ঢাকা দক্ষিণের প্রথম নির্বাচিত সফল মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের জন্মদিন বুধবার ১৯ শে জুন। দেশের বিশিষ্ট এই রাজনীতিবিদ ১৯৭০ সালের ১৯ শে জুন পুরান ঢাকার নাজিরা বাজারে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
সাঈদ খোকনের পিতার নাম মোহাম্মদ হানিফ ও মাতার নাম ফাতেমা খাতুন। সাঈদ খোকন ব্রিটিশ শাসনামলে সরদারি প্রথা বিলোপের প্রাক্কালে পুরান ঢাকার অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব মাজেদ সরদারের দৌহিত্র।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের প্রয়াত পিতা মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের পাঁচবারের সভাপতি এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র হিসেবে অর্ধশতাব্দী বেশি সময় ধরে এই শহরের মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকন তার বাবার আদর্শ ও স্নেহময় পরিবেশে বেড়ে উঠেন। তিনি ১৯৮৭ সালে পিতার হাত ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগে রাজনীতি শুরু করেন। পরবর্তীতে থানা আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগ এবং বর্তমানে দলের কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে মানুষের সুখে-দুঃখে কাজ করে যাচ্ছেন।
২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে তার প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন সাঈদ খোকনের প্রয়াত পিতা মোহাম্মদ হানিফ। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রাণে রক্ষা পেলেও স্পিন্টারের আঘাতে মারাত্মক আহত হন মোহাম্মদ হানিফ। একই ঘটনায় স্পিন্টারের আঘাতে মারাত্মক আহত হয়েছিলেন মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৬ ভোট পেয়ে তিনি মেয়র নির্বাচিত হোন সাঈদ খোকন। ওই বছরের ৬ মে তিনি মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। পরিকল্পিত উন্নয়ন, সুযোগের সমতা, নিরাপদ ও দূষণমুক্ত আধুনিক ঢাকা বিনির্মাণে সফলতার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে পাঁচ বছর সফলতার সাথে মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়কালে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক সহযোগিতায় ৫০টির বেশি সফলতা অর্জন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সিটি করপোরেশনের এমন অর্জন নগরবাসীর চোখে জ্বলে উঠেছিল আশার আলো; স্বপ্ন পূরণের ব্যাকুলতা।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বর্তমানে ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে মানুষের সুখে-দুঃখে কাজ করে চলেছেন। তার কর্মনিষ্ঠা ও নেতৃত্বের গুণাবলি তাকে দ্রুত সামনে এগিয়ে নেয়।
১৯৯৬ সালে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন ফারহানা আলমের সঙ্গে। পারিবারিক জীবনে তিনি একজন দায়িত্বশীল ও ভালোবাসাপূর্ণ ব্যক্তি। তার পরিবার ও কর্মজীবনের সমন্বয় তাকে আরও মানবিক ও সমাজসেবী করে তোলে। তিনি চার কন্যা সন্তানের বাবা। তার পরিবার তার কাছে প্রেরণার উৎস। ছোট্ট কন্যাদের সাথে সাঈদ খোকনের খুনশুটি ও ভালোবাসার মুহূর্তগুলো তাকে সবসময় প্রাণবন্ত রাখে।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের সংগ্রামী জীবন ও নেতৃস্থানীয় অবদান আমাদের সবার জন্য প্রেরণার উৎস। তার কর্মময় জীবনের প্রতিটি অধ্যায় আমাদের শিক্ষা দেয় যে নিষ্ঠা, পরিশ্রম এবং মানবিকতা দিয়ে যে কোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। আজ তার জন্মদিনে, আমরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই এবং তাঁর দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করি।
ইএইচ