রমজান মাসে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বিকাল তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
সোমবার দুপুরে আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আসন্ন রমজান মাসের আমাদের বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ট্রাফিক। এটি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। নগরবাসীর সচেতনতা এবং সহযোগিতা দরকার। যারা গাড়ি ব্যবহার করছেন, যারা গাড়িতে চড়ছেন এবং যারা রাস্তার আশপাশে ব্যবসা করছেন তাদের সহযোগিতাও দরকার। তা নাহলে ৩০৬ বর্গ কিলোমিটার জায়গার ভেতরে যেখানে সোয়া ২ কোটি লোক বসবাস করে, সেখানে পুলিশ রাতারাতি ট্রাফিক সমস্যা সমাধান করে দিতে পারবে না।’
আশাবাদ ব্যক্ত করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সবাই যদি সহযোগিতা করেন, তাহলে ট্রাফিক সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা পুলিশের সহযোগিতায় স্থানীয়ভাবে ট্রাফিক সমস্যার সমাধান করতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসহ রাস্তায় যারা সংস্কার কাজ করেন, তারা রমজান মাসে সবার স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এসব কাজ বন্ধ রাখবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। এসব কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে চিঠি দিয়ে জানাব।’
রমজানে আরও একটি চ্যালেঞ্জ ছিনতাই জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বিভিন্ন শপিংমল ও রাস্তায় এবং ব্যাংকের সামনে থেকে ছিনতাই হয়। এছাড়া অবৈধ মজুদ করে কৃত্রিমভাবে মূল্যবৃদ্ধি এবং খাদ্যদ্রব্যে ভেজালও রমজান মাসে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। এসব সমস্যা সমাধানে পুলিশ ইতোমধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই সমস্যাগুলো সমাধানে আমাদের পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করবে।’
তিনি বলেন, ‘রমজানে মানুষজন যেন বাসায় গিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে ইফতার করতে পারেন, সে লক্ষ্যে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি ক্রাইম বিভাগও কাজ করবে। বিকাল তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত আমাদের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। একই সময়ে রাস্তায় আমাদের বিশেষ ডিপ্লোমেন্ট থাকবে, যাতে মানুষ ঘরে গিয়ে ইফতার করতে পারে। মার্কেটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে আমাদের ট্রাফিক ও ক্রাইমের অফিসাররা।’
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘অবৈধভাবে কেউ রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘কেউ যদি কৃত্রিম উপায়ে ও কারসাজি করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে, তাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে পুলিশ কাজ করবে।’
ঈদের সময় ফাঁকা ঢাকায় ও রমজানে ছিনতাই প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ছিনতাই একটা সমস্যা। রমজান মাসে এই সমস্যা সমাধানে একটি বিশেষ পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশ ও ডিবি পুলিশ ছিনতাই প্রতিরোধে তৎপর থাকবে। আমি আশা করি, রমজান মাস ও ঈদের পর পর্যন্ত মানুষ স্বস্তিতে বসবাস করবে।’
বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর পুলিশ বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে অভিযান চালাচ্ছে। রমজান মাসেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে কি না জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘কোনো রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিআরইউ