মালয়েশিয়ায় ১৭ বছর কাটানোর পরও লাশ দেশে গেল প্রবাসীদের চাঁদার টাকায়

আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৪, ১১:৩০ এএম
মালয়েশিয়ায় ১৭ বছর কাটানোর পরও লাশ দেশে গেল প্রবাসীদের চাঁদার টাকায়

পরিবারের স্বচ্ছলতার আশায় ২০০৭ সালের কলিং ভিসায় মালয়েশিয়া পাড়ি জমানো চুয়াডাঙ্গার যুবক আবদুল হান্নান (৪৪)। কিন্তু একে একে হান্নানের জীবন থেকে ১৭ বছর হারিয়ে গেলেও তিনি জীবদ্দশায় স্বচ্ছলতার মুখ দেখেননি।

দীর্ঘ ২৫ দিন রোগ ভোগের পর গত শুক্রবারের আগের শুক্রবারে চৌকিটের একটি হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর মতুন জটিলতায় পড়েন স্বজনরা।

হাসপাতালের চিকিৎসা বিল ও লাশ দেশে প্রেরণে প্রয়োজন ১২ হাজার রিংগিত। কিন্তু পরিবারের পক্ষে এই বিল পরিশোধ সম্ভব না। হান্নান মিয়ার ভ্যালিট পাসপোর্ট ও বৈধ ভিসা থাকায় শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির মালিক সব ব্যয় বহন করার কথা থাকলেও নিয়োগকর্তা ব্যয়ভার বহন করেননি। এতে বিপাকে পড়ে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত মৃত হান্নান মিয়ার ছোট ভাই মো. পেল্টু মিয়া। কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানালেও কাউন্টারের দায়িত্ব থাকা কর্মীরা কোন সাড়া দেননি।

পরে প্রবাসীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ১২ হাজার রিংগিত যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা সাহায্য তুলে হান্নান মিয়ার লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

মৃত হান্নান মিয়া দীর্ঘদিন যাবত ফুসফুসের ইনফেকশন ও প্রেশারের রোগে ভুগছিলেন। তাই তিনি নিয়মিত কাজ করতে পারেননি। মৃত হান্নান মিয়া চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সিন্দুরিয়া গ্রামের মৃত ওমর আলীর পুত্র।  তার ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। ছেলে সন্তানটি শারীরিক প্রতিবন্ধী।    

তবে দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে এই নামে মৃত ব্যক্তির কোন স্বজন দূতাবাসের লেবার উইং এসে সঠিকভাবে যোগাযোগ করেনি।

সঠিকভাবে লেবার উইং এ এসে যোগাযোগ করলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হত। দূতাবাসের কাউন্টারে থাকা কোন কর্মীর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন মৃতের ছোট ভাই মো. পেল্টু মিয়া তাদেরত নাম পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি।  

এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এ নিয়োজিত লেবার উইংয়ের ২য় সচিব সুমন চন্দ্র দাস বলেন, বৈধ প্রবাসী মারা গেলে কোম্পানির মালিকের সম্পূর্ণ খরচে লাশ দেশে পাঠানো হয় আর যদি অবৈধ প্রবাসী মারা যান পরিবারের সামর্থ্য না থাকলে দূতাবাসে আবেদন করলে দূতাবাসের বরাদ্দ অনুযায়ী মরদেহ দেশে পাঠানো হয়ে থাকে।

তিনি আরও বলেন, হান্নান মিয়ার স্বজনরা নিয়মমাফিক দূতাবাসে আবেদন করলে দূতাবাস প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করত।

ইএইচ