সড়কে মৃত্যু ও ক্ষতিগ্রস্তদের স্মরণে ডিএনসিসির বৈশ্বিক দিবস পালন

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৩, ০৬:৫৮ পিএম
সড়কে মৃত্যু ও ক্ষতিগ্রস্তদের স্মরণে ডিএনসিসির বৈশ্বিক দিবস পালন

সড়ক দুর্ঘটনার কারণে অকালে যারা মারা গেছে ও যারা পঙ্গুত্বের শিকার হয়েছে সেসব পরিবারকে একটি প্ল্যাটফরম দেয়ার লক্ষ্যে ওয়ার্ল্ড ডে অফ রিমেমব্রান্স ফর রোড ট্রাফিক ভিকটিমস অর্থাৎ সড়কে মৃত্যু ও ক্ষতিগ্রস্তদের স্মরণে একটি বৈশ্বিক দিবস পালন করা হয়।  

রোববার (১৯ নভেম্বর) এই দিবসটি পালন করা হয়। এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো সড়কে মারা যাওয়া ও পঙ্গুত্বের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণ এবং তাদের জরুরি সেবা প্রদানের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া, সড়ক নিরাপদ করতে গবেষণাধর্মী তথ্য ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় আইন ও নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণকে উৎসাহিত করা হয়।  

ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর সহায়তায় প্রথমবারের মত নানা কর্মসূচি মাধ্যমে দিবসটি পালন করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। ওয়ার্ল্ড ডে অফ রিমেমব্রান্স ফর রোড ট্রাফিক ভিকটিমস দিবসটি পালনে ঢাকা শহরের রোড ট্রাফিক ভিকটিমস দের করুণ জীবনকাহিনী নিয়ে তৈরি ফটো স্টোরি কর্ণার জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এসময়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো আতিকুল ইসলাম, সড়কে হতাহতদের করুণ কাহিনী গুলো শোনেন। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘রোড ক্র্যাশ একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ যা আমাদের সকলকে প্রভাবিত করে। ঢাকায় ছোট গাড়ির আধিক্য যানজটের অন্যতম কারণ। আবার যানজট হতে মুক্ত হলে বেপরোয়া গতি লক্ষ্য করা যায়। যান্ত্রিক যানগুলো জেব্রা ক্রসিং ও সিগনালে সঠিকভাবে থামাকে পথচারীদের সড়ক পারাপারে ঝুঁকি কমে আসবে। এছাড়া, ঢাকার অনেক সড়ক পারাপারের জন্য ফুটওভারব্রিজ রয়েছে সেগুলো ব্যবহারেও পথচারীদের ঝুঁকি কমে আসবে।’

মেয়র আরও বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সড়কসমূহকে নিরাপদ করার জন্য আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি। বিশেষত, ডিএনসিসি ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস এর বৈশ্বিক সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এর আওতায় ঢাকা উত্তরের জনগণের জন্য নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। বিশেষত, সড়ক ব্যবহারে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে, ট্র্যাফিক নিয়ম মেনে চলতে হবে। পথচারী, সাইকেল চালক, রিকশাসহ সকল পরিবহনের যাত্রী ও চালকদের জন্য সড়ক নিরাপদ হোক। আসুন আমরা দায়িত্বের সঙ্গে গাড়ি চালাই।’

অনুষ্ঠানে দুইজন ভিকটিম তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন যারা সড়কে তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যথাক্রমে এডভোকেট ইতি রানী সাহা, তিনি সড়কে তার স্বামী হারিয়েছেন এবং সাংবাদিক নিখিল ভদ্র, যিনি দুটি পা হারিয়ে কৃত্রিম পায়ে নির্ভর করে জীবনযাপন করছেন।

এ সংলাপে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব সেলিম রেজা। এতে আলোচনায় অংশ নেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর পরিচালক (সড়ক নিরাপত্তা) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জনাব এস এম মেহেদী হাসান, বিপিএম-বার, পিপি-বার, ডিএনসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী ব্রি.জে. মু. আমিনুল ইসলাম, একসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর সহকারী অধ্যাপক ড. আর্মানা সাবিহা হক প্রমুখ।

এইচআর