গেস্ট রুমে আসতে দেরি হওয়ায় এক সাংবাদিককে বেধড়ক মারধর করেছে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কয়েজন কর্মী।
বুধবার রাতে ঢাকা কলেজের শহিদ মো. ফরহাদ ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে। ওই সাংবাদিকের নাম ফয়সাল আহমেদ। তিনি ডেইলি বাংলাদেশ ও প্রতিদিনের ক্যাম্পাসের ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি। ফয়সাল ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ ও শহিদ ফরহাদ ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী।
জানা যায়, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের ৩০ সেপ্টেম্বরের কর্মীসভা বাস্তবায়ন করতে আবাসিক সবাইকে গেস্টরুমে ডাকে ঢাকা কলেজের শহিদ ফরহাদ ছাত্রাবাসের ছাত্রলীগ কর্মীরা। রিডিং রুমে থাকায় গেস্টরুমে যেতে দেরি হয় ফয়সালের। উপস্থিত হতে দেরি হওয়ায় রাত সোয়া বারোটার দিকে ফয়সালকে ধরে নিয়ে চর-থাপ্পর মারতে থাকে হলের ছাত্রলীগ নেতা আল আমিন, লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে সজিব আহমেদ এবং বালিশ দিয়ে চেপে ধরে মারতে থাকে ইকরাম। এতে ওই সাংবাদিকের ঠোঁট ফেটে যায়। কানেও প্রচন্ড ব্যথা পায়।
এ সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে ছাত্রলীগ নেতারা বলতে থাকেন, ‘হলে থাকলে কিসের সাংবাদিকতা, সাংবাদিকতা করতে হলে হলের বাইরে গিয়ে কর, সাংবাদিক বলে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম করবা না, তা চলবে না।’ মারধরকারীরা সকলেই অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের বলে জানা গেছে। প্রায় দুই ঘণ্টারা বেশি সময় আটক রাখা হয় তাকে।
এ বিষয়ে ফরহাদ হোসেন হলের সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতা খায়রুল হাসু বলেন, বিষয়টি অপ্রত্যাশিত। যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উত্তর ছাত্রাবাসের ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিন পুরো বিষয়টির জন্য লজ্জিত হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন । জড়িতদের চিহ্নিত করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে হল প্রভোস্ট নাসির উদ্দিনকে বার বার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ আবু ইউসুফকে কল দিলে তিনিও কেটে দেন।
জানা যায়, ঢাকা কলেজের সবগুলো হলের নিয়ন্ত্রণ ছাত্রলীগের হাতে। প্রশাসনের ভূমিকা সেখানে নাম মাত্র। ফরহাদ ছাত্রাবাসের ১০২নং রুম যেন আবাসিক ছাত্রদের আতংকের নাম। এর আগেও ছাত্রলীগের অত্যাচারে হলের কয়েকদিন ১ম বর্ষের সব শিক্ষার্থী একযোগে হল ছেড়েছিল।
আরএস