মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হত্যার হুমকি দাতা গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হত্যার হুমকি দাতা গ্রেপ্তার

সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত গরুর মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান  ও হত্যার হুমকিদাতাকে ঢাকার আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

রবিবার  (২৮ জানুয়ারি ) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য  জানান লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, মো. নুরুল হক (৬৭) ও মোহাম্মদ ইমন (২২) খন্দকার আল মঈন বলেন, গত বছরের  ১৯ নভেম্বর  হতে রাজধানীর শাজাহানপুরের মাংস ব্যবসায়ী খলিল তার ‍‍`খলিল গোস্ত বিতান‍‍` এ ৫৯৫ টাকায় প্রতি কেজি মাংস বিক্রি শুরু করে। যা সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে। কিছুদিন পূর্বে রাজশাহীর বাঘার আড়ানী হাটে ন্যয্য মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় একজন মাংস ব্যবসায়ী খুন হওয়ার ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গত ১৮ জানুয়ারি  রাজধানীর শাহাজাহানপুরের আলোচিত মাংস ব্যবাসয়ী খলিলুর রহমান এর মোবাইল ফোনে অপর একটি মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি এবং কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাকে ও তার ছেলেকে দুই দিনের মধ্যে গুলি করে হত্যার হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করা হয়। এছাড়াও খলিল এবং তার ছেলেকে হত্যা করার জন্য গুলি ও পিস্তল রেডি করা হয়েছে জানিয়ে তার মোবাইল ফোনে পিস্তল, গুলি, রামদা এবং মাথা ছাড়া লাশের ছবি পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মাংস ব্যবসায়ী খলিল রাজধানীর শাহাজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচিত হয়।

খন্দকার আল মঈন আরও বলেন,  নুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে আশুলিয়া পাথালিয়া ইউনিয়নের চারিগ্রাম এলাকায় ডিস ও ইন্টারনেট লাইনের ব্যবসার করে আসছে। স্থানীয় এলাকায় তার প্রায় ৫শ ডিস এবং ইন্টারনেট লাইনের সংযোগ রয়েছে। এ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ ছিলো। বিরোধের জের ধরে কিছুদিন পূর্বে তার প্রতিপক্ষের সাথে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় তার ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে একজন তাকে আলোচিত মাংস ব্যবসায়ী খলিলের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার প্রদান করে তাকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দিতে বলে। যার বিনিময়ে সে তার স্থানীয় এলাকায় ডিস ও ইন্টারনেট ব্যবসায় কোন প্রতিবন্ধকতা বা কোন বাধার সম্মুখিন হবে না। ব্যবসায়ীক সুবিধার লক্ষ্যে  নুরুল হক গত ১৮ জানুয়ারি  মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে ফোন করে ২৫ লখ টাকা চাঁদা দাবি এবং কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাকে হত্যার হুমকি প্রদান করে।  

তিনি আরও জানান, হুমকি প্রদানের সময় চাঁদা দাবির পাশাপাশি তার ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষ সেলিমের নাম উল্লেখ করে বলে জানা যায়। পরবর্তীতে একই দিনে নুরুল গ্রেফতারকৃত ইমনকে একটি ফোন ধরিয়ে মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে গালাগালি করতে বলে। ইমন নুরুলের কথামতো খলিলকে ফোন দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি- গালাজ করতে থাকে এবং তাকে দুই দিনের মধ্যে হত্যা করবে বলে গুলি ও পিস্তল রেডি করে রেখেছে বলে জানায়। এছাড়াও ইমন খলিলের মোবাইল ফোনে পিস্তল, গুলি, রামদা এবং মাথা কাটা লাশের ছবি পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। পরবর্তীতে হুমকি প্রদানকৃত মোবাইল ও সিম কার্ডটি পানিতে ফেলে দেয়।

জানা যায়,  নুরুল হক ডিস ব্যবসার পাশাপাশি কৃষি কাজ করতো। তিনি বিভিন্ন জনকে হুমকি প্রদানের মাধ্যমে চাঁদাবাজি, জমি দখল সহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্মের সাথে জড়িত। তার নামে চারটির অধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরএস