পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা ও টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি গ্রহণ অপরিহার্য, তাই সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং পরিবেশ রক্ষায় নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানী প্রকল্পে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা বেসরকারি খাতকে এই ক্ষেত্রে আরও বেশি অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করছি। সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের বিদ্যুতের ৪০শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করেছে। এই লক্ষ্যটি জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উৎসাহিত করা এবং পরিবেশগত স্থায়িত্ব অর্জনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মন্ত্রী শনিবার (০১ জুন) বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের আয়োজনে ২য় ঢাকা নবায়নযোগ্য জ্বালানী অর্থায়ন শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।
এই ভিশন অর্জনে সমাজের সব খাতের মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন মন্ত্রী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি অবকাঠামো ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ অপরিহার্য। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় বিনিয়োগকারীকে আকৃষ্ট করতে, আমাদের আর্থিক প্রণোদনা, নিয়ন্ত্রক স্থিতিশীলতা এবং স্বচ্ছতার সাথে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি কেবল কার্বন নির্গমন হ্রাসই করে না বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জনস্বাস্থ্যের উন্নতি এবং জীবনমান উন্নত করে। এটি টেকসইভাবে জলবায়ু প্রভাব সহ্য করার সক্ষমতা সম্পন্ন সম্প্রদায় তৈরি করে।
মন্ত্রী চৌধুরী এই রূপান্তরে উদ্ভাবনী আর্থিক উপকরণ যেমন সবুজ বন্ড, জলবায়ু তহবিল এবং পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। এই সরঞ্জামগুলি ব্যবহার করে, আমরা নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পগুলি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন সংগ্রহ করতে পারি।
সাবের চৌধুরী আরও উল্লেখ করেন যে, এই খাতে গবেষণা ও উন্নয়নের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সৌর, বায়ু, বায়োমাস এবং জলবিদ্যুৎ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ অপরিহার্য। পরবর্তী প্রজন্মের নবায়নযোগ্য জ্বালানির সমাধানগুলি বিকাশে বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী এবং উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ কিন্তু এটি একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা। আমাদের নিজেদের এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে, তিনি উপসংহারে বলেন। শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার এবং সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে, আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে আমাদের জাতির অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির মূল ভিত্তি করতে পারি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশেষ রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলি আবদুল্লাহ খাসেইফ আলহুমুদ; পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ; টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (SREDA) চেয়ারম্যান মুনিরা সুলতানা, এনডিসি; ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অফ বিজনেস এন্ড ইকোনমিক্সের অধ্যাপক এ. কে. এনামুল হক, পিএইচডি; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস; চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েছেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অলটারনেটিভ ল ইক্লেক্টিভের গবেষণা পরিচালক জেইন মৌলভী।
বিআরইউ