নিরাপদ সড়ক চাই-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ যে ডাটা দেয় তা সঠিক নয়। তাদের ডাটা হলো এফআইআর রোড ক্রাস ডাটা। পুলিশের ডাটা কে সরকার এমনভাবে নেয় যার কারনে সড়ক নিরাপত্তা যেমনটা হওয়া দরকার তা হয় না। ফলে সঠিক পরিকল্পনা নেয়া সম্ভব হয়না।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ পাস হলেও এর বাস্তবায়ন বিধিমালা এখনো তৈরি হয়নি। এটি বাস্তবায়নে একটি গোষ্ঠীর বাধা রয়েছে।
শনিবার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে রোড সেইফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ- এর উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানে তিনি এইসব কথা বলেন।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সড়কে মৃত্যু মিছিল বেড়েই চলছে। সড়কে শৃংখলা কার্যকর করার জন্য আইনটির বাস্তবায়ন জরুরি। তাই রোড সেইফ্টি কোয়ালিশনের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছি, সড়ক পরিবহন বিধিমালা দ্রুত জারি ও বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের।
কোয়ালিশন সদস্য সংস্থা নিরাপদ সড়ক চাই-এর প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ যে ডাটা দেয় তা সঠিক নয়। তাদের ডাটা হলো এফআইআর রোড ক্রাস ডাটা। পুলিশের ডাটা কে সরকার এমনভাবে নেয় যার কারনে সড়ক নিরাপত্তা যেমনটা হওয়া দরকার তা হয় না। ফলে সঠিক পরিকল্পনা নেয়া সম্ভব হয় না। পুলিশের ডাটা অনুযায়ী আমাদের রোড সেফটির দরকারই হয়না। সারা পৃথিবীর মধ্যে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাই। অথচ বাস্তবতা ভিন্ন। জাতিসংঘের যে ডাটাটি দিচ্ছে সেটিই সঠিক ডাটা। সেই ডাটা ধরেই আমরা কাজ করছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতিবছরই সরকারকে অনুরোধ করছি তারা যেন সঠিক একটি ডাটা দেয়। কিন্তু সেটি করা হচ্ছে না। ডাটা একটি বড় ব্যাপার। কেন দুর্ঘটনা হচ্ছে, কি কারনে হচ্ছে, কত লোক মারা যাচ্ছেন, কত আহত হচ্ছে তার সঠিক তথ্য না থাকলে আমরা সঠিক পরিকল্পনা করতে পারবো না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্র্যাকের রোড সেইফটি প্রোগ্রাম (প্রজেক্ট) ম্যানেজার এম. খালিদ মামুন।
সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন সময়ে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যার মধ্যে অন্যতম হলো সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ প্রণয়ন। এই আইনের কিছু সবল দিক থাকলেও এর সীমাবদ্ধতা রয়েছে প্রচুর। যার মধ্যে অন্যতম হলো- আইনটিতে হেলমেট পরিধানের বাধ্যবাধকতা থাকলেও এর মানদন্ড ও ব্যবহারবিধি আইনে অনুপস্থিত। আইনে গতিসীমা লঙ্ঘনে শাস্তির বিধান বর্ণিত থাকলেও গতিসীমা নির্ধারণ, এর বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের নির্দেশনা ও গাইডলাইন সন্নিবেশিত হয়নি-যা বাস্তবায়ন অযোগ্য। এছাড়া যাত্রীদের সিটবেল্ট ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা ও শিশুদের ক্ষেত্রে চাইল্ড রেস্ট্রেইন্ট বা শিশুদের জন্য নিরাপদ বা সুরক্ষিত আসন ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা আইনটিতে সংযোজন করা হয়নি।
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা বিশ্বব্যাপী মানুষের নিহত ও আহত হবার অন্যতম প্রধান কারণ। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে জাতিসংঘের উদ্যোগসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ কমানোর জন্য টেকসই উন্নয়ন (SDG) ৩.৬ অর্জনের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করা এবং `গ্লোবাল প্ল্যান ফর সেকেন্ড ডিকেড অব অ্যাকশন ফর রোড সেইফটি ২০২১-২০৩০` নিশ্চিত করতে কার্যকর কর্মপন্থা নির্ধারণ করে সেগুলো বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা ।
কোয়ালিশন সদস্য সংস্থা নিরাপদ সড়ক চাই-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে কোয়ালিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হোম এ্যাডভোকেসী ইনকিবিউটরের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর ড. শরিফুল আলম, কোয়ালিশনের সদস্য সংস্থার পক্ষ থেকে ব্র্যাকের রোড সেইফটি প্রোগ্রাম পরিচালক আহমেদ নাজমুল কারদন, বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিচার্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. হাদিউজ্জামান, বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুল নেওয়াজ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া, সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)`র পরিচালক ড. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও আকাশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ, বিএনএনআরসি`র প্রধান নির্বাহী এএইচএম বজলুর রহমান, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মিডিয়া, কো অডিনেটর রেজওয়ান নধীন, ইমপ্রেসিভ কমিউনিকেশনস লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসিবুজ্জামান প্রমুখ।
ইএফ