বা বসন্ত উৎসব কেবল উৎসবে মেতে ওঠার বিষয় নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার গৌরবময় ইতিকহাস ও ঐতিহ্য। সে ঐতিহ্যের ইতিহাসকে ধরে রাখতে পারলেই বসন্ত উৎসবের সঙ্গে সঙ্গে নতুন প্রজন্ম ছড়িয়ে দিতে পারবে বাঙালি চেতনাকে। বাংলা পঞ্জিকা বর্ষের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিনকে বাঙালি পালন করে ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’ হিসেবে। বাঙালির নিজস্ব সার্বজনীন প্রাণের এ উৎসব এখন গোটা বাঙালির কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে।
বাংলায় বসন্ত উৎসব এখন প্রাণের উৎসবে পরিণত হলেও এর শুরুর একটা ঐতিহ্যময় ইতিহাস আছে। ১৫৮৫ সালে সম্রাট আকবর বাংলা বর্ষপঞ্জি হিসেবে আকবরি সন বা ফসলী সনের প্রবর্তন করেন। নতুন বছরকে কেন্দ্র করে ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেন তিনি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বসন্ত উৎসব। তখন অবশ্য ঋতুর নাম এবং উৎসবের ধরনটা এখনকার মতো ছিল না। তখনকার আর এখনকার ফালগুনের এই উৎসব একদম ভিন্ন। গ্রামে গ্রামে যে আয়োজন হতো তাতে আতিসাজ্যের কোনো সুযোগ ছিল না।
প্রাচীন আমল থেকেই এদেশে পহেলা ফাল্গুন পালন করা হতো। হিন্দুদের পৌরাণিক উপাখ্যান ও লোককথাগুলোতে এই উৎসবের উল্লেখ পাওয়া যায়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় থেকেই পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্তোৎসব পালন করার রীতি চলে আসছে।
বাংলাদেশে বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদ্যাপনের রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে। এ ছাড়া তরুণ-তরুণীরা বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শাহবাগ, চারুকলা চত্বর, পাবলিক লাইব্রেরি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ধানমণ্ডি লেক, বলধা গার্ডেনসহ নানা জায়গায় আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নেয় সারাদিন।
এইচআর