রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় পুলিশ হেফাজতে রুম্মন শেখ নামে এক হাজতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যা সোয়া ৬টা লাগাত ময়নাতন্ত শেষ হলেও মর্গের সামনে মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে চলছে জটিলতা।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আজিমুল হক জানান, হাতিরঝিল থানায় সুমন শেখ নামে এক আসামির আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল রাতে দায়িত্বে থাকা ডিউটি অফিসার হেমায়েত হোসেন ও সেন্ট্রি মো. জাকারিয়াকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে থানায় ওই আসামির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শনিবার (২০) বিকেলে বিক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসী থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন।
সুমনের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলায়। তার বাবার নাম পিয়ার আলী। তিনি তার স্ত্রী ও ১০ বছরের এক ছেলেকে নিয়ে রামপুরায় থাকতেন।
নিহতের স্ত্রী জান্নাত অভিযোগ করেন, ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছিল পুলিশ। গতকাল রাতে বাদীর মাধ্যমে সে টাকা চাওয়া হয়েছিল। তিনি আরও জানান, সকাল ১০ টা নাগাদ থানায় গেলে তাদেরকে আদালতে যাওয়ার কথা বলে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। আদালত থেকে ফিরে এসে তারা জানতে পারেন, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় হাজতেই মারা গেছেন রুম্মান।
জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বিকেলে সুমন শেখকে রামপুরার ওয়াপদা রোডের ভাড়া ভাসা থেকে চুরির মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে তিনি তার পরনের ট্রাউজার খুলে আত্মহত্যা করেন। সকালে বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
সুমনের স্বজন সোহেল আহমেদ জানান, সুমন পিউরিট নামে একটি প্রতিষ্ঠানে পানির ফিল্টার বিক্রির কাজ করতেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ৫৫ লাখ টাকা চুরির অভিযোগ তোলা হয়। সেই সময় তার কাছ থেকে ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকাও পান পিউরিট কোম্পানির লোকজন। পরে মামলা করে কর্তৃপক্ষ। সেই মামলাটি হয় দুই থেকে তিন আগে।
সেই মামলায় হাতিরঝিল থানা পুলিশ শুক্রবার বিকেলে তাকে রামপুরার ভাড়া বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে তিনটার দিকে তিনি তার পরনের ট্রাউজার খুলেন এবং আত্মহত্যা করেন। পরে তারা থানা থেকে খবর পেয়ে ছুটে যান এবং সুমনের আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হতে থানা হাজতের সিসি ফুটেজে দেখেন। তবে এ ঘটনায় সেখানে পুলিশ দায়িত্বে অবহেলা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ইএফ