আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কোরবানির পশু রাজধানীর গাবতলী হাটে আসা শুরু হয়েছে। কোরবানির আর মাত্র ২ দিন বাকি থাকলেও এখনও বেচাকেনা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে কিছুসংখ্যক ক্রেতা হাটে ঘুরে গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়াসহ বিভিন্ন কোরবানির পশু দেখছেন এবং দাম যাচাই-বাছাই করছেন।
শুক্রবার সরেজমিনে গাবতলীর পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, কিছু কিছু ব্যাপারীরা পশু নিয়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন। ঈদের ছুটির প্রথম দিন হলেও সেভাবে ক্রেতারা হাটে আসেননি। তবে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখন হাটে কোরবানির পশু আসছে হাটগুলোতে।
পাবনা থেকে গাবতলীর পশুর হাটে ‘রাজা বাবু নাম্বার ওয়ান’ নামে ১২’শ কেজি ওজনের একটি গরু নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন।
তিনি আমার সংবাদকে জানান, গাবতলী হাটের সবচেয়ে সুন্দর গরু এটি। দেখতে রাজার মত হওয়ায় এমন নাম রেখেছেন তিনি। দাম হাঁকাচ্ছেন ২০ লাখ টাকা। তবে এখন পর্যন্ত আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় বিক্রি করেননি তিনি।
ঢাকার ধামরাই থেকে ছয়টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন রইজ উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী। দীর্ঘ সময় গরু নিয়ে থাকলে বিক্রি করতে পেরেছেন মাত্র একটি।
অন্যদিকে মানিকগঞ্জ থেকে ৮টি গরু নিয়ে আসা আব্দুল করিম জানান, একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি তিনি।
শুক্রবার ছুটির দিন হিসেবে অন্যান্য সময় যে ক্রেতা সমাগম ঘটে, এবার দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও সে রকম ক্রেতার দেখা পাননি বলে জানান বরিশালের কুয়াকাটা থেকে গরু নিয়ে আসা আবু সাদেক মুসল্লি নামের এক বেপারী।
রাজশাহী থেকে মানিক মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী ৮টি গরু নিয়ে গাবতলী হাটের এসেছেন। গাড়ি থেকে গরু নামানের সময় একটি গরুর পা পুরোপুরি ভেঙে যায়। ফলে গরুটিকে নিয়ে করুণ মুখে বসে থাকতে দেখা যায় এ ব্যবসায়ীকে। গরুটিকে কসাইয়ের কাছে বিক্রি ছাড়া উপায় নেই বলে জানান এ ব্যবসায়ী।
রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে গাবতলী হাটে গরু কিনতে আসেন সালাউদ্দিন-জেরিন দম্পতি। তারা জানান, গরুর দাম কিছুটা কম রয়েছে। তবে মধ্যবিত্ত হিসেবে কোরবানির জন্য যে বাজেট সে আলোকে মেলোতে পারছেন না। গরু সাইজে বড় ও দাম বেশি হওয়ায় মানের গরু খুঁজতে হচ্ছে বলেও জানান তারা।
তবে রাজধানীর এ হাটে ইজারার পরিমাণ বেশি বলে জানান সাইফুল ইসলাম ও জমির হোসন নামে দুই ক্রেতা। তারা দুজনে ১৭ হাজার টাকা দামে একটি করে ছাগল ক্রয় করে ইজারা দিয়েছেন ৮’শত পঁচাত্তর টাকা করে।
মেহেদি আনোয়ার নামের আরেক ক্রেতা জানান, আড়াই লাখ দামের গরুর জন্য প্রায় ১২ হাজার টাকা ইজারা দিতে হয়েছে। ইজারা আরও কমানোর দাবি তাদের।
এ বিষয়ে গাবতলী হাট ইজারাদার পরিচালনায় থাকা মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ছেলে সাদাব মনোয়ার ফাহিম আমার সংবাদকে বলেন, হাটে কত গরু প্রবেশ ও বিক্রি হয়ে তার সঠিক তথ্য আমার জানা নেই। তবে ইজারা নির্ধারিত হারে অর্থাৎ শতকরা ৫ শতাংশ হারে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গাবতলী হাটে মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। হাটে হরেক রকমের গরু, ছাগল, গোলাপি রঙের মহিষের পাশাপাশি দুটি উটও রয়েছে। ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
নোমান/ইলিয়াস