শেখ হাসিনা দেশ না ছাড়ার সিদ্ধান্তে অবিচল থাকলেও তিনিই তাঁর মাকে দেশত্যাগের ব্যাপারে রাজি করান বলে দাবি করেন সজীব ওয়াজেদ। তাঁর ভাষ্যমতে, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে (শেখ হাসিনা) একটি সামরিক ঘাঁটিতে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে চান। তাঁর জন্য সেখানে আগে থেকে একটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত ছিল। কিন্ত তিনি যেতে চাচ্ছিলেন না। এ সময় আমার খালা (শেখ রেহানা) আমাকে ফোন করেন।’
সজীব বলেন, ‘আমি মাকে বুঝিয়ে বলি, নিজের নিরাপত্তার জন্য হলেও তোমাকে দেশ ছেড়ে যেতে হবে। লোকজন যদি তোমাকে পায়, তাহলে সেখানে গোলাগুলি হবে, অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হবে। এ জন্য হয় তোমাকে দোষারোপ করা হবে, নয়তো ওই সব মানুষ তোমাকেই মেরে ফেলবে। তাই তোমার জন্য দেশ ছেড়ে যাওয়াই এখন ভালো হবে। তাঁকে দেশ ছাড়ার ব্যাপারে আমিই রাজি করিয়েছিলাম।’
দেশত্যাগের পর থেকে শেখ হাসিনা ভারতেই আছেন। তাঁর মা ভারতেই থাকবেন নাকি কোথাও যাবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তিনি (শেখ হাসিনা) সেটা দেখার অপেক্ষায় আছেন। সম্ভবত, আপাতত তিনি ভারতেই থাকবেন।
শেখ হাসিনার ভারতে যাওয়ার প্রসঙ্গে সজীব বলেন, হেলিকপ্টারে যাওয়া ছাড়া তাঁর উপায় ছিল না। এ কারণে তাঁর একমাত্র গন্তব্য ছিল ভারত। এরপর ভারত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। তাঁকে প্রাণে বাঁচানো ও একটি নিরাপদ জায়গায় রাখায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে ধন্যবাদ। এ ছাড়া (শেখ হাসিনার) অনেক দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া নিয়ে যেসব কথা বলা হচ্ছে, সবই গুজব। এসব একেবারে অসত্য। রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে তিনি কোনো দেশের সরকারের কাছে আবেদন করেননি।
ভারতের উদ্দেশে কী বার্তা দিতে চান? এমন প্রশ্নে সজীব বলেন, ‘এ বিষয়ে নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশে সংবিধান সমুন্নত রাখার বিষয়ে কাজ করতে নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানাব। কারণ, এটা ঘটছে ভারতের দুয়ারে। আশা করব, বাংলাদেশে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি নিশ্চিত করবে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে বিশৃঙ্খল জনতার (মব) শাসনের অবসান হবে। আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক প্রচার চালানো ও পুনর্গঠিত হতে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিশ্চিত করা হলে আমি এখনো আত্মবিশ্বাসী, আমরা নির্বাচনে জয়ী হব। আমরা এখনো (বাংলাদেশের) সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল।’
আরএস