Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪,

বইমেলায় এসেছে সরোজ মেহেদীর ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম


বইমেলায় এসেছে সরোজ মেহেদীর ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’

এবারের অমর একুশে বইমেলায় এসেছে সাহিত্যিক ও গবেষক সরোজ মেহেদীর লেখা বই ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’। কোভিড-১৯ মহামারিকালে ভারতে যাপিত জীবন এবং সেখান থেকে দেশে ফেরার পথে দেখা নানান অঘটন-ঘটনা, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন জীবন যাপন ও এসবের ওপর নিজের পর্যবেক্ষণ নিয়ে বইটির পাণ্ডুলিপি সাজিয়েছেন লেখক।

মোস্তাফিজ কারিগরের নজরকাড়া প্রচ্ছদে বইটি প্রকাশ করেছে রাজধানীর শাহবাগের উৎস প্রকাশন। এটি বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬০, ৩৬১, ৩৬২ নম্বর স্টলে মিলবে। এছাড়া শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে উৎস প্রকাশনে, রকমারিসহ অনলাইন বিপণন প্ল্যাটফর্মগুলোতেও পাওয়া যাবে বইটি।

পেশায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হলেও সরোজ মেহেদীর মন-মনন সাহিত্যেই আবিষ্ট। এ প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, ‘আমি লিখি লেখার প্রতি টান অনুভব করি বলে। তবে নিজের লেখা নিয়ে কোনো দাবি নেই। কেউ পড়লে খুশি, না পড়লেও খুশি। খুব ভালো লেখার প্রতিভা নিয়ে জন্মেছি বলে কখনো মনে হয় না। বাংলা ভাষাটাও ঠিকঠাক জানি তা না। তবে নিজে যা বুঝি, যা অনুভব করি, যা দেখি তা নিজের মতো করে বলার জন্য হলেও লিখতে চাই-এই হলো কথা। আমার কাঁচা হাতের বাংলা তাই আর বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। ভেতর থেকে কে যেন বলে- রাখো তোমার দুর্বলতা। লেখো, লেখো। তোমার দুর্বল লেখা থেকে উপাদান নিয়েই হয়ত কেউ একজন মারাত্মক সব সবল লেখা লিখবে। সেই লেখায় তুমি ছায়া হয়ে জাজ্বল্যমান থাকবে।’

‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’ প্রসঙ্গে সরোজ মেহেদী বলেন, “শিক্ষার টানে ২০১৯ সালে ভারতের চন্ডিগড়ে যেতে হয়েছিল। সেখানে যাপিত জীবন, এর মধ্যে ভারত-বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারির হানা, ওই দুঃসময়ে দেশে ফেরার সময় নানা সুখকর-অসুখকর ঘটনার অভিজ্ঞতা লিখতে শুরু করি। সেসব ঘটনা, নিজের কিছু পর্যবেক্ষণ নিয়ে দাঁড়িয়েছে ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’ বইটি।”

এই সাহিত্যিক বলেন, “প্রতিটা পাতায় পাতায় যেন মাতৃত্বের মমতা জড়ানো। যে লেখে কেবল সেই বুঝে ‘লেখক জীবন’ তার ‘ব্যক্তিজীবন’র কতটা শত্রু। লেখার নেশা একজন মানুষকে নানাভাবে তার চারপাশের বিত্ত-বৈভব, বৈষয়িকতায় যোজন যোজন পিছিয়ে দেয়। তবু বেঁচে থাকলে কেবল লিখে যেতে চাই। জীবন নিয়ে এর চেয়ে বেশি আর কোনো উচ্চাশা নেই।”

সাহিত্যিক সরোজ মেহেদী বর্তমানে গ্রিন ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগের শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর।

গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেওয়ার আগে সরোজ মেহেদী সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। শিক্ষকতার অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের তুর্কি ভাষা বিভাগে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসেও (বিউপি) খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেছেন তিনি।

সাংবাদিকতা ছেড়ে শিক্ষকতাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া সরোজ মেহেদী এখনো বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লেখেন। দেশে-বিদেশে নানা কাজের সঙ্গেও যুক্ত তিনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সংবাদিকতায় স্নাতক করা মেহেদী তুরস্ক সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে ২০১৪ সালে দেশটিতে পাড়ি জমান। তিনি ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মাস্টার্স রিসার্চ প্রোগ্রাম ইন ব্যাসিক জার্নালিজমে’ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। ২০১৮ সালে দেশে ফিরে এসে শিক্ষকতা শুরু করেন।

এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে পেপার প্রেজেন্ট করেছেন মেহেদী। যোগ দিয়েছেন বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সামার স্কুল, ট্রেনিং প্রোগ্রাম, ইয়ুথ ক্যাম্প প্রভৃতিতে। আমন্ত্রিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ডসহ ২০টিরও বেশি দেশ থেকে। জার্মানি, বেলজিয়াম, হাঙ্গেরি, ইউক্রেন, মলদোবা, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, মালয়েশিয়াসহ বেশ কিছু দেশ ভ্রমণ করেছেন এ তরুণ।  

২০১৯ সালে জার্মানি থেকে তুর্কি  ভাষায় সরোজ মেহেদীর গবেষণা গ্রন্থ ‘পলিটিক্যাল ইউজ অব মিডিয়া ইন সাউথ এশিয়া: বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডিয়া পারসপেকটিভ’ প্রকাশিত হয়। আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা ইনস্টিটিউটের প্রকল্পের আওতায় ‘বাংলা-ইংরেজি-তুর্কি’ ভাষায় একটি পকেট অভিধান লিখেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ছাত্রজীবনে লেখক সরোজ মেহেদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

আরএস

Link copied!