পরিচয়টা করোনা মহামারির সময়। মাধ্যমটা ছিলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এরপর কেটে গেছে প্রায় আড়াই বছর। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিয়ে করে একসঙ্গে ঘর বাঁধবেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় ধর্ম। সেটিও অতিক্রম করেছেন তারা। অবশেষে স্বপ্নপূরণ হয়েছে বাংলাদেশি মেয়ে ফৌজিয়া হাসান অনন্যা এবং ইতালিয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের ছেলে রোডোল্ফো আন্তোনিও পেজের।
ভালোবাসার টানে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ছেলে বা মেয়ে আসা এখন মামুলি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ দিন যত সামনে গড়াচ্ছে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ছেলে-মেয়ে আসার ঘটনা ততই বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার এমন আরও একটি ঘটনা ঘটল বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের মায়ামি শহর থেকে উড়ে এসে ধর্মান্তরিত হয়ে বাংলাদেশি মেয়েকে বিয়ে করেছেন রোডোল্ফো।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরের একটি রেস্টুরেন্টে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়েতে ছেলের পরিবারের কেউ না থাকলেও কনের পরিবারের সবাই উপস্থিত ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের মেয়ে ফৌজিয়া হাসান অনন্যার বেড়ে ওঠা ঢাকার রামপুরায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছরই স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। অন্যদিকে ছেলে রোডোল্ফো আন্তোনিও পেজ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের মায়ামিতে থাকেন। সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। তার বাবা রোডোল্ফো পেজ ও মা ভিওনেট্টি পেজ। তারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাদের আদিনিবাস ইতালিতে।
অনন্যার বাবা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা চেয়েছি মেয়ে ও ছেলের শান্তি। ছেলে খ্রিস্টান হওয়ায় আমাদের আপত্তি ছিল। কিন্তু তারা নিজেরা এটি মিটিয়ে ফেলেছে। ছেলে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে। আমি বিয়ের বিষয়ে ছেলের বাবা ও মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের এ বিয়েতে কোনো আপত্তি নেই। ছেলের বাবা অসুস্থ থাকায় বাংলাদেশে আসতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, বিয়েতে ২০ লাখ টাকা কাবিন হয়েছে। ৩ লাখ টাকা উসুল হয়েছে। ছেলে আগামী ৬ আগস্ট ঢাকা ত্যাগ করবে এবং আগামী ছয় মাসের মধ্যে আমার মেয়েকে সেখানে নিয়ে যাবে।
পারিবারিক সূত্রে আরও জানা গেছে, রোডোল্ফো আন্তোনিও পেজ গত ২৭ জুলাই সকাল ৬টায় একটি ফ্লাইটে ঢাকায় এসে পৌঁছান। এরপর বনানীর একটি হোটেলে ওঠেন। ২৮ জুলাই সকালে মেয়ের বাসায় যান এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়। গতকাল বিকেলে রামপুরায় একটি রেস্টুরেন্টে রোডোল্ফো আন্তোনিও পেজ খ্রিস্টান ধর্ম থেকে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার নতুন নাম আহমেদ ফয়সাল। তবে আইনি জটিলতায় এখনই নাম পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি। পুরো বিষয়টি নোটারি করা হয়েছে। পরে সে দিন সন্ধ্যায় অনন্যা ও পেজের গায়ে হলুদ এবং কাবিন হয়। শুক্রবার (২৯ জুলাই) হয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠান।
কেএস